ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানী পতাকা ওড়ানোর অভিযোগ

জম্মু-কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারাত গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

জম্মু-কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী  নেতা মাসারাত গ্রেফতার

পুলিশ জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারাত আলমকে শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার পুলওয়ামাতে একটি জনসভায় তার যোগ দেয়ার কথা ছিল । শ্রীনগরে আর এক হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ্ গিলানিকে সম্মান জানাতে গিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়েছিলেন আলম। খবর এএফপির। মাসারাত আলমকে শ্রীনগরের শহীদগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করার পর এই হুরিয়ত নেতাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারই গৃহবন্দী করা হয় কাশ্মীরের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি ও মাসারাত আলমকে। বৃহস্পতিবার থেকে দু’জনের বাড়ির বাইরেই পুলিশ মোতায়েন করেছে জম্মু-কাশ্মীর সরকার। শুক্রবার দক্ষিণ কাশ্মীরের ত্রালে একটি জনসভা করার কথা ছিল এই দুই নেতারই। কাশ্মীরের পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘গিলানিকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আগে থেকেই হায়দারপোরায় হুরিয়ত চেয়ারম্যানের বাড়ির বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।’ আলমের বাড়ির বাইরেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হুরিয়তের আরেক নেতা উমর ফারুকের গতিবিধির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে তাকে গৃহবন্দী করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। সরকার পুলওয়ামা জেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জনসভার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো ও পাকিস্তানপন্থী স্লোগান কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বুধবার কাশ্মীরে একটি মিছিলে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারাত আলম। এই ঘটনার সাফাই দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘হুরিয়ত নয়, পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়েছিল বাচ্চা কিছু ছেলে। তবে এই ঘটনা নতুন তো নয়, আগেও বহুবার এমনটা ঘটেছে।’ এই মিছিলের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় কেন্দ্রীয় সরকার। জম্মু-কাশ্মীর সরকারকে অবিলম্বে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তাহানিকর কিছুর সঙ্গে আপোস করা চলবে না। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজ্জু মুফতি সরকারকে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। কাশ্মীরের বিজেপি নেতা রাম মাধব জানিয়েছেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানপন্থী স্লোগান বরদাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যেই মাসারাতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সত্বরই তাকে গ্রেফতার করা হবে। এটা আমাদের সহ্যশক্তির পরীক্ষা নয়। রাজ্য সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ ২০০৮ ও ২০১০ সালে কাশ্মীর উপত্যকায় সেনার সঙ্গে সাধারণ মানুষের তীব্র সংঘর্ষ বাঁধে। রাস্তায় যত্রতত্র সেনাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে আম জনতা। সৈনরা পাল্টা লাঠি ও গুলি চালায়। এই সংঘর্ষে কমবেশি ১০০ জনের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে অধিকাংশই কিশোর-কিশোরী। এই ঘটনায় মাসারাত আলমের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহর নির্দেশে এই হুরিয়ত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
×