স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ভেজালের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মতো এমন শক্ত আইন আর কোথাও নেই। কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে তা প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। তবে সরকার খাদ্য নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সরকারী উদ্যোগে খাদ্যজনিত রোগের নজরদারি, ল্যাবরেটরি নেটওয়ার্কিংসহ স্যানিটারি পরিদর্শন জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে অত্যাধুনিক ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি নির্মাণ করা হয়েছে।
রবিবার রাজধানীর মহাখালীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অষ্টম আন্তর্জাতিক ‘ওয়ান হেলথ’ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত রোগ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো কিভাবে একত্রে কাজ করবে, এবারের তিন দিনব্যাপী ‘ওয়ান হেলথ’ সম্মেলনে সে বিষয়টি আলোচিত হবে। স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উ™ে^াধনী অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সচিব ড. সেলিনা আফরোজা, বন ও পরিবেশ সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ মোঃ শাহনেওয়াজ, আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদুর রহমান, বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডাঃ এন পারানিথারানসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা ও দাতাসংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভেজালের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। আইন করেছি। আমাদের দেশের মতো শক্ত আইন অন্য কোথাও নেই। আইন যারা প্রয়োগ করবে তাদের কারও সঙ্গে কারও সমন্বয় নেই। আমি মন্ত্রী ওয়ান হেলথের অনুষ্ঠানে বসে আছি। অথচ খাদ্য ও কৃষি সচিব নেই। তাঁদেরও আসতে হবে। মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কাজের কোন সমন্বয় নেইÑএমন অভিযোগ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মাঠ পর্যায়ে খাদ্য পরিদর্শক আছেন, স্যানিটেশন পরিদর্শক আছেন। তাঁরা বেতন পান, কিন্তু কাজ করেন না। থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ে কী কাজ হচ্ছে, জেলা পর্যায় তা দেখে না। কেউই কোন কাজ করেন না। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা পর্যায়ে কী হচ্ছে জেলা কর্মকর্তাদের তার খোঁজ রাখতে হবে। দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের অধীনস্থদের কাজের খোঁজখবর নিতে হবে। যারা কাজের সমন্বয় করতে পারবেন না তাদের বাদ দেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বহুপাক্ষিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এর ফলে এদেশে ও প্রতিবেশী দেশসমূহে তথা গোটা বিশ্বে প্রাণীবাহিত রোগের অব্যাহত প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হবে।
এ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা, এ্যানথ্রাক্স, রেবিস, নিপা ভাইরাসের মতো অনেক সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য সত্ত্বে স্বাস্থ্যগত জরুরী সঙ্কট পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম জনশক্তির অপ্রতুলতা, নব আবির্ভূত রোগের হুমকি ও মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা, টেকসই প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততা আমাদের অগ্রযাত্রাকে বেশি দূর যেতে দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন মোহাম্মদ নাসিম। এ সকল সমস্যা মোকাবেলায় অভিনব এবং যথাযথ পন্থা উদ্ভাবনের জন্য বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।