ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেখ রাসেলের শুভসূচনা আক্ষেপ ব্রাদার্সের

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৫

শেখ রাসেলের শুভসূচনা আক্ষেপ ব্রাদার্সের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আক্ষেপ করারই কথা ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের ফুটবলারদের। কেননা, ম্যাচের প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত তারা জয়ী দল হিসেবে বিজয়ীর হাসি হাসতে পারেনি তারা! হারতে হয়েছে তাদের ২-১ গোলে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের কাছে। ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’- সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে ঘাম ঝরানো জয়ে শুভসূচনা করল ২০১২-১৩ মৌসুমের লীগ চ্যাম্পিয়ন রাসেল। এটা চলমান লীগে রাসেলের প্রথম ম্যাচ। পক্ষান্তরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয়হীন থাকল গোপীবাগের দল ব্রাদার্স। প্রথম ম্যাচে তারা গোলশূন্য ড্র করেছিল টিম বিজেএমসির সঙ্গে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড যখনই পরস্পর মুখোমুখি হয়, তখনই ম্যাচটি হয় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। গত প্রিমিয়ার লীগের পরিসংখ্যানই এর প্রমাণ। গত লীগ হয়েছিল তিন পর্বে। ১২ জানুয়ারি ২০১৪ সালে প্রথম পর্বে ব্রাদার্স জিতেছিল ১-০ গোলে। ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় পর্বেও একই ব্যবধানে জিতেছিল ব্রাদার্স। ২৩ জুন তৃতীয় পর্বের খেলায় ব্রাদার্সের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল রাসেল (তিনটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে)। উল্লেখ্য, গত লীগে দুই দলের অবস্থান ছিল একেবারেই পিঠাপিঠি। ব্রাদার্স হয়েছিল পঞ্চম আর রাসেল হয়েছিল ষষ্ঠ। অবশেষে চতুর্থ ম্যাচে গিয়ে ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে অধরা জয় কুড়িয়ে এবং প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হলো ‘অল ব্লুজ’ খ্যাত শেখ রাসেল। লীগ শুরুর আগে রাসেলের মন্টেনিগ্রোর কোচ ড্র্রাগান ডুকানোভিচ বলেছিলেন, তার দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই লীগে খেলবে। দলীয় অধিনায়ক মিঠুন চৌধুরীরও প্রত্যাশা ছিল, তাদের দল ভাল কিছুই করবে। তবে সোমবারের ম্যাচে জিতলেও রাসেলের খেলা দেখে তেমনটা মনে হয়নি। মূলত সৌভাগ্যের জোরেই জয় পায় তারা। অথচ দলটিতে খেলে এমন আট খেলোয়াড়, যারা বর্তমানে জাতীয় দলে খেলেন! ৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে রাসেলের মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেনের কর্নার থেকে হেড নেন সতীর্থ ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি। কিন্তু তার হেড ব্রাদার্সের রক্ষণভাগ সেই বলটি বিপদমুক্ত করে। ১৬ মিনিটে বল নিয়ে মিডফিল্ডার কাউসার আলী রাব্বি শেখ রাসেলের বক্সে ঢুকে পড়েন। বিপদ দেখে এগিয়ে আসা জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক মামুন খানের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে (১-০)। ২৮ মিনিটে ডি-বক্স লাইনের খুব কাছে জাহিদ হোসেনকে ফাউল করেন ব্রাদার্স অধিনায়ক ডিফেন্ডার ইউসুফ আলী খান। কিন্তু জাহিদের ফ্রিকিক ব্যর্থ হয়। ৩৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ব্রাদার্সের ইমরুল হাসান ইমুর শটটি অবিশ্বাস্য দক্ষতায় মাঠের বাইরে পাঠাতে সক্ষম হন রাসেলের গোলরক্ষক মামুন খান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডিফেন্সিভ স্টাইলে খেলতে থাকে ব্রাদার্স। এতে রাসেল চড়াও হয়ে খেলার সুযোগ পায় রাসেল। ৭৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের শট সাইডপোস্টে লেগে ফিরে এলে গোলবঞ্চিত হয় রাসেল। তবে ৮০ মিনিটে সফলকাম হয় রাসেল। বাঁ প্রান্ত থেকে জাহিদ হোসেনের ক্রসে হেডে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান এমিলি (১-১)। দুই মিনিট পরেই আবারও গোল করে এগিয়ে যায় ২০১২-১৩ মৌসুমের ট্রেবল শিরোপাজয়ী রাসেল। জাহিদ হোসেনের ক্রসে ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড পল এমিল তীব্র শটে পরাস্ত করেন জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক এবং গত মৌসুমে রাসেলেই খেলা অভিজ্ঞ বিপ্লব ভট্টাচার্য্যকে (২-১)। ইনজুরি সময় সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে ব্রাদার্স। রাসেলের বক্সে ঢুকে হেড নেন নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার এজিওডিকা সিমন। কিন্তু তার হেড বারে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে আবারও হেড করেন হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসন। কিন্তু তার হেড চলে যায় মাঠের বাইরে। আফসোস কমলা জার্সিধারীদের। রেফারি জালাল উদ্দিন শেষ বাঁশি বাজালে সৌভাগ্যের জয় নিয়ে রাসেল ও দুর্ভাগ্যের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাদার্স বাহিনী।
×