স্টাফ রিপোর্টার ॥ সত্য কথা অকপটেই বলে থাকেন আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। এবারও তাই করলেন। দেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহল থেকে যখন বিভিন্ন মত দেয়া হচ্ছে তখন বিশিষ্ট এ আইনজ্ঞ বলে দিয়েছেন, বাংলাদেশের রাজনীতির অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করলে। মঙ্গলবার নাগরিক অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রফিক-উল হক বলেন, আস্তে আস্তে সবকিছুই একটা পর্যায়ে ঠিক হয়। আবার নতুন করেও অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসি হলে হয়ত আবার কিছুটা অস্বস্তি হবে। তবে বাংলাদেশের রাজনীতির অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করলে। বিএনপির পক্ষ থেকে এটা করার উপযুক্ত সময় (হাইটাইম) এটা। এটা হলে রাজনীতিতে স্থায়ীভাবে মোটামুটি একটা স্থিতিশীলতা আসতে পারে। এদিকে রফিক-উল হকের এ বক্তব্য আলোড়ন তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। রাজিব তাই ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন ‘বিএনপির জামায়াত ত্যাগ? পানিবিহীন মাছের মতো।’ আকবর লিখেছেন ‘বিএনপির একান্ত শুভাকাক্সক্ষী হিসেবেই আওয়ামী লীগ এতদিন ধরে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের পরামর্শ দিয়ে আসছে।’ সানি লিখেছেন, ঠিক বলেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন করতে হলে সবার আগে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে আর রাজাকারদের বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। রানী লিখেছেন ‘বাংলাদেশের রাজনীতির অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করলে; ১০০ ভাগ সত্যি কথা। সঙ্গে যোগ করছি, বাংলাদেশের রাজনীতির বাকি অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে এদেশে জামায়াতের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ করলে। কিন্তু বিএনপি কি জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে পারবে??? এতদিনের বন্ধুত্ব মন চাইলেও ছাড়া যায় না। নিন্দুকেরা কত কথাই বলে, তা শুনলে কি আর বিএনপির চলে। রুকসানা লিখেছেন ‘বিএনপি হলো জামায়াতের বি টিম। জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম যে কাজটি করেছেন তা হলোÑ ঘাতক রাজাকারদের বাঁচানোর জন্য দালাল আইন বাতিল করা। এই আইন বাতিলের মাধ্যমে ঘাতক রাজাকারদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছেন। সেই সময় গোলাম আযমকে পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকিয়েছিলেন। ৩৪০ পাকিস্তানী দালাল যাদের নগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছিল, তাদের জেনারেল জিয়া নাগরিকত্ব ফেরত দেন। সুতরাং, বিএনপি হলো জামায়াতের ভিন্ন রূপ। এক সময় এই দুই দল একীভূত হবে।
‘আমি আপনাদের
আব্বাসের বউ’
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেও লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে প্রচারে নেমেছেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। আফরোজা মহিলা দলের সহ-সভানেত্রীও বটে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে বুধবার থেকে মাঠে নেমেছেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। দক্ষিণের দুই নম্বর ওয়ার্ডের গোড়ান থেকে প্রচার শুরু করেন আফরোজা। শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে নামেন তিনি।
এ সময় তিনি নিজেকে মির্জা আব্বাসের বউ বলে পরিচয় দেন। ১ নম্বর ওয়ার্ড খিলগাঁও থানা শান্তিপুর (সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়) স্কুল থেকে হেঁটে আফরোজা আব্বাস শান্তিপুর (সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়), ৪নং ওয়ার্ড বাসাবো, মাদারটেক, ৫নং ওয়ার্ড বৌদ্ধমন্দির এলাকায় গণসংযোগ করেন। আফরোজা আব্বাস এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। এসময় প্রত্যেক ভোটারের কাছে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আব্বাস বউ, ভোট দিয়েন। দোয়া করবেন।’ আফরোজা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি প্রচারে না এলেও আমি তার পক্ষে গণসংযোগ করব। মানুষজন খুবই আগ্রহী, তারা আব্বাসের খোঁজ নিচ্ছেন। প্রচার চালাতে যেখানেই গেছেন প্রতিটি এলাকাতেই তিনি নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি আপনাদের আব্বাসের বউ’। মামলা থাকায় মির্জা আব্বাস প্রচার চালাতে আসতে পারেননি দাবি করে ভোটারদের কাছে তিনি বলেন, স্বামীর পক্ষে আমি প্রচার শুরু করেছি। আপনারা ভোট দিয়েন।
মাহী চৌধুরীর জাতীয়তাবাদী ঐক্য
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার সুযোগে হঠাৎ জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক হতে চান মাহী বি চৌধুরী। বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সমর্থনও চেয়েছেন বিকল্প ধারার সিনিয়র এ যুগ্ম-মহাসচিব। নিজে যে বিএনপির কেউ না তাও বুঝতে ভুল করেননি মাহী। বলেছেন, আমি ২০ দলের কেউ নই। আব্দুল
আউয়াল মিন্টু ২০ দলের প্রার্থী। সামান্য সমস্যার কারণে মিন্টু ভাইয়ের প্রার্থিতা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগে আমি এখন গিয়ে চেয়ারপার্সনকে বলব আমাকে ২০ দলের প্রার্থী করেন, এতটা রূঢ় হতে পারব না।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে উত্তরে বিএনপির এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ঢাকা উত্তরের প্রার্থী নিয়ে সঙ্কটের মুখে আছে ২০ দলীয় জোট। মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় কাকে সমর্থন দেয়া হবে? এ নিয়ে জটিলতায় বিএনপি। আর এই সুযোগেই বুধবার হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সমর্থন চাইলেন বিকল্প ধারার সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাহী। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাহী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক উল্লেখ করে বলেন, যদিও ২০ দলীয় জোটে বিকল্পধারা নেই। তাতে কি, বর্তমান রাজনীতিতে বিএনপির অন্যতম মিত্র বিকল্পধারা। বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাদের একজন বিকল্পধারার সভাপতি ডাঃ এ কিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বি চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিল। আমি জাতীয়তাবাদের আদর্শ বিশ্বাস করি ও ধারণ করি, ভবিষ্যতেও করব। আমিও বিএনপি চেয়ারপার্সনের কাছে ভোট চাইতে যাব। নিজেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনীতির আদর্শের অনুসারী উল্লেখ করে মাহী বলেন, শহীদ জিয়া আমার রাজনীতির আদর্শ। তাই জাতীয়তাবাদী শক্তির কাছ থেকে আমি সমর্থন চাই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহী বলেন, সমর্থন পাওয়ার জন্য খালেদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। তবে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় দলের অনেক সিনিয়র নেতা আমাকে নির্বাচন করতে বলেছেন। আবার অনেকে ভিন্নমতও পোষণ করেছেন। আবদুল আউয়াল মিন্টুর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক তুলে ধরে তার ছেলে তাবিথকে ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে এ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বলেন, প্রতিটি ঘরে ঘরে জাতীয়তাবাদের সমর্থক রয়েছে। উত্তরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হককে নিয়ে মাহী বলেন, তিনি (আনিসুল হক) ভাল মানুষ, অত্যন্ত সংস্কৃতিমনা। তিনি রাজনীতিবিদ হতে পারতেন, তা না করে তিনি আওয়ামীমনা হয়ে গেছেন। নিজের অর্থ-বিত্তের বিষয়ে মাহী বলেন, এটা আমাদের বংশের ৮০ বছরের ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছে।
নগর সন্তান!
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ী হয়ে সকল প্রার্থীই হতে চান ‘নগরপিতা’। কিন্তু জাসদ নেতা ও বিশিষ্ট অভিনেতা নাদের চৌধুরী বলে দিলেন, ‘নগরপিতা নই, সন্তান হতে চাই।’ তিনি বলেন, এই শহরে আমার জন্ম, শহরেই বেড়ে ওঠা। আমার গ্রামে কোন বাড়ি নেই, শহর ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কোন উপায় নেই। ঢাকা ভাল থাকলে আমি ভাল থাকব, ভাল থাকবে আমার পরিবার।
সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের নাদের চৌধুরী এভাবেই তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। জাসদ সমর্থিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী অভিনেতা নাদের চৌধুরী। নৈতিক অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ছোটবেলায় যখন রাজনীতি শব্দটিই বুঝিনি তখন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জীবনের শুরু থেকেই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি জীবনে অন্য কোন মতাদর্শ বা মতবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। রাজনীতির পাশাপাশি অভিনয় চালিয়ে গেছি। মোহাম্মদপুরের এ বাসাতেই সুবচন নাট্য সংগঠন গড়ে তুলি। এই সুবচন নাট্য সংগঠন থেকেই ‘পদাতিক’ এর যাত্রা শুরু। সেই থেকে এখনও আছি। নাদের চৌধুরী বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে আমার প্রথম লক্ষ্য থাকবে সিটি কর্পোরেশনকে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত করা। এর জন্য নিজস্ব কিছু পরিকল্পনাও রয়েছে। তিনি বলেন, আমি এই নগরের সন্তান। তাই নগরপিতা হতে চাই না। সন্তান হিসেবেই কাজ করতে চাই।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: