ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুদক সরকারের কোন আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান নয় ॥ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ৩০ মার্চ ২০১৫

দুদক সরকারের কোন আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান নয় ॥ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এটি সরকারের আজ্ঞাবহ কোন প্রতিষ্ঠান নয়। এমনকি বর্তমান কমিশন আজ পর্যন্ত কোন কাজে সরকারের আজ্ঞাবহতা প্রকাশ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। রবিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে দুদক মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড-২০১৫ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুদক কমিশনার বলেন, দুদক হচ্ছে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ একটি প্রতিষ্ঠান। দুদক কোন কর্মকা-ে আমরা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করি না। বিরোধী দলের বিরোধী রাজনৈতিক মতবাদের ব্যক্তিরা সব সময় দুদকের সমালোচনা করেন। দুদককে খারাপ প্রমাণ করতে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দুদকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে অর্থ ব্যয় করা হয়। সাধারণ জনগণের কাছে অনেক সময় দুদক খারাপ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পায়। ফলে ভাল কাজ করলেও তাদের ওই সমালোচনা আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। আমরা এখন শুধু জনগণের ধারণা পাল্টাতে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকারের জন্যই দুদক আরও বেশি কাজ করতে পারছে। যদি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার না থাকত, তাহলে আমরা সরকারের উপদেষ্টা-মন্ত্রী-এমপিকে দুদকের বারান্দায় আনতে পারতাম না। বর্তমান সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকারের ফলেই তাদের সারাদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়েছে। এর আগের সরকার কখনও তা করতে সম্ভব হয়নি। চরম মিথ্যা তথ্যকে সত্য হিসেবে প্রচার করলে দেশের ক্ষতি হয় এর উদাহরণ হিসেবে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি বিষয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর তথাকথিত দুর্নীতির বিষয়ে আমি বলব, যারা এ দুর্নীতির কথা আমাদের বলেছিলেন, তারা ভুল বলেছেন। যারা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন তারা আমাদের বলেছেন, টেন্ডারে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। এছাড়া কানাডা থেকে আমরা ১৮ ভলিউম তথ্য নিয়ে এসেছি। ওই দেশে যারা সাক্ষী দিয়েছিলেন তাদের সাক্ষ্য আমরা নিয়ে এসেছি। কোন কিছুতেই দুর্নীতির কোন ছোঁয়া নেই। এমনকি বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নিয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো তাদের বক্তব্যে বলেছে যে পদ্মা সেতু নিয়ে কোন দুর্নীতি হয়নি। তাহলে কেন পদ্মা সেতু নিয়ে মিডিয়ায় এত প্রচার করা হলো। পদ্মা সেতুর জন্য কোন অর্থই যেখানে ছাড় করা হয়নি সেখানে মন্ত্রী-এমপিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে মিথ্যা ছড়ানো হলো যে দুর্নীতি করা হচ্ছে। এমন আজগুবি ভিত্তিহীন কথার ওপর সাংবাদিকদেরও সচেতন হতে হবে। সাংবাদিকদের মিথ্যা বিবর্জিত সঠিক সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবাদের মানোন্নয়নের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা নিতে হবে। অনুসন্ধানী ও সৃজনশীল প্রতিবেদনে আমাদের আরও বেশি আগ্রহী হতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন কতটুকু হয়েছে তা জনগণই বলতে পারবে। তবে আমরা বেশকিছু কাজ করে যাচ্ছি যাতে দুদকের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বাড়ে। দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুদক মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড-২০১৫ এর বিচারক দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহ আলমগীর এবং বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আহসান বুলবুলসহ দুদকের উর্ধতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, দুদকের সংবাদ তৈরির ক্ষেত্রে অন্যান্য সংবাদের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। কারণ দুদকের একটি রিপোর্ট একজনের সম্মানহানি করতে যথেষ্ট। একই সঙ্গে দুদকের রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহের চতুর্থ দিন নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। দুদক মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রদান ছাড়াও সকালে দুদক কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। এতে দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ যোগ দেয়।
×