ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ এপ্রিল ২০১৫

সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লেখক-ব্লগার অভিজিত রায় ও ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান হত্যার ঘটনাকে ‘বাক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করে সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে বাংলাদেশের সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় গত ৩০ মার্চ ওয়াশিকুর রহমানের হত্যাকা- বাংলাদেশে এক মাসের মধ্যে ব্লগারদের ওপর হামলার দ্বিতীয় ঘটনা। ওয়াশিকুর ও অভিজিতের হত্যাকা- বাক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর হামলা। বাক ও চিন্তার স্বাধীনতা, বিবেক, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে এই বিবৃতিতে। মুক্তবুদ্ধির ওপর হামলাকারীদের রুখে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংস উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে সরকার, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের একযোগে কাজ করা উচিত। সমাজের জন্য সহনশীলতা ও সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মানবাধিকার বিষয়ক সার্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী বাক স্বাধীনতা মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ ওই ঘোষণা ও সনদ মেনে চলতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। দুই ব্লগার হত্যায় জড়িতদের ধরার আহ্বান জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, এসব হত্যাকা-ের জন্য দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। গত সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজের বাসার কাছে সন্ত্রাসী হামলায় খুন হন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, যিনি ধর্মীয় কুসংস্কার ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের বিরুদ্ধে লিখতেন। তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে পালানোর সময় দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় দুর্বৃত্তের চাপাতির কোপে নিহত হন লেখক-ব্লগার অভিজিত রায়। মুক্তমনা ব্লগ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিতকে হামলার সময় তার স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও আক্রান্ত হন। সোমবার ওয়াশিকুরকে হত্যার পর ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস থেকে নিন্দা জানানো হয়। এছাড়া ওই ঘটনার জন্য বিবৃতি পাঠিয়ে ইতিমধ্যেই হত্যাকা-ের তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র্র, ফ্রান্স ও জার্মান সরকারও। এসব দেশের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, এভাবে একজন মানুষকে হত্যা করার অর্থ হলো মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত। তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে। এই দেশগুলোর পক্ষ থেকে আরও বলেছে, ওয়াশিকুর রহমানের ওপর এমন আক্রমণ করে হত্যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এমন হত্যা মত প্রকাশ ও মানবাধিকারের প্রতি চরম আঘাত। এর আগে লেখক-ব্লগার অভিজিত রায় হত্যার পরেও এসব দেশগুলোর পক্ষ থেকে দোষীদের বিচার চেয়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছিল।
×