ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নরসিংদীতে ছাত্রলীগ সম্মেলনে গুলি ককটেল ॥ আহত ১৫

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

নরসিংদীতে ছাত্রলীগ সম্মেলনে গুলি ককটেল ॥ আহত ১৫

নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ১৮ এপ্রিল ॥ নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে তিন সভাপতি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহেনা আমিরুলসহ কমপক্ষে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। উদ্ভত পরিস্থিতিতে কমিটি ঘোষণা না করেই সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘ ৫ বছর পর শনিবার নরসিংদী পৌরসভা প্রাঙ্গণে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পদপ্রত্যাশীদের সমর্থকরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন। সভাপতি পদপ্রার্থী নরসিংদী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম ভূঞা লেলিন বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সমর্থকদের নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় পৌরসভার গেটের সামনে সভাপতি প্রার্থী শামীম নেওয়াজের সমর্থকরা অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। ওই সময় আমরা তাদের ভেদ করে সম্মেলনে যোগ দিতে চাইলে তারা আমাদের লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে এবং এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা করে। এতে আমার মা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহেনা আমিরুল, ছাত্রলীগ নেতা নওসাত মাহামুদ পিতম, নাজমুল আহসান নাঈম, প্রস্তাবকারী আবুল বাশার জেকি ও সমর্থনকারী তমাল দাস আহত হন। অপর সভাপতি পদপ্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক রাকিবুর কবির রাকিব বলেন, বেলা ১টার দিকে সমর্থকদের মিছিল সহকারে আমি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় অতিক্রম করার সময় সভাপতি প্রার্থী শামীম নেওয়াজের লোকজন অস্ত্র উঁচিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। তাদের বাধা উপেক্ষা করে সম্মেলনস্থলে যোগ দিতে চাইলে হামলা চালায়। এতে রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সুমন, হাইরমারা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম শিকদার, জালাল, রফিক, শফিক, সুমনসহ ১০ জন আহত হন। এ সময় মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। এছাড়া এক প্রার্থীর পোস্টারের ওপর অপর প্রার্থীর পোস্টার লাগানো হয়। এতে প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লে. কর্নেল (অব) নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক)। সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঞা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম এমপি, নরসিংদী পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল প্রমুখ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি এস এম কাইয়ূম তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, সভাপতি পদে প্রার্থীদের সম্মেলনস্থলে আসতে বাধা দেয়া হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। ফলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রধান অতিথি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব) নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক) হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। প্রথম অধিবেশনের পর মেয়রের কার্যালয়ে সভা করে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সভায় দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি প্রার্থী শামীম নেওয়াজের বয়স বেশি হওয়ায় তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কমিটি ঘোষণা না করেই বিকেলে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে শামীম নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, আমার বয়স নিয়ে জটিলতা হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কমিটি ঘোষণা করেনি। তারা পরবর্তীতে ঢাকা থেকে কমিটি ঘোষণা করবে বলে জানায়। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত নেতাকর্মীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট একটাই দাবি, কোন পকেট কমিটি না, কাউকে ব্যক্তি স্বার্থের কমিটি না, আগামী দিনের এমন একটি নেতৃত্ব চাই যার সুফল আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা পাবে।
×