ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সব পণ্যে চীন শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২০ এপ্রিল ২০১৫

সব পণ্যে চীন শুল্কমুক্ত  প্রবেশাধিকার দিচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে চীন বাংলাদেশে শিল্প পার্ক স্থাপন করবে। চীনের বাজারে বাংলাদেশের বেশিরভাগ পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত থাকলেও বাংলাদেশের সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে অল্প সময়ের মধ্যে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুনের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। চীন সরকার এদেশে শিল্প পার্ক স্থাপন করবে। শিল্প পার্ক স্থাপনের জন্য চীনকে চাহিদা মোতাবেক ইকোনমিক জোনে সুযোগ করে দিতেও প্রস্তত বাংলাদেশ সরকার।’ বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। চীনের বাজারে বাংলাদেশের বেশিরভাগ পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত থাকলেও বাংলাদেশের সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে অল্প সময়ের মধ্যে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। মন্ত্রী জানান, চীন নিজের দেশে তৈরি পোশাক প্রস্তুত না করে তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আগ্রহী। ইতোমধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলার আউশিয়ায় একটি গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি পার্ক নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে চীন। এখানে ২৫০টি গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি থাকবে এবং আড়াই লাখ শ্রমিক কাজ করার সুযোগ পাবে। ফলে তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৩ বিলিয়ন রফতানি বৃদ্ধি পাবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, গত ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে চীনে বাংলাদেশ ৭৪৬.২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে, একই সময়ে বাংলাদেশ চীন থেকে আমদানি করেছে ৭,৫৪৪.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ট্রেড ব্যালেন্স চীনের পক্ষে ৬,৭৯৮.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়লে এবং শিল্প-কারখানা স্থাপিত হলে এ ব্যবধান অনেক কমে আসবে। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বড় উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশের বড় বড় উন্নয়নমূলক কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে চীন। পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা ক্যাম্পাস নির্মাণ, বাউশিয়ায় গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি পার্ক নির্মাণ, কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, শাহজালাল সার কারখানা নির্মাণ এবং গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। চীন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ পূর্তি উপলক্ষে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চীনের উচ্চপর্যায়ের নেতা আসবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, চীন বরাবরই বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চীন সরকার বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে সবধরনের সহযোগিতা দেবে।
×