ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বরূপে- সেমিফাইনালে বেয়ার্ন মিউনিখ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

স্বরূপে- সেমিফাইনালে বেয়ার্ন মিউনিখ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যেন ফিরে এলো ২০১৪ বিশ্বকাপের স্মৃতি! সেমিফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে উঠেছিল জার্মানি। মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলেও যেন একই চিত্রের দেখা মেলে। কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে পর্তুগীজ ক্লাব পোর্তোকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে জার্মান পরাশক্তি বেয়ার্ন মিউনিখ। প্রথম লেগে পোর্তোর মাঠে ৩-১ গোলে হেরে এসেছিল আসরের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। যে কারণে পরশু রাতে অন্ততপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের বিকল্প ছিল না বেয়ার্নের। কিন্তু না, শুধু দুই গোল নয় প্রতিপক্ষকে রীতিমতো গোলবন্যায় ভাসিয়ে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে বাভারিয়ানরা। মূলত প্রথমার্ধের ঝড়েই ল-ভ- হয়ে যায় পোর্তো। ৩৬ মিনিটের মধ্যেই পাঁচ গোল আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। সবমিলিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে বেয়ার্ন মিউনিখের জয় ৭-৪ গোলে। এই জয়টি বেয়ার্ন কোচ পেপ গার্ডিওলার জন্যও স্মরণীয়। কেননা এদিন কোচ হিসেবে ১০০ তম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ডাগআউটে ছিলেন সাবেক বার্সিলোনা কোচ। প্রথম লেগে হারের কারণে হুমকির মুখে ছিল বেয়ার্নের সেমিতে খেলা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোন অঘটন ঘটেনি। স্বরূপে ফিরেই ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছে জার্মান পরাশক্তিরা। এই ম্যাচেও তারকা উইঙ্গার আরিয়েন রোবেন, ফ্রাঙ্ক রিবেরি ও ডেভিড এ্যালাবাকে হারিয়ে বেয়ার্নের শক্তি কিছুটা হলেও খর্ব হয়েছিল। কিন্তু এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের আগের পাঁচ ম্যাচেই জিতেছিল তারা। এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামে বাভারিয়ানরা। আর তাতেই জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দেশের ক্লাব পোর্তো। মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় শুরু থেকেই অতিথিদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। এরই ধারাবাহিকতায় রবার্ট লেভানডোস্কির শট পোস্টে না লাগলে শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত গার্ডিওলার শিষ্যরা। কিন্তু ইনজুরি কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর সদ্য মাঠে ফেরা স্প্যানিশ তারকা থিয়াগো আলকান্টারা আর ভুল করেননি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে হুয়ান বারনাটের ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করে তিনি বেয়ার্নকে এগিয়ে নেন। ২২ মিনিটে আরেকটি হেডে গোল করে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জেরোমে বোয়াটেং। এ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ২-০ ব্যবধানই শেষ চার নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বেয়ার্ন থেমে থাকার দল নয়, তা আরেকবার প্রমাণ করেছে দলের আগ্রাসী পারফর্মেন্স। ম্যাচের ২৭ মিনিটে পোর্তোর এলোমেলো রক্ষণভাগের সুযোগে লেভানডোস্কি তিন নম্বর গোল করেন। এটিও আসে হেডের সাহায্যে। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে মুলার দলের হয়ে চার নম্বর গোল করেন। এই নিয়ে ২৭ গোল করে জার্মান খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রেকর্ড গড়েছেন মুলার। চার মিনিট পর দলের পঞ্চম ও নিজের দ্বিতীয় গোল করেন পোলিশ তারকা লেভানডোস্কি। ফলে পাঁচ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। বিরতির পর আগ্রাসী মনোভাবের পরিবর্তন করে বল পজিশনের দিকে বেশি মনোযোগী হয় বেয়ার্ন। ৭৩ মিনিটে জ্যাকসন মার্টিনেজের সান্ত¡নার গোল পোর্তো পরাজয়ের ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে। ৮৭ মিনিটে পোর্তোর স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ইভান মারকানো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ থেকে বের হয়ে গেলে পর্তুগীজ ক্লাবটি দশজনের দলে পরিণত হয়। সেই ফাউলে পাওয়া ফ্রিকিক থেকে জাবি এ্যালোনসো গোল করে পোর্তোর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন। আর বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বেয়ার্ন। এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ না পড়ার গার্ডিওলার রেকর্ডটি অটুট থেকেছে। ইনজুরির কারণে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে না পারা আরিয়েন রোবেন সেমিফাইনালে খেলবেন বলে জানিয়েছেন। ইনজুরির কারণে হাইভোল্টেজ কয়েকটি ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে ডাচ্ তারকাকে। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কোয়ার্টার ফাইনালে পোর্তোর বিরুদ্ধে দুই লেগেই ছিলেন না তিনি। প্রায় দুই সপ্তাহ পর দলের পরবর্তী ম্যাচে মাঠে ফিরার ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বয়ং রোবেন। সাক্ষাতকারে রোবেন বলেন, আমি গত সোমবার দলের অনুশীলনে ছিলাম। সেখানে নিজের কয়েকটি দিক উন্নতি করেছি। বেয়ার্ন পোর্তোর বিরুদ্ধে দারুণ খেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। সুতরাং শেষ চারের ম্যাচে আমার মাঠে নামার সুযোগ থাকছে।
×