ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতা নাশকতার হোক বিনাশ

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

সহিংসতা নাশকতার হোক বিনাশ

বাঙালী জাতির জীবনে ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে, তবুও শান্তি, তবু অনন্ত, তবু আনন্দ জাগে।’ শেষ চৈত্রের খরতাপে বা দাবদাহে দগ্ধ মৃত্তিকা যখন বৈশাখের প্রথম সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠে। তখন যেন বাঙালীর মনও নতুনত্বের স্বাদ গ্রহণের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠবেই। এই দেশের ভাষা এক, ধর্ম প্রায় এক, মানুষ কঠোর শ্রমজীবী নির্মল, সরল, সহজ, হাসিখুশি, ধার্মিক অথচ ধর্মে নয় গোঁড়া। নয় অসাম্প্রদায়িক, শান্তিবাদী, শিল্প ও সঙ্গীতপ্রিয়, পরিবেশবাদীও। কৃষিজীবী, লৌকিক দর্শন ও ভাববাদী সেই দেশকে সুশাসন, প্রকৃত ইতিহাস, শান্তি, সংস্কৃতি দিয়ে কেউ পরিচালিত করুক এমন প্রত্যাশা জাগে নতুন বছরের আবাহনে। প্রতিটি জাতির, প্রতিটি সংস্কৃতির কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে, বাঙালীরও তাই। আজ শেষ চৈত্রের সূর্যাস্তের ছায়াছায়া উষ্ণ বিকেলের দিকে তাকালে ভেসে আসবে ১৪২১ সনের ঘটনাপঞ্জি। কেমন ছিল বছরটি? জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের নৃশংস বিস্তার আর তাতে মানুষের নির্মম প্রাণহানির দৃশ্যাবলীই জবাব দেবে বিদায়ী বছরের হাল-হকিকত কেমন ধারায় প্রবাহিত হয়েছে। মানুষ হত্যা তথা গণহত্যা ও নাশকতা এবং সহিংসতায় জঙ্গীবাদের বিস্তারে বহু হতাহত হয়েছে। নিরপরাধ মানুষকে পেট্রোলবোমা মেরে দগ্ধ করে হত্যা করা হয় ঘোষণা দিয়ে। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধে মত্ত পরাজিত শক্তি ও তাদের পৃষ্ঠপোষক মুক্তিযোদ্ধার লেবাসধারী পাকিস্তানী চেতনাপুষ্টদের মদদে দেশজুড়ে যে নাশকতার প্রসার ঘটানো হয়, তা মুক্তিযুদ্ধকালীন নৃশংসতার সমান্তরাল। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য বোমাবাজি, হত্যাযজ্ঞ, যানবাহন দগ্ধ করা, দেশকে বিপর্যস্ত ও ভয়ভীতির সংস্কৃতির বিস্তার ঘটানো হয় ১৪২১ সনে। যার এখনও বিনাশ ঘটেনি বরং নব নবরূপে আগমন ঘটছে জঙ্গীপনার। তথাপি চৈত্র শেষের শেষ সময়ে সেই যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি আলবদর কমান্ডারের ফাঁসির মধ্য দিয়ে বাঙালী জাতি তার কলঙ্কের বোঝা আরেকটু লাঘব করেছে, ১৪২১ সনে। চুয়াল্লিশ বছর আগে যে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন চালিয়েছিল হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর সহযোগী হয়ে, চেয়েছিল বাংলার মানুষকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, ভেবেছিল মানুষ সব ভুলে গেছে, নারকীয় পাপের কোনদিনও বিচার হবে না। তারা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে আজও দেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পথ তৈরিতে। এমনকি যে দেশের বিরোধিতা করতে অস্ত্র হাতে নিয়েছে, সেই দেশের শাসনক্ষমতায় আসীন হয়ে গাড়িতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে ভাবত, ফিরে পেয়েছে ‘পূর্বপাকিস্তান।’ কিন্তু মুক্তিকামী বাঙালীকে চেনেনি বলেই আস্ফালন চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পিছপা হয়নি, দেশী-বিদেশী বিরোধিতা সত্ত্বেও। ১৪২১ সনের শেষ প্রান্তে এসে বাংলাদেশ তার কলঙ্ক ও পাপমোচনের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেছে। বিদায়ী বছরে পরাজিত শক্তির সশস্ত্র জঙ্গীপনার মাধ্যমে নারকীয়তার যে বীভৎসতা মানুষকে পোহাতে হয়েছে তা একাত্তর তুল্য। বাংলাদেশকে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী মুক্ত করার যে সংকল্প ১৪২১ সনে নেয়া হয়েছিল তা ১৪২২ সনে সম্পন্ন হোকÑ এমন প্রত্যাশা নিয়ে আসছে নববর্ষ। দেশের শত্রুদের শেষ অস্তিত্বটুকু বিলীন না করা পর্যন্ত মুক্তির গান গলা ছেড়ে গাওয়ার সুযোগ প্রসারিত হবে না। বিদায়ী বছরে বাংলাদেশ দেখেছে, দেশে তিন দফায় ক্ষমতাসীন পাকিস্তানী মন-মানসিকতায় আচ্ছন্ন দলটি, একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গীবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দেশকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়ে যেতে এখনও বদ্ধপরিকর। তাই অব্যাহত রেখেছে অবরোধ, নাশকতা। রাজনৈতিক আন্দোলন করার নামে সন্ত্রাসবাদকে লেলিয়ে দিয়ে শতাধিক মানুষকে হত্যা করার পরও তারা অনুতপ্ত নয়। বোমাবাজি ও বাসযাত্রী হত্যার বিস্তার দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক, আমরা ইতিহাসের কোন্ অধ্যায়ে আছি। সমাজবিজ্ঞানীরা প্রাচীন মানবসমাজকে বহু ভাগে ভাগ করে ধাপে ধাপে তার ক্রমোন্নতি দেখিয়েছেন। আমরা তার কোন্ ধাপে অবস্থান করছিÑ বহু চিন্তা-ভাবনা করেও তা স্থির করা যাচ্ছে না। কারণ ঘোষণা দিয়ে মানুষ হত্যার নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন কতটা নির্মম, পাষ- আর দানবিক হলেই তা সম্ভব! ভাবলেই গা শিউড়ে ওঠার কথা। টানা তিনমাস ধরে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী ইতিহাসের যে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট, তা ১৯৭১ সালের বর্বরতাকে বার বার স্মরণ করিয়ে দেয়। সাধারণ মানুষের প্রাণ হরণ করে পরাজিতরা একাত্তরের বদলা নিতে চেয়েছে। কিন্তু শেষ রক্ষা তাদের হবার নয়। মানবতাবিরোধী যে অপরাধের জন্য তাদের বিচার, শাস্তি ও সাজা হচ্ছেÑ ১৪২১ সনে তাদের অপরাধের ধরন ও মাত্রা একই। তাই এইসব অপরাধ হতে আজ পার পেয়ে গেলেও ভাবীকাল তাদের ক্ষমা করবে না। যেমন ক্ষমা করেনি নতুন প্রজন্ম যুদ্ধাপরাধীদেরÑ বরং বিচারের দাবিতে এককাট্টা। বিদায়ী বছরের পুরো সময়টাতে দেখা যায়, প্রধান বিরোধী দল স্বাভাবিক রাজনীতির পথ ছেড়ে সন্ত্রাসকে মুখ্য হিসেবে ধারণ করে সহিংসতায় ঠাঁই নিয়েছে। বিএনপি নেত্রী বিদায়ী বছরে নিজেকে পুরো জঙ্গীনেত্রী হিসেবে আসীন করতে পেরেছেন। জনগণের বিরুদ্ধে একতরফা যুদ্ধ ঘোষণা করে পেট্রোলবোমার বিকাশে সক্রিয় ছিলেনÑ যা সাধারণ মানুষের ওপর প্রয়োগ করে সরকারকে উৎখাত করার অভিপ্রায়ে বাসাবাড়ি ছেড়ে অফিসকে বাড়ি বানিয়ে টানা ৯২ দিন অবস্থান করেও কোন প্রাপ্তি হয়নি লাশ আর দগ্ধ যানবাহনের স্তূপ নির্মাণ ছাড়া। বরং বিএনপি নামক দলটি বিদায়ী বছরে নেতা কর্মীহীন বোগাস আন্দোলনের পন্থায় জামায়াত জঙ্গীদের কর্মসূচি পালনে সচেষ্ট ছিলেন। যা হতে তিনি সামান্যও সরে আসেননি। নববর্ষে যে ফিরবেন সন্ত্রাস জঙ্গীপনা হতে, তার কোন লক্ষণ দেখা যায় না। তিনি যে রাজনীতির চর্চা করে আসছেন, তা পশ্চাদমুখী। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জঙ্গীবাদ। এসবের বিস্তার ঘটছে সংস্কৃতি চর্চার একটা উল্লেখযোগ্য অংশের নির্বিকারত্বের কারণে। সংস্কৃতির বিকাশ ছাড়া জাতির অগ্রগতি সম্ভব হয় না। সেখানে জঙ্গীবাদ, পশ্চাদমুখিতা, পেট্রোলবোমায় গণহত্যা চালানোর বিপরীতে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটা জরুরী। একমাত্র এই জাগরণের মাধ্যমেই জঙ্গীবাদী অপশক্তিকে নির্মূল করা সম্ভব। মূর্খতা, অজ্ঞতা, অন্ধতা, গোষ্ঠী মনোবৃত্তি প্রভৃতি বিদ্যমান থাকা অবস্থায় রাজনীতিকে বার বার একই শনিচক্রের মধ্যে ঘোরানো সম্ভব হচ্ছে। পঁচাত্তর-পরবর্তী হতে তাই চলে আসছে। বার বার অপকর্মের সুযোগ পাচ্ছে মোনাফেক, বাটপাড়, টাউট, আরাম-আয়েশি ধনী দুশ্চরিত্র শ্রেণীর লোকেরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে আলো বিতড়িত হলে তাদের স্বার্থহানি ঘটে। তাই জঙ্গীদের ধারায় বিএনপি নেত্রী ও তাঁর বাহিনী শিক্ষার বিরুদ্ধে রণরঙ্গিনী মূর্তিতে দ-ায়মান। স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ঠেকাতে অবরোধ-হরতাল ডেকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছেন। তারা আলোর পরিবর্তে গোমরাহি প্রচারে বিশেষ উৎসাহ বোধ করেন। নিজ পুত্রকন্যাদের বিশেষ ধরনের ব্যয়বহুল প্রতিষ্ঠানে এমনকি বিদেশে রেখে ও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে আসছেন। প্রচুর রাষ্ট্রীয় অর্থ এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ওইসব ভাগ্যবানের সন্তানদের বিশেষায়িত শিক্ষার জন্য ব্যয় হয়। কিন্তু সাধারণের সন্তানদের মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে হয়। এরাই জনগণকে জিম্মি করে নিজেদের স্বার্থে, এমনকি মানুষকে হত্যাতেও দ্বিধাগ্রস্ত নয় তারা। ১৩০৮ সনের শেষ চৈত্রদিনে শান্তিনিকেতনের উপাসনালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে সকল বস্তুই আসিতেছে এবং যাইতেছেÑ কিছুই স্থির নহে : সকলই চঞ্চলÑ বর্ষশেষের সন্ধ্যায় এই কথাই তপ্ত দীর্ঘ নিশ্বাসের সহিত হৃদয়ের মধ্যে প্রবাহিত হইতে থাকে। কিন্তু যাহা আছে, যাহা চিরকাল স্থির থাকে, যাহাকে কেহই হরণ করিতে পারে না, যাহা আমাদের অন্তরের অন্তরে বিরাজমানÑ গত বর্ষে সেই ধ্রুবের কি পরিচয় পাই নাইÑ জীবনে কি তাহার কোন লক্ষণ চিহ্নিত হয় নাই? সকলই কেবল আসিয়াছে এবং গিয়াছে?’ তাই ১৪২১ সনে যে সব জঙ্গী অশুভ শক্তি দেশকে বিপর্যস্ত করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার কাজে নিয়োজিত তারা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা ছেড়ে পালানোর পূর্বমুহূর্তে সচিবালয়ের দেয়ালে লিখে রেখেছিল, ’আমরা আবার ফিরে আসবোইÑ আল বদর।’ ওরা কথা রেখেছে। ফিরে ঠিকই এসেছে বেশ বীরদর্পেই যেন। ওরা বাঙালীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে পাকিস্তানী সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে তৎপর আজও। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে দ্বিমুখী আক্রমণের মুখে পড়ে বাঙালীর সংস্কৃতি বিপন্ন, বিপর্যস্ত অবস্থায় পৌঁছে। বাঙালীর প্রাচীন সমন্বয়ধর্মী সংস্কৃতিকে চরমভাবে বিকৃত করে তথাকথিত পাকিস্তানী চেতনাসম্পন্ন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি নামে এক কুরুচিপূর্ণ নিকৃষ্ট অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। তাই দেখা যায়, ১৯৭৮ সালে সামরিক শাসক শিল্পকলা একাডেমিতে নজরুলজয়ন্তীতে একজন শিল্পীর নজরুলের গানে তবলা ব্যবহারে ক্ষিপ্ত হয়ে মঞ্চে উঠে তা লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বলেন, এসব ব্যবহার বন্ধ করে ড্রাম, কিবোর্ড ব্যবহার করবেন। এর পরই ঢাকায় গড়ে তোলা হয় পাশ্চাত্যবাদন যন্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। পাশাপাশি ইসলামের নামে কতিপয় ধর্মান্ধ মৌলবাদীগোষ্ঠী দেশী-বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বাঙালীর উদার মানবতাবাদী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে উদ্যত আজও। স্বাধীনতা পূর্বকাল হতে যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে আসছে এবং বাংলাভাষা ও বাঙালী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতার বিরোধিতায় গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটে লিপ্ত হয় পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে। স্বাধীনতার পর সাম্প্রদায়িক এই চক্রের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও এরা আত্মগোপন করে দেশে-বিদেশে। পঁচাত্তর-পরবর্তী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনরুজ্জীবন ঘটায় সামরিকজান্তা শাসকরা। একাত্তরের পরাজিত কট্টর মৌলবাদী ও গণহত্যাকারী শক্তির আবির্ভাব ঘটে বাঙালী সংস্কৃতির বিপরীতে। এরা পাকিস্তানী চেতনায় বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক, উদার সংস্কৃতিকে পদানত করতে নানা পথ ও পন্থা অবলম্বন করে আসছে এখনও।বাঙালীর সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তানে পরিণত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরা তালেবান, আল কায়েদা, জেএমবি, হিযবুত তাহ্রীর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ইত্যাদি নানা জঙ্গী সংগঠনকে বাংলাদেশে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। এরাই রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখ, যশোরে উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করে। এ দু’টি সংগঠনই পাকিস্তানযুগ হতেই বাঙালীর সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে লড়াই করেছে। এরপর ২১ আগস্ট, ১৭ আগস্ট হয়ে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে নাশকতার পথ ধরে বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করার সব পন্থা অবলম্বন করে ২০১৫ সালে এসে টানা তিনমাসের বেশি মানুষ হত্যাপ্রকল্প চালু রেখে ভয়ভীতির সংস্কৃতিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এসব ঘটনার বিচার না হবার ট্রাডিশন তাদের আরও সাহসী করে তুলেছে। বসন্তের শেষ দিন আজ। বাংলা বছর ১৪২১ সনেরও শেষ দিন। শেষের এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আসন্ন গ্রীষ্মকালকে তথা বৈশাখকে বরণ করে নেবার পূর্বমুহূর্তে ভেসে ওঠে বার্ন ইউনিটের আহাজারি। পেট্রোলবোমায় দগ্ধ মানুষের পুড়ে যাওয়ার মতো বীভৎসতা। আর এসবই সংঘটিত হয়েছে জনগণের বিরুদ্ধে। বিদায় ১৪২১ সন। বিদায় চৈত্রসংক্রান্তি। শুভ হোক পয়লা বৈশাখ। যার যা আছে তাই নিয়ে ফের প্রস্তুত হবার দেবে ডাক পয়লা বৈশাখ। যুদ্ধাপরাধী মুক্ত হোক স্বদেশ। পরাজিত শক্তির হোক বিনাশ। নাশকতা, সহিংসতা, বোমাবাজি হোক উধাও। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দাপট হোক বিলীন। আমার সোনার বাংলা হোক সোনায় মোড়ানো। জয়তু ১৪২২ বাংলা সন।
×