ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়েমেনে সৌদি বিশেষ বাহিনী

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ৬ এপ্রিল ২০১৫

ইয়েমেনে সৌদি বিশেষ বাহিনী

সৌদি আরবের বিশেষ বাহিনী প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনের শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণ করছে। একজন সৌদি উপদেষ্টা শনিবার এ কথা বলেন। একটি সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট গত ২৬ মার্চ ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে। তবে সৌদিরা বলেছে, তাদের বর্তমানে স্থলবাহিনী মোতায়েনের কোন পরিকল্পনা নেই। অবশ্য ওই উপদেষ্টা বলেন, সৌদি সেনা ও নৌ-বিশেষ বাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে তারা বাস্তবে মাটিতে পা রেখেছে কিনা উপদেষ্টা সে কথা প্রকাশ করেননি। খবর এএফপি, ইয়াহু নিউজ ও ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের। সৌদি উপদেষ্টা এএপপিকে জানান, বিশেষ সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান বন্দর এডেনে প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদির অনুগত মিলিশিয়াদের অস্ত্রশস্ত্র ও যোগাযোগ সাজসরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। নৌ-বিশেষ বাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করার ব্যাপারে সক্ষম করে তুলতে ‘সমন্বয় ও নির্দেশনা’ সহযোগিতা দিচ্ছে। বিশেষ বাহিনী হাদির প্রতি অনুগত যোদ্ধাদের প্রতি ‘তাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখবে’ বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপদেষ্টা জানান, হাদি সৌদি আরবে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। তিনি বলেন, সেনা ও নৌ-বিশেষ বাহিনী বাবু আল মান্দার প্রণালীর মাইউন দ্বীপে আক্রমণকারী হুতি ইউনিটগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানেও জড়িত ছিল। ওই প্রণালী দিয়ে বিশ্বের সামুদ্রিক বাণিজ্য জাহাজের একটা বড় অংশ চলাচল করে। শুক্রবার জোট ঘোষণা করে যে, বিমান হামলা চালিয়ে দ্বীপের সামরিক ‘সাজসরঞ্জাম ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো’ ধ্বংস করা হয়েছে। এসব অস্ত্র জাহাজ চলাচলের জন্য হুমকির সৃষ্টি করতে পারত। ইরান ইয়েমেনে অস্ত্র সরবরাহ করেছে এই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে নাকচ করে দিয়েছে তবে একজন পশ্চিমা কূটনীতিক এএফপিকে বলেছে, ‘জাহাজযোগে অনেক মালামাল পাঠাতে দেখা গেছে।’ হুতিদের সমর্থনকারী ইরান ওই অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সুন্নিশাসিত সৌদি আরবকে দোষারোপ করেছে। সৌদি ও ইয়েমেনী কর্মকর্তারা বলেছেন, বিদ্রোহীদের কাছ থেকে কৌশলগত নগরী এডেনকে পুনর্দখল করতে লড়াইরত ইয়েমেনী সরকারের মিত্র মিলিশিয়াদের শক্তি বৃদ্ধিতে সৌদি আরব শুক্রবার বিমান থেকে অনেক বাক্সবোঝাই অস্ত্রশস্ত্র নামিয়েছে। বাক্সগুলোতে অন্যান্য সরঞ্জামের মধ্যে ছিল গোলন্দাজ বাহিনীর সরঞ্জাম, স্নাইপার রাইফেল ও বুলেটপ্রুফ পোশাক। এদিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি শনিবার জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহের জন্য ইয়েমেনে অবিলম্বে ২৪ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। রেডক্রস বলেছে, সেখানে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ইতিপূর্বে জানায়, ইয়েমেনে বিমান হামলা পরিচালনাকারী সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট এখনও ত্রাণসাহায্য ও মেডিক্যাল কর্মী বোঝাই তিনটি জাহাজ আটকিয়ে রেখেছে। মুখপাত্র সিতারা জাবিল বলেন, সবপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হচ্ছে। আইসিআরসির এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশজুড়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রচ- বিমান হামলা এবং তীব্র স্থল লড়াইয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর জন্য অন্তত ২৪ ঘণ্টার জন্য অবিলম্বে সকল আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথ খুলে দিতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে ৩ হাজার লোকের চিকিৎসা হতে পারে। এমন ৪৮ টনেরও বেশি ওষুধপত্র ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম নৌযান ও বিমানযোগে ইয়েমেনের উদ্দেশে যাত্রার জন্য প্রস্তুত আছে। এডেনে যাওয়ার জন্য রেডক্রসের ৪ সদস্যের একটি অস্ত্রোপচারকারী টিম জিবুতিতে প্রস্তুত হয়ে আছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ এবং সাজসরঞ্জামের অভাব দেখা দিয়েছে। চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে বিদেশী নাগরিকসহ ৩শ’ সাহায্যকর্মী কাজ করেছেন।
×