ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুরনো গাড়ি আমদানিতে অবচয় হার পুনর্নিধারণের প্রস্তাব বারভিডার

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

পুরনো গাড়ি আমদানিতে অবচয় হার পুনর্নিধারণের প্রস্তাব বারভিডার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে পুরনো গাড়ি আমদানিতে অবচয় হার পুনর্নিধারণের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স এ্যান্ড ডিলারস এ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। এ ছাড়াও হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে প্রণোদনা, সিসি সø্যাবের ওপর সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিন্যাস ও মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো বাজেট প্রস্তাবনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, অবচয় গণনার ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় ২ বছরের পুরাতন গাড়ি কিনতে হলে ক্রেতাকে নতুন গাড়ির সমান দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ক্রেতারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অবচয় হার পুনর্নিধারণ করা হলে এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে। এক বছর পর্যন্ত পুরানো গাড়ির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, এক বছর থেকে দুই বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ, দুই বছর থেকে তিন বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ, ৩ বছর থেকে ৪ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং ৪ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশ অবচয় হার নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, অবচয় হচ্ছে যন্ত্রের ব্যবহারজনিত কারণে মূল্যের অবনতি। অর্থাৎ একটি গাড়ি ১ বছরে যেটুকু ইঞ্জিনের সক্ষমতা হারাবে তার অর্থনৈতিক মূল্যকে অবচয় বলা হয়। বর্তমানে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ৫ স্তরে অবচয় সুবিধা দেয়া হয়। ৬ মাসের কম পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ০ শতাংশ, ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, ১ বছর থেকে ২ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, ২ বছর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ, ৩ বছর থেকে ৪ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ এবং ৪ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে ইয়োলো বুকে প্রদর্শিত মূল্য থেকে ২৫ শতাংশ কম মূল্যে এবং বছরভিত্তিক অবচয় সুবিধা দিয়ে শুল্কায়নের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে বলা হয়েছে, পুরনো গাড়ির চেয়ে হাইব্রিড গাড়ির আমদানি মূল্য বেশি হওয়ায় আমদানিকারকরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। অথচ হাইব্রিড গাড়িতে কম জ্বালানি ব্যবহার হয়। ফলে হাইব্রিড গাড়ি আমদানি হলে জ্বালানি তেল সাশ্রয় হবে। এর সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার হ্রাস পাবে। এ ছাড়া হাইব্রিড গাড়ির আলাদা এইচএস কোড বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে বারভিডা। চলতি অর্থবছরের মতো সিসি সø্যাব অপরিবর্তিত রেখে সম্পূরক শুল্ক পুনর্নিধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। বারভিডার প্রস্তাব দিয়েছে, ১৫০১ সিসি থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত পুরনো গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ১০০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ নির্ধারণ। এ ছাড়া অন্যান্য স্তরের গাড়ির সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অপরদিকে মাইক্রোবাস আমদানিতে বিদ্যমান ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে, পর্যটনশিল্প, অফিস, কারখানার কর্মী পরিবহন, শিক্ষার্থী পরিবহন ও এ্যাম্বুলেন্স হিসেবে মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়। ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় এটি সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মাইক্রোবাসের ওপর সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় আধুনিক গণপরিবহন প্রতিষ্ঠার অন্তরায় তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ১০ থেকে ১৫ সিটের মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বারভিডার সভাপতি এমএ হামিদ শরীফ বলেন, ‘শুল্ক বৈষম্যের কারণে দাম বেশি হওয়ায় হাইব্রিড গাড়ি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন ক্রেতারা। সবদিক বিবেচনা করে পুরনো গাড়ির মতো হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক নির্ধারণ হওয়া উচিত।’
×