ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রায়ের অনুলিপি পেলেই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে

কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর প্রক্রিয়া ॥ আদেশের অপেক্ষায়

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৮ এপ্রিল ২০১৫

কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর প্রক্রিয়া ॥ আদেশের অপেক্ষায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজের পর রায়ের অনুলিপির জন্য আটকে আছে দ- কার্যকর প্রক্রিয়া। আদালত থেকে রায়ের অনুলিপি কারাকর্তৃপক্ষের কাছে গেলেই পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে তারা। এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রায়ের কপি আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট শাখায়ও পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। অনুলিপি হাতে পেলেই তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, রিভিউ খারিজের রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই কামারুজ্জামানের দ- কার্যকরের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সোমবার নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইনের বাইরে কিছুই করবে না সরকার। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে গত সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এসকে) নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চ এ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর থেকেই কুখ্যাত এই যুদ্ধাপরাধীর দ- কার্যকর নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কারাগারেও নেয়া হয় প্রস্তুতি। এদিকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান, রিভিউ খারিজের রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই কামারুজ্জামানের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আইনের বাইরে কিছু করবে না সরকার। রায়ের কপি পেয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফাঁসি কার্যকর করা হবে যে কোন সময়। এদিকে রায়ের কপি না পাওয়ায় ফাঁসির আসামি কামারুজ্জামানকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে জানাতে পারছে না কারা কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়টির ফয়সালা না হওয়ায় মৃত্যুদ- কার্যকরের প্রক্রিয়া আটকে আছে বলে সোমবারই জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার বিকেলে কামারুজ্জামানের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের কপি এখনও পাইনি। জানা মতে এখনও রায়ে সই হয়নি। রায়ের কপি আনুষ্ঠানিকভাবে না জানানো হলে দ- কার্যকরের আইনি সুযোগ নেই। এর আগে সোমবার রায় ঘোষণার পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী কামারুজ্জামান অপরাধ স্বীকার করে প্রাণভিক্ষা চাইলে রাষ্ট্রপতি তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন। ওই আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে অথবা কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ- কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের ক্ষেত্রেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল। তবে সে সময় কাদের মোল্লা প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি। শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুরে ১২০ জন পুরুষকে ধরে নিয়ে হত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় গতবছর ৩ নবেম্বর আপীল বিভাগের এই বেঞ্চই বহাল রাখেন। পরে আপীলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন বিচারক। এরপর মৃত্যু পরোয়ানা পাঠিয়ে দেয়া হয় কারাগারে, কামারুজ্জামানকে তা পড়ে শোনানো হয়। মৃত্যু পরোয়ানা জারির চতুর্দশ দিনে গত ৫ মার্চ আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিভিউ আবেদন জমা দেন কামারুজ্জামানের আইনজীবী জয়নাল আবেদিন তুহিন। ৪৫ পৃষ্ঠার এই আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে কামারুজ্জামানের খালাস চাওয়া হয়। গত ৮ মার্চ আপীল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রিভিউ আবেদনটি শুনানির দিন ধার্য করার জন্য আপীল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এরপর দুই দফায় শুনানির দিন পিছিয়ে গত রবিবার শুনানি হয় কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদনের।
×