ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব সম্পত্তি শাশুড়ির নামে ॥ বিধবা মা অন্যের বাড়িতে

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৪ এপ্রিল ২০১৫

সব সম্পত্তি শাশুড়ির নামে ॥ বিধবা মা অন্যের বাড়িতে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ ‘ছেলে নয় ওটা কুলাঙ্গার, এমন সন্তান যেন কারও না জন্মে’, কথাগুলো বলছিলেন বিধবা গীতা বালা। সন্তানের ঘৃণ্য কর্মকা-ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। কিন্তু কোন কিছুতে পাষ- ছেলের মন গলাতে পারেননি। বিষয়টি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্ণী গ্রামের মৃত সনাতন বালার স্ত্রী গীতা বালার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। স্বামীকে হারিয়ে বিধবা গীতা খুবই নিরুপায় হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি দেড় বছর বয়সী পুত্র সন্তান সুমনকে নিয়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে থাকেন। কোলেপিঠে করে সন্তানকে বড় করেছেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন তিনি। এমনকি স্বামী হারানোর শোক পর্যন্ত ভুলে ছিলেন সন্তানের কথা ভেবে। কিন্তু তার সব আশা-ভরসা ধূলোয় মিশে গেছে। তাঁর আদরের সুমন প্রতিবেশী এক ব্যক্তির খপ্পরে পড়ে মাকে না জানিয়ে বিয়ে করেছে ওই ব্যক্তির মেয়েকে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের খপ্পরে পড়ে নিজের পিতৃ সম্পত্তি বাস্তুভিটাসহ পুরোটাই লিখে দিয়েছে শাশুড়ির নামে। এমনকি মায়ের বসবাসের ঘরটুকু পর্যন্ত বাকি রাখেনি। এ অবস্থায় চাপের মুখে গীতা বর্তমানে ঘরবাড়ি ছেড়ে পাগলের মতো অন্যের বাড়িতে থাকছেন আর অঝোরে কাঁদছেন সারাক্ষণ। কোথায় যাবেন কার কাছে নালিশ দেবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। সন্তান আর বাস্তুভিটা দুই হারিয়ে এখন পথের ভিক্ষারি তিনি। গীতা বালার স্বজন জানান, সম্পত্তির লোভে ওই ব্যক্তি সুমনকে ফুঁসলিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন এবং তাকে ধর্মান্তরিত করেছেন। এক একর ৩৭ শতক জমি সুমনকে দিয়ে পাওয়ার অব এ্যাটার্নি করে ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর নামে লিখে নিয়েছেন এবং তাকে জামাই করেছে। বর্তমানে এ সম্পত্তির বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বলে জানান তিনি।
×