ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যত বড় চ্যালেঞ্জই আসুক, মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাব

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

যত বড় চ্যালেঞ্জই আসুক, মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী জাতি। তাই কারোর কাছে আমরা মাথানত করব না। যে যত বড় চ্যালেঞ্জ দিক, আমরা তা মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যাব, দেশকে এগিয়ে নেব। আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, কার্যকরও হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করতে গিয়ে কত উঁচু জায়গার টেলিফোন এবং ফাঁসি যেন দেয়া না হয় সেই অনুরোধ পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে যত বাধাই আসুক, সব কিছু মোকাবেলা করেই এই বিচার আমরা শেষ করবই। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুড়িয়ে মানুষ মারার যে সংস্কৃতি বিএনপি শুরু করেছে, সামান্য মানবিকবোধ সম্পন্ন কোন মানুষ এমনটি করতে পারে না। একটি রাজনৈতিক দল কী ভাবে মানুষ পোড়ানোর রাজনীতির মতো নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে? কিন্তু ৯২ দিন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, দেশের সম্পদ ধ্বংস ছাড়া বিএনপি নেত্রী কোনকিছু অর্জন করতে পারেননি। পরাজিত হয়ে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়েই তাঁকে ঘরে ফিরে যেতে হয়েছে। আসলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া) ভেবেছিলেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে না, অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে কিংবা তাঁকে নিয়ে গিয়ে ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু তাঁর সেই আশা পূরণ হয়নি। নির্বাচন হয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। তিনি সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার সংগ্রামে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। বুধবার গণভবনে কলামিস্ট, লেখক, টকশো’র আলোচক ও সঞ্চালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং মঙ্গলবার সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বুধবারের শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়াও সূচনা বক্তব্যে শেষে দীর্ঘ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন। পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করা ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। কলামিস্ট, লেখক ও টকশো’র আলোচক ও সঞ্চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, যাব। কোন কাজ না করতে পারলে সমালোচনা অবশ্যই আপনারা করবেন। সমালোচনা থেকে আমরা জানতে পারব কোথায় ভুল ও সমস্যা রয়েছে। গঠনমূলক সমালোচনা কাজ শেষ করার প্রতি জেদ তৈরির পাশাপাশি কাজটি সঠিকভাবে শেষ করতে সহযোগিতা করে। তবে এমন কিছু করবেন না যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাই যারা চায়নি সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত আরও শক্তিশালী হয়। তাদের মুখে যেন খোরাক না আসে। তারা যেন কথার খোরাক না পায়। এটুকু সহযোগিতা আপনাদের কাছে চাইব। সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে জাতীয়-আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও কিছু ব্যক্তিবর্গের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের কথা না ভেবে যারা তাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে তাদের মানবাধিকার নিয়েই অনেকে সোচ্চার! মানবাধিকারের কথা বলব, কিন্তু মানবাধিকার যারা লঙ্ঘন করবে তাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে নাকি? তিনি বলেন, অনেকেই একাত্তরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্যাতিত ও নিহতদের কথা না ভেবে তাদের যারা হত্যা, ধর্ষণ করেছে তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখায়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা মারা গেল কিংবা নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো- তাদের কথা চিন্তা না করে যারা ক্ষতি করছে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেÑ সেই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের মানবাধিকার নিয়ে সবাই খুব সোচ্চার কেন? তিনি বলেন, এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়েও এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাদের। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের মানবাধিকার নিয়ে সবাই খুব ব্যস্ত। এই একটা অদ্ভুত বিষয় আমি সব সময় দেখি যে, অপরাধীদের জন্যই সবার মায়াকান্না। আর এই অপরাধীদের জন্য যারা জীবনটা দিল তাদের জন্য অত দুঃখ তাদের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করার বিরোধিতা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে ফাঁসি নিয়ে এত কথা হচ্ছে। ফাঁসি কী হচ্ছে না? ঈদের দিনে সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি দিল। যারা ফাঁসির বিরুদ্ধে এত কথা বলে, তারাই তো আবার সাদ্দামের ফাঁসি দেখে হাততালি দিয়ে খুশি হয়। এখন সাদ্দাম যে অপরাধ করেছে, ওই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কিংবা তাদের দোসর আলবদর, রাজাকার ও আল-শামসরাও কী বাংলাদেশে একই অপরাধ করেনি? সাদ্দামের থেকে জঘন্য অপরাধই তো তারা করেছে। তাহলে তাদের অপরাধটা অপরাধ না কেন? এদেশের মানুষের কী জীবনের কোন মূল্য নেই? এদেশের মানুষের কোন অধিকার নেই বিচার চাওয়ার? প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, হরতাল-অবরোধে যখন একের পর এক গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয় তখন সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কেউ মারা পড়লে তার সমালোচনা করা হয়। অপরাধীরা যখন মারা গেছে, সেই অপরাধীদের জন্য কান্না! তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, একটা মানুষের জন্য যদি ৫০টা মানুষ বাঁচানো যায়, তো কোনটা সঠিক হবে? এই ৫০টা মানুষকে বাঁচানো না-কি ওই অপরাধীকে বাঁচিয়ে আরও ৫০ মানুষকে হত্যা করার সুযোগ করে দেয়া? বলা হচ্ছে, ক্রসফায়ারে মানুষ মারা হচ্ছে। ক্রসফায়ার তো না। কেউ যখন অপরাধ করতে যায়, পুলিশের তো অধিকার আছে সেই মানুষের জানমাল বাঁচানো। আর সেটা বাঁচানোর জন্য তাদের যেটা করার তা তাদের করতে হবে। আমরা বাধ্য হয়েছি পুলিশকে সেই নির্দেশ দিতে। তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট বলেছি- অস্ত্র পকেটে রেখে দেয়ার জন্য নয়, অপরাধী দমনের জন্য। এদের দমন করতেই হবে। মানুষকে পুড়িয়ে মারছে, বাসের মধ্যে আগুন দিচ্ছে, রেলে আগুন দিচ্ছে, রেললাইন তুলে ফেলছে, মানুষ হত্যা করছে, আর সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে যে, ও আগুন দিচ্ছে ওকে কিছু করা যাবে না! আর কিছু করলেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে যাবে! আর যারা পুড়ছে সেই মানুষগুলিরই বা কী অপরাধ?’ ২০১৩ সালের ৫-৬ মের হেফাজতের তা-বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখনও রটনা করা হলো দুই হাজার মানুষ মেরে ফেলা হয়েছে। যখন বারবার তালিকা চাওয়া হলো তারা ৬১ জনের তালিকা দিল। সেখানেও অনেককে দেখা গেল যে, তারাও বললেন তারা মরেননি, বেঁচে আছেন। এসব রটনা যারা রটিয়েছে তারাই না-কি মানবাধিকার সংরক্ষণ করার দায়িত্বে আছে! আসলে এই ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি ধোঁকাবাজির খেলা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার কারণেও একই রকম অপপ্রচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ নিয়ে প্রচার, অপপ্রচার, লেখা ও নানা ধরনের কথাবার্তা চলছে। স্বাভাবিকভাবেই এসব মোকাবেলা করতে আমি জানি। কারণ যে মুহূর্তেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে শুরু করেছি, তখনই জানি অনেক কিছু মোকাবেলা করতে হবে। তবে আমরা বিচার শুরু করেছি, দুইটি রায়ও কার্যকর করেছি। বাকিগুলোও করে ফেলব। এটা আমরা করবই। যত বাধাই আসুক, বাধা দিয়ে কেউ ঠেকাতে পারবে না। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী নিজেই নিজেকে অবরুদ্ধ করে মানুষ হত্যা করলেন। এভাবে মানুষ হত্যা ও জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা সবচেয়ে জঘন্য ও বর্বর ঘটনা। আন্দোলনের নামে এ ধরনের বর্বরতা যেন আর না ঘটে সে আশাবাদও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালকে টার্গেট করেছি। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। কাজেই ২০২০ সালের মধ্যেই আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চাই। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীও পালন করব একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাতে সময় খুব কম। আমরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত। আর তিন বছর নয় মাস সময় আমাদের হাতে রয়েছে। তার মধ্যে আবার ১৫ দিন চলে গেছে। কাজেই এই সময়ের মধ্যে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়ন কোন ম্যাজিক নয়। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি বলেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাংলা একাডেমির সভাপতি ও এমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা ॥ প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর উপস্থিত লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, টকশো’র আলোচক ও উপস্থাপকরা বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠক সূত্র জানায়, আলোচক-কলামিস্ট ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, অধ্যাপিকা সাদেকা হালিম, শ্যামল দত্ত, সালাউদ্দিন আহমেদ টিটা, মঞ্জুরুল ইসলাম, রেজোয়ানুল হক রাজা, শমি কায়সার, ডাঃ নুজহাত চৌধুরীর একাধিক প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রশ্নকর্তাদের অধিকাংশ প্রশ্নই ছিল দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের প্রসঙ্গে। সূত্র জানায়, দু’জন প্রশ্নকর্তা দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় নিষ্পত্তি করতে সর্বোচ্চ আদালতে অগ্রাধিকার কিংবা বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা যায় কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অত্যন্ত স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনেই করছি। তাই আমরা এমন কিছু করতে চাই না যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। তবে যত বাধা বা ষড়যন্ত্র হোক না কেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, রায়ও কার্যকর করব। ৯২ দিন হরতাল-অবরোধের নামে ভয়াল নাশকতা-সহিংসতা ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার পরও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কিছু অর্জন ছাড়াই ঘরে ফেরার ঘটনায় কোন ম্যাজিক ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে কোন ম্যাজিক ছিল না। তবে কিছুটা রাজনীতি রয়েছে। কোন অর্জন নয়, বরং পরাজিত হয়ে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়েই বিএনপি নেত্রীকে ঘরে ফিরে যেতে হয়েছে। এ সময় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ৯২ দিন ধরে জনগণকে জিম্মি ও পুড়িয়ে হত্যা করে উনি (খালেদা জিয়া) কী অর্জন করলেন? কিছুই তো অর্জন করতে পারলেন না? তবে এ ব্যাপারে সাহসের সঙ্গে সন্ত্রাসী-নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য তিনি দেশবাসীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাঃ আলীম চৌধুরীর কন্যা ডাঃ নুজহাত চৌধুরী প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, অনেক বেসরকারী টিভি চ্যানেলে টকশো’তে অনেক আলোচক যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলার বিরুদ্ধে কথা বলেন। এসব বন্ধে নতুন আইন করা দরকার। আর দেশের নতুন প্রজন্মের অনেকেই স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানে না। ছাত্রলীগেরও অনেকে সঠিক ইতিহাস জানে না। তাই প্রথম শ্রেণী থেকেই পাঠ্যসূচীতে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়ে বলেন, আইন করা যায় কি না, এটা ভেবে দেখা হবে। আর প্রথম শ্রেণী থেকেই পাঠ্যসূচীতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা হবে। শুভেচ্ছা বিনিময় ও খোলামেলা আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এইচ টি ইমাম, ড. গওহর রিজভী, ড. মশিউর রহমান, ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. সুলতানা কামাল, অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, হাসান শাহরিয়ার, আবেদ খান, স্বদেশ রায়, সৈয়দ আবুল মকসুদ, শফিকুর রহমান, শাজাহান মিয়া, এ্যাডভোকেট এম কে রহমান, নাছির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম কুদ্দুস, মামুনুর রশিদ, পিযুষ বন্দোপাধ্যায়, অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, মোহাম্মদ জমির, ওয়ালিউর রহমান, শ ম রেজাউল করিম, মোজাম্মেল বাবু, নঈম নিজাম, সাইফুল আলম, শাহ আলমগীর, আবদুল জলিল ভুঁইয়া, আলতাফ মাহমুদ, মাসুদা ভাট্টি, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, অধ্যাপক মেসবাহ কামালসহ প্রায় দেড় শতাধিক কলামিস্ট, টকশো আলোচক ও উপস্থাপক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে সবার সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় ॥ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষ পুড়িয়ে মারার কালচার শুরুর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বলেন, পুড়িয়ে মানুষ মারার যে সংস্কৃতি বিএনপি শুরু করেছে, সামান্য মানবিকবোধ সম্পন্ন কোন মানুষ এমনটি করতে পারে না। একটি রাজনৈতিক দল কী ভাবে মানুষ পোড়ানোর রাজনীতির মতো নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে? অতীতে আমরা কখনই আন্দোলনের নামে এভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে দেখিনি। রাজনীতিতে সহিংসতার যে ধারা সূচনা হয়েছিল দৃঢ়ভাবে তা প্রতিরোধ করায় দেশের সাধারণ জনগণকে অভিনন্দন জানান তিনি। মঙ্গলবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের নামে সহিংসতা আর মানুষ হত্যার যে সংস্কৃতি চালু করে ছিল বিএনপি, আগামীতে তা আর থাকবে না। নতুন বছরে রাজনৈতিক হানাহানি বন্ধ হবে, পুড়িয়ে মানুষ মারার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না এবং জনগণের জন্য শান্তি বয়ে আনবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×