ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওবামার পররাষ্ট্র নীতির জন্য পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ৫ এপ্রিল ২০১৫

ওবামার পররাষ্ট্র নীতির জন্য পরীক্ষা

দায়িত্ব গ্রহণের দিন প্রেসিডেন্ট ওবামা শত্রুদের প্রতি বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করেছিলেন। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি ‘বজ্রমুষ্টি আলগা করতে চাইলে হাত বাড়িয়ে দেয়ার’ প্রস্তাব রাখেন। ছয় বছরেরও বেশি সময় পরে তাঁর দেশের সবচেয়ে একরোখা প্রতিপক্ষদের অন্যতম একটি দেশের সঙ্গে সেই প্রস্তাব পরীক্ষার মুহূর্ত এসে গেছে। বৃহস্পতিবার ইরানের সঙ্গে তিনি যে কাঠামোগত পরমাণু চুক্তিতে উপনীত হন তা ওবামার দুঃসাহসিক ঝুঁকি নেয়াটা সার্থক হবে কিনা তার কোন সুস্পষ্ট জবাব নিয়ে আসেনি। ১৯৭৯’র পর থেকে ইরান তথাকথিত ‘মহাশয়তান’ এর প্রতি যে মুষ্টিবদ্ধ হাত ঝাঁকিয়ে এসেছে তা এখনও সম্পূর্ণ আলগা হয়নি। তবে আঙ্গুলগুলো শিথিল হচ্ছে এবং সম্পাদিত চুক্তি, যা এখনও অসম্পূর্ণ, এই সম্ভাবনাও নিয়ে এসেছে যে, এটা শেষ পর্যন্ত একটা করমর্দনের রূপ নিতে পারে। বিশ্বকে নবনির্মাণের উচ্চাকাক্সক্ষায় যে প্রেসিডেন্ট বার বার হতাশ হয়েছেন, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ৩৬ বছরের বৈরিতার পর একটি মিটমাটের সম্ভাবনা এখন আর সুদূরপরাহত না হয়ে সম্ভবত নাগালের মধ্যে চলে এসেছে যা নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জনের একটি মানদণ্ড যে পুরস্কার তাঁকে আগেভাগে দেয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবুও এই চুক্তি এখনও অসমাপ্ত ও অস্বাক্ষরিত এবং সমলোচকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, শান্তির মরীচিকা ধরতে গিয়ে তিনি অতিমাত্রায় ত্যাগ স্বীকার করছেন। পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে পরমাণু আলোচনা অনুসরণ করা ইরান বিশেষজ্ঞ ক্লিফ কুপচ্যান বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাঁর পররাষ্ট্র নীতির কোন উত্তরাধিকার নেই। ইরানের সঙ্গে চুক্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যে রাজনীতির আসন্ন রূপান্তর সাধন সাম্প্রতিককালের যে কোন প্রেসিডেন্টের জন্য অন্যতম বলিষ্ঠ পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উত্তরাধিকার এনে দিতে পারে।’ ওবামা যখন রোজ গার্ডেনে পা রেখে ঐতিহাসিক সমঝোতার কথা ঘোষণা করেন তখন তাঁকে এ কথা ভেবে ভারমুক্ত মনে হচ্ছিল যে, তিনি কংগ্রেসের প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছেন। চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো ৩০ জুনের মধ্যে লিখিত আকারে রূপান্তরিত করার আবশ্যকতা থাকলেও তিনি চুক্তিকে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে উপহার দিয়েছেন যা চূড়ান্ত হলে বিশ্ব অধিকতর নিরাপদ স্থানে পরিণত হবে- যে ধরনের উত্তরাধিকার যে কোন প্রেসিডেন্ট রেখে যেতে চান। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×