ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ে অফিস করবেন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৯ এপ্রিল ২০১৫

আজ প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ে অফিস করবেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে অফিস করবেন। সকল মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রী অফিস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রথমেই নিজের এ মন্ত্রণালয়ে আসছেন। সরকার দুই মেয়াদে বিদ্যুত এবং জ্বালানিখাতের উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বুধবারও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। আজ প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিদ্যুত জ্বালানি বিভাগের অগ্রগতির বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা হবে। যদিও এর অধিকাংশই পুরাতন। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে চারটি বৈঠক করেছে বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগ। সপ্তাহের প্রথম দিকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক- ই-ইলাহী চৌধুরীর উপস্থিতিতে কর্মকর্তাদের বক্তব্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে গত এক বছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত কোন কাজই শেষ করতে পারেনি বিদ্যুত এবং জ্বালানি বিভাগ। এ বিষয়ে জবাবদিহিতা দেয়া নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে রয়েছে উভয় বিভাগের কর্মকর্তারা। দীর্ঘ দিনের জঞ্জাল পরিষ্কার করে পিডিবিকে লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনতে পেট্রোবাংলার মতো কর্পোরেশনে রূপান্তরের প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য সরাসরি আন্দোলনে নেমেছেন সংস্থাটির শ্রমিক কর্মচারিরা। এ বিষয়ে পিডিবির শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও ভেতরে ভেতরে সায় রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন কোন ক্রমেই পিডিবিকে ভাঙ্গতে দেয়া হবে না। ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ে অফিস করার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুত এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে দেয়া ২২ নির্দেশনার একটিও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি বিদ্যুত এবং জ্বালানি বিভাগ। এরপরও প্রধামন্ত্রীর নির্দেশনা এবং বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগের অগ্রগতি নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। সব থেকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে দেখানো হচ্ছে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর এবং রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রর দরপত্র আহ্বানকে। কিন্তু এ দুটি প্রকল্পই গত পাঁচ বছর ধরে বাস্তবায়নের অপক্ষোয় রয়েছে। এখনও কোন প্রকল্পর জন্য চূড়ান্ত চুক্তি করতে পারেনি বিদ্যুত বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুত বিভাগে অফিস করেন। তিনি দেশের বিদ্যুত ও জ্বালানিখাতে সার্বিক উন্নয়নে উভয় বিভাগকে নির্দেশনা দেন। যদিও এর কোনটিই বাস্তবায়ন করতে পারেনি উভয় বিভাগ। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী ওই সময় বিদ্যুত বিভাগকে ১৪টি নির্দেশনা দেন। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে প্রচলিত পদ্ধতির বিদ্যুত উৎপাদনের পাশাপাশি অফ গ্রীড এলাকায় বিদ্যুত পৌঁছে দিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটানো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে দ্রুত আঞ্চলিক গ্রীড হতে বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুত ও জ্বালানি আমদানির মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের। পটুয়াখালীতে নির্মাণাধীন পায়রা সমুদ্রবন্দরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য নির্ধারিত জায়গা বন্দর কর্তৃপক্ষ নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির নিকট হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা। বিদ্যুতখাতকে শ্রম আইনের আওতার বাইরে রাখার ব্যবস্থা করা। ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রকল্পের ন্যায় বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র বা কোম্পানি বা দেশী বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) সংস্কারের উদ্যোগ হিসেবে দেশের বিদ্যুত ব্যবস্থার বৃহত্তর প্রসারের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলমান সরকারী বেসরকারী বিদ্যুতকেন্দ্রের জন্য আলাদাভাবে অপারেশন এ্যান্ড মেইনটেনেন্স (ওএ্যান্ডএম) কোম্পানি গঠন। বিদ্যুতের অপচয়, দুর্নীতি, সিস্টেম লস এবং পিডিবিকে লোকসানি প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে রক্ষা করতে পেট্রোবাংলার মতো কর্পোরেশনে রূপান্তর করতে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। সাউথ জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এবং নর্থ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দেন। সেন্ট্রালজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে সিলেট ও ময়মনসিংহের বিদ্যুত ব্যবস্থা উন্নয়নের নির্দেশ দেন। ঘোড়াশাল বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রকে কর্পোরেটাইজ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত বিভাগকে আরও কার্যকর করতে পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ তদারকির জন্য একটি বিশেষায়িত উইং গঠন, প্রকৌশল এবং পরির্দশন উইং স্থাপন, সুশাসন এবং আইনী কার্যক্রমের জন্য গর্ভানেন্স এ্যান্ড লিগ্যাল উইং স্থাপন, বিদ্যুতখাতের কার্যক্রম প্রচারের জন্য পাবলিসিটি উইং স্থাপন।
×