ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশাত্মবোধের বহুমাত্রিক পরিবেশনায় উদ্দীপ্ত স্বাধীনতা উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৫ মার্চ ২০১৫

দেশাত্মবোধের বহুমাত্রিক পরিবেশনায় উদ্দীপ্ত স্বাধীনতা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার দোলায়িত ছন্দে উপস্থাপিত হলো একাত্তরের সংগ্রামমুখর দিনগুলো। গানের সুরে সুরে ভেসে বেড়ালো এই দেশ এবং মাটি ও মানুষের কথা। নৃত্যের মুদ্রায় প্রকাশিত হলো অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের জেগে ওঠার বার্তা। দেশাত্মবোধের আলোয় উজ্জীবিত এমন বহুমাত্রিক পরিবেশনার দেখা মিললো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে। বিকেল থেকে রাত অবধি নাচ-গান, কবিতা ও পথনাটকের রকমারি আয়োজন ছিল এখানে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও স্বাধীনতা উৎসবের সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালার তৃতীয় দিন ছিল মঙ্গলবার। এদিনের বৈকালিক আয়োজনের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মহাব্যবস্থাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উল আলম। এরপর কবিতার ছন্দে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তোমরা সবাই ফিরে এসো শীর্ষক আবৃত্তি প্রযোজনা নিয়ে মঞ্চে আসে চারুকণ্ঠের বাকশিল্পীরা। নিরঞ্জন অধিকারীর গ্রন্থনা ও জি এম মোর্শেদের নির্দশিত প্রযোজনাটিতে উঠে একাত্তরের যুদ্ধদিনের কথা। উচ্চারিত হয় যুদ্ধোত্তর স্বদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নমাখা কাব্যকথা। এছাড়াও দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে আবৃত্তি সংসদ। প্রতিদিনের এদিনের অনুষ্ঠানেরও অংশ নেয় রাজধানীর দুটি শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীরা। নৃত্য-গীতে সাজানো ছিল উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে সমবেত কণ্ঠে তারা গেয়ে শোনায় এই বাংলার হৃদয়জুড়ে তুমি রবে চিরদিন/ তোমার স্মৃতি কোনদিন ভুলবে না বঙালী। পরের গানটির শিরোনাম ছিল পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল/বাঁধন ছেঁড়ার হয়েছে কাল হয়েছে কাল। একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার/সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার গানের সুরে চমৎকার নৃত্য পরিবেশন করে শিক্ষালয়টির দুই শিক্ষার্থী। একইভাবে দেশাত্মবোধের চেতনা জাগানিয়া নাচ ও গানের পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসে আগারগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনায় মাঝি নাও ছাইড়া দেরে মাঝি পাল উড়াইয়া দে। এরপর জেগে ওঠো বাংলাদেশ গানের সুরে পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেয় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী ও স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র। ঋষিজের শিল্পীরা পরিবেশন করে দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, ভয় নেই কোন ভয় নেই জয় বাংলার জয় ও ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে শীর্ষক তিনটি সঙ্গীত। একক কণ্ঠে গান শোনান বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি। সব শেষে ছিল অপেরা নাট্যদলের পথনাটকের পরিবেশনা। উপস্থাপিত হয় মান্নান হীরা রচিত নাটক বউ। আজ বুধবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্বাধীনতা উৎসবের চতুর্থ দিন। এদিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে যথারীতি বিকেল পাঁচটায়। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করবে স্বনন ও মুক্তবাক। থাকবে ছায়ানটের শিল্পীদের দলীয় সঙ্গীত। নৃত্য-গীতের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে বধ্যভূমির সন্তানদল ও মাতুয়াইল সঙ্গীত একাডেমি। পথনাটক প্রদর্শনীতে অংশ নেবে লোকনাট্য দল (বনানী)। এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কালরাত্রী স্মরণে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে। শেষ হলো নজরুল নাট্যোৎসব ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৫টি নাটক নিয়ে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হলো নজরুল নাট্যোৎসব। তিন দিনব্যাপী উৎসবের শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মঞ্চস্থ হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ‘রতি আরতির কাব্য’। আর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হয় প্রাঙ্গণেমোরের নাটক ‘দ্রোহ প্রেম নারী’ মঞ্চস্থ হবে। শিল্পকলা একাডেমির স্বাধীনতা দিবসের আয়োজন ॥ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় আজ বুধবার ও কাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় একাডেমির নন্দন মঞ্চে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
×