ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চগড়ে চা চাষ এখন লাভজনক

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৭ মার্চ ২০১৫

পঞ্চগড়ে চা চাষ এখন লাভজনক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পার্বত্য অঞ্চল ও সিলেটের পর দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পঞ্চগড়। সমতল ভূমিতে চা চাষে নীরবে বিপ্লব ঘটিয়েছে। চায়ের মান আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় ইতোমধ্যে পঞ্চগড়ের চা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে। খুব বেশি দিনের কথা নয়। পঞ্চগড় জেলার সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলার কয়েক হাজার জমি পতিত পড়ে থাকত। ব্যবহৃত হতো গোচারণ ভূমি হিসেবে। সেই পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে এখন উন্নতমানের চা। একবার চায়ের চারা রোপণ করে ৩০ বছর ধরে এর সুফল পাওয়া যাবে। চাষীরা অন্যান্য আবাদ না করে চা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। পঞ্চগড় জেলার ৩ উপজেলায় চা আবাদযোগ্য ৪০ হাজার একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে এ জেলায় চা চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৪শ’ একর জমিতে। দিন দিন বাড়ছে চা চাষের পরিধি। এই চা প্রক্রিয়াজাত করতে বেসরকারীভাবে ছয়টি ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হয়েছে। ফ্যাক্টরি মালিকরা সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে চা পাতা ক্রয় করায় নগদ অর্থ পাচ্ছেন চাষীরা। স্থানীয় চা বোর্ড ক্ষুদ্র চা চাষী ও বাগান মালিকদের ব্যাংক ঋণ, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সার্বিক সহযোগিতা করায় চাষীরা চা চাষে আস্থা পেয়েছে। এছাড়া চা বোর্ডের ‘স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর টি ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ ভিশন-২০২১’ প্রকল্প গ্রহণ করায় চাষীদের চা উৎপাদনের আগ্রহ বেড়েছে। সোনাপাতিলা গ্রামের স্মলহোল্ডার মতিয়ার রহমান বলেন, দুই একর থেকে বর্তমানে ৫০ একর জমিতে চা আবাদ করছি। ভবিষ্যতে চা চাষের পরিধি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চা চাষ অনেক লাভজনক ফসল। একই কথা বললেন ক্ষুদ্র চা চাষী নোমান ও বাবুল মাস্টারÑ চা চাষ লাভজনক হওয়া আমরা চা চাষ আরও সম্প্রসারণ করেছি। তেঁতুলিয়া চা বাগানের মালিক আব্দুর রহমান বলেন, চা চাষ করে লাভবান হওয়ায় আরও জমিতে চা চাষ সম্প্রসারণ করছি। আর চা পাতা বিক্রি করতে কোন সমস্যা নেই। ফ্যাক্টরি মালিকরা নগদ টাকা দিয়ে পাতা কিনছে। পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের সহকারী উন্নয়ন কর্মকর্তা জায়েদ ইমাম সিদ্দিকী জানান, জেলায় ২০টি টি এস্টেট, ১৫টি মাঝারি ও ৫শ’ ক্ষুদ্র চা বাগান মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৪শ’ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। এসব বাগান থেকে ২০১৪ সালে ১৪ লাখ ২০ হাজার ৭৬৭ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। তিনি বলেন, চা চাষ লাভজনক হওয়ায় চা চাষের দিকে চাষীরা ঝুঁকে পড়ছে। চলতি বছর প্রায় ১৬ লাখ কেজি চা উৎপাদনের আশা প্রকাশ করেছেন এই কর্মকর্তা।
×