ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ জয়ের মন্ত্র জানেন ধোনি!

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৫ মার্চ ২০১৫

বিশ্বকাপ জয়ের মন্ত্র জানেন ধোনি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মহেন্দ্র সিং ধোনি মানেই যেন ‘সৌভাগ্যের প্রতীক।’ রাহুল দ্রাবিড়ের হাত ঘুরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব কব্জা করার পর থেকেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন ৩৩ বছর বয়সী এই সাহসী সৈনিক। তরুণ বয়সে ভারতের মতো ক্রিকেট দলের নেতৃত্বভার গ্রহণ করার পরও তাকে বিন্দু পরিমাণ বিচলিত হতে দেখা যায়নি। বরং ভারতীয় ক্রিকেটকে উপহার দিয়ে চলেছেন একের পর এক তাক লাগানো সাফল্য। বলাইবাহুল্য এক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আগে থাকবে ২০১১ সালের এপ্রিলে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ভারতকে বিশ্বকাপের ট্রফি এনে দেয়া। শুধু জাতীয় দলেই নয়, এর বাইরেও যেন ধোনির স্পর্শে সব কিছু সোনায় পরিণত হয়েছে। বিষয়টি এমন হয়ে গেছে, ধোনি আর শিরোপা যেন সমার্থক শব্দ। এ জন্য রাচির উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই সৌভাগ্যবান অধিনায়ক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। যার প্রমাণ তিনি আরও একবার রেখে চলেছেন চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বুনছে ভারত। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমির লড়াইয়ের আগে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছেন, কিভাবে বিশ্বকাপ জয় করতে হয় তা জানা আছে ধোনির। ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির সব আসরেই ভারতকে শিরোপা উপহার দিয়েছেন ধোনি। শুধু তাই নয়, ঘরোয়া আসরেও ধোনির নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য চেন্নাই সুপার কিংস। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে টানা দুইবার চেন্নাই শিরোপা জয় করে ধোনির নেতৃত্বে। শুধু তাই নয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও একই সাফল্য ধরা দেয়। আইপিএল ও চেন্নাইয়ের সাফল্য যেন সমার্থকে পরিণত হয়েছে। ২০০৮ সালে স্বল্প ঘরানার ধুমধাড়াক্কা এ আয়োজনের যাত্রা শুরুর পর থেকেই দলটি ধারাবাহিকভাবে অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। প্রথম আসরেই ধোনির নেতৃত্ব চেন্নাই পৌঁছে গিয়েছিল শিরোপার দাঁড়প্রান্তে। ফাইনাল ম্যাচে ১৬৩ রান করেও ইউসুফ পাঠান ঝড়ে শেন ওয়াটসনের রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ জিতে নিয়েছিল ৩ উইকেটে। ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইপিএলের দ্বিতীয় আসরেও শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই সুপার কিংস। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সেবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের কাছে চেন্নাই হার মেনেছিল ৬ উইকেটে। প্রথম দুই আসরে তীরে এসে তরী ডোবানো চেন্নাই পরের দুই আসরটা শতভাগ নিজের করে নিয়েছে। ২০১০ সালে তৃতীয় আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে নিজেদর প্রথম আইপিএল শিরোপা জয়ের পর ২০১১ সালে ব্যাঙ্গালোরকে হারিয়ে জিতে নেয় টানা দ্বিতীয় শিরোপা। চেন্নাইয়ের এমন স্বর্ণসাফল্যের পুরোধা নিঃসন্দেহে মহেন্দ্র সিং ধোনি। দৃঢ় মানসিকতা ও সাহসের অধিকারী ধোনি সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। শুধু আইপিএলে চেন্নাইকে সাফল্যে ভাসাননি ধোনি, ভারতীয় দলকেও এনে দিয়েছেন স্বর্ণসাফল্য। যে কারণে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অধিনায়কের তকমা পেয়ে গেছেন। এবারের বিশ্বকাপেও ধোনির নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য ছন্দে ভারত। গ্রুপ পর্বে ছয় ম্যাচই জিতেছে তারা। কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিতে উঠেছে। এখন অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলেই কাক্সিক্ষত ফাইনাল মহারণ। এ প্রসঙ্গে ভন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া-ভারত ম্যাচটি হবে ফিফটি ফিফটি। যারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে তারাই জয় পাবে। তবে ধোনির মতো সুযোগ্য অধিনায়ক থাকায় ভারত কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে বলে মনে করছেন ভন। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ধোনির মানসিক দক্ষতা অসাধারণ। যে কোন পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে সে সিদ্ধহস্ত। সে জানে চাপ সামলে কিভাবে সাফল্য পেতে হয়। তার বিশ্বকাপ জয়ের মন্ত্র জানা আছে। ১৯৮১ সালের ৭ জুলাই ভারতের বিহারের ঝাড়খ-ের রানচিতে জন্মগ্রহণ করেন ধোনি। রাহুল দ্রাবিড়ের হাত ঘুরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকেই দলকে তিনি স্বর্ণসাফল্যে ভাসিয়ে চলেছেন। তার নেতৃত্বে ভারত টি২০ বিশ্বকাপসহ ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রতিটি ঘরানায় তাক লাগানো সাফল্য পেয়ে চলেছে ভারত। তার স্পর্শে সবকিছুই যেন পরশ পাথরে পরিণত হচ্ছে! ২০০৭ সালে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ক্রিকেটবিশ্বে ধোনিই সফলতম অধিনায়ক।
×