ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে রাস্তা-বেড়িবাঁধ ব্রিজ হুমকির মুখে

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৮ এপ্রিল ২০১৫

কক্সবাজারে রাস্তা-বেড়িবাঁধ ব্রিজ হুমকির মুখে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারের চকরিয়া খুটাখালী ফুলছড়ি খাল থেকে পানির গতিপথ বন্ধ করে বালু উত্তোলনের কারণে খাল পাড়ের রাস্তা নিশ্চিহ্ন, ব্রিজে ধস, বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত এবং বহু জমি বিলীন হয়ে গেছে। ওই খালের বালুর মহাল ইজারা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর মধ্যবর্তী এলাকা ফুলছড়ি খালের বালুর মহাল প্রতিবছর ইজারা নিয়ে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী লাভবান হলেও স্থানীয় জনগণের জানমাল ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বেশি। ওই খালের দু’পাড়ের রাস্তা দিয়ে জুমনগর, জৈন্নাকাটা গ্রাম ও সামাজিক বনায়ন এলাকার সহস্রাধিক লোকজন নতুন অফিস বাজারে এবং স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছে। এ বছরও ওই খালের বালু মহাল ইজারা দেয়া হচ্ছে জেনে ঘুম হারাম হয়ে গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। দুই উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়ন, ফুলছড়ি মৌজার জৈন্নাকাটা গ্রাম ও ইসলামপুর ইউনিয়নের জুমনগর এলাকার বাসিন্দারা এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে। ১৫ এপ্রিল ওই বালু মহাল ইজারা প্রদানের দিন ধার্য করেছে জেলা প্রশাসন। খালপাড়ের জমি মালিক ডাঃ আবদুল কুদ্দুচ মাখন বলেন, ইতোপূর্বে ফুলছড়ি নদী হতে বালু উত্তোলনের কারণে খাল পাড়ের উত্তর পার্শ্বের রাস্তাটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। ফুলছড়ি খালের ওপর নির্মিত জৈন্ন্যাকাটা যাওয়ার ব্রিজটিও ধসে গেছে। খালের দু’পাড়ের স্থান গভীর হয়ে বিভিন্ন স্থানের বেড়িবাঁধ বিধবস্ত হয়ে খালের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে বহু ব্যক্তির মালিকানাধীন জমি। এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল আজিম দাদা বলেন, ফুলছড়ি খালের দুই পার্শ্বে ফুলছড়ি মৌজার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে দাবি করে তিনি বলেন, ফুলছড়ি খালে দু’টি গাইড ওয়াল দেয়া আছে। খালপাড়েই গড়ে ওঠা চলাচলের রাস্তা, বসতবাড়ি, মসজিদ, ফোরকানিয়া, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সামাজিক বনায়ন হুমকির মুখে রয়েছে। এছাড়া গাইড ওয়াল দুইটি ও নবনির্মিত জৈন্ন্যাকাটা ব্রিজটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফুলছড়ি এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান চৌধুরী ও ইমাম শরীফ বলেন, ফুলছড়ি খালে শুষ্ক মৌসুমে ১০Ñ১৫টি রিং বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে কয়েক হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করে আসছে বহু কৃষক। ওই খালটি আবারও ইজারা দেয়া হলে সহস্রাধিক একর জমি অনাবাদি পড়ে থাকাসহ এতে ফসল উৎপাদন কাজে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। রাস্তা-ঘাট বিলীন, ফসল ও সামাজিক বনায়ন বিনষ্টসহ দুই এলাকার লোকজনের সহায় সম্বল ও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। ওই এলাকার শ’ শ’ পরিবারকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ফুলছড়ি খালের বালুর মহাল ইজারা বন্ধ রাখার দাবিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয়রা।
×