ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাদপ্রদীপের আলোয় আজমল

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

পাদপ্রদীপের আলোয় আজমল

জি এম. মোস্তফা ॥ অবৈধ বোলিং এ্যাকশনের কারণে দীর্ঘ আট মাস মাঠের বাইরে ছিলেন সাঈদ আজমল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন পাকিস্তানের এই অফ স্পিনার। আট মাসের নির্বাসন শেষে আবারও জাতীয় দলে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত সাঈদ আজমল। এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে এক সাক্ষাতকারে সাঈদ আজমল বলেন, ‘ক্রিকেট ছাড়া বাঁচাটা অত্যাচার। আমি আট মাস এই ব্যথা সহ্য করেছি এবং এটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়।’ আজ থেকে শুরু বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি আমার সেরা বোলিংটা করতে বেশ আশাবাদী। যেমনটা নিষেধাজ্ঞার আগে করে অভ্যস্ত ছিলাম আশা করি এখনও তা করতে পারব।’ শ্রীলঙ্কায় আজমলের বোলিং এ্যাকশন নিয়ে সন্দেহের শুরু। এরপর আম্পায়াররা প্রতিবেদন করলে আট মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয় তাকে। এই সময় আজমল তার বোলিং এ্যাকশন শোধরানোর জন্য স্পিন কিংবদন্তি সাকলাইন মুশতাকের সহায়তায় চেষ্টা চালিয়ে যান। গত ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় বোলিং এ্যাকশন মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু তারপরও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি পাকিস্তানের অন্যতম সেরা এই স্পিনার। একাদশতম বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান দল। তবে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েন আজমল। কিন্তু তথাপি কঠিন সময়েও নিয়ন্ত্রণ হারাননি তিনি। এ বিষয়ে আজমল বলেন, ‘বিশ্বকাপে খেলতে না পারাটা ছিল আমার জন্য হতাশার। তবে সবসময়ই অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম, আমার শুভ কামনা দিয়ে তাকে এবং অন্য খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করতাম। এই সময় দল থেকে দূরে থাকাটা অনেক কঠিন ছিল।’ গত বছরের আগস্টে নিষিদ্ধ হন আজমল। সে সময় একদিনের ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নাম্বার বোলার ছিলেন তিনি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাঈদ আজমল ১৭৮ টেস্ট, ১৮৩ ওয়ানডে এবং ৮৫ টি২০ উইকেট দখল করেন। পাকিস্তানের অভিজ্ঞ কোচ ওয়াকার ইউনুস এখনও তার পারফর্মেন্সে দারুণ আশাবাদী। তার প্রত্যাশা টাইগারদের বিপক্ষে সিরিজেই স্বরূপে ফিরবেন সাঈদ আজমল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে চমৎকার প্রত্যাবর্তন হবে আজমলের। আমাদের উচিত সাঈদ আজমলের প্রশংসা করা। কেননা গত ৮ মাসে দলে ফিরতে কঠোর পরিশ্রম করেছে সে। আমি বিশ্বাস করি, তার অভিজ্ঞতা তাকে সাফল্য এনে দেবে।’ বিশ্বকাপের মঞ্চে সেরা পারফর্মেন্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ। আগের চেয়ে অনেক বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শক্তি-সামর্থ্য ও আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়েও অনেক এগিয়ে এখন টাইগাররা। তাই এই বাংলাদেশকে যথেষ্ট সমীহ করছে পাকিস্তান। তবে সাঈদ আজমলকে নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশও। কেননা নতুন এ্যাকশনে কেমন হবে তা এখনও বুঝে উঠতে পারছে না টাইগাররা। ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে আজমল প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আসলে ও অনেক দিন পরে আসছে। আমাদের আসলে ধারণা নেই যে সাঈদ আজমলকে আমরা আগে দেখেছি সেই সাঈদ আজমল এবার আসছে কিনা। এ রকম একটা ঘটনার পর হয় কি আর আগের ইফেকটিভনেসটা থাকে না। কিন্তু এর থেকে আরও ভাল ফর্মেও সে আসতে পারে। খারাপও করতে পারে। আসলে ম্যাচের পর বোঝা যাবে সে কি অবস্থায় আছে। ও যখন ম্যাচ খেলবে তখন বোঝা যাবে।’ তবে বাংলাদেশের কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহের বিশ্বাস আগের মতো ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারবেন না আজমল। এ বিষয়ে তার অভিমত হলো, ‘আজমলের বোলিং এ্যাকশন পরিবর্তন হয়েছে। আশা করি সে আগের মতো কার্যকরী হবে না। তবে সে একজন অভিজ্ঞ স্পিনার তাকে নিয়েও আমরা পরিকল্পনা করেছি।’
×