ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ সেরা ১২ মেধাবী শিক্ষার্থীর ৯ জনই রাজধানীর বাইরের

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৪ মার্চ ২০১৫

দেশ সেরা ১২ মেধাবী শিক্ষার্থীর ৯ জনই রাজধানীর বাইরের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা তৃতীয়বারের মতো সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশ সেরা ১২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বাছাই করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশ সেরা মেধাবীদের তালিকায় স্থান করে নেয়া ৯ জনই ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থী। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম, নবম থেকে দশম ও উচ্চ মাধ্যমিক এই তিন বিভাগে চারটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ১২ জন। বিষয় চারটি হলো ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ। ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের ভাল করায় সন্তোষ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রতিযোগিতার ফলাফলই প্রমাণ করে গ্রাম থেকেও শিক্ষার্থীরা উঠে আসছে। শহর ও গ্রামে শিক্ষার বৈষম্য নিরসন এবং অবহেলা-অনাদরে বেড়ে ওঠা প্রতিভাকে খুঁজে বের করে বিকশিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ২০১৩ সাল থেকে। সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ নীতিমালায় বলা হয়েছে, নীতিমালার আলোকে প্রতি বছর তৃণমূল থেকে বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘অসাধারণ’ মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। মেধা অন্বেষণ করে তাদের জাতীয়ভাবে ‘জাতীয় মেধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং উৎসাহ প্রদানে এককালীন দেয়া হবে বিশেষ বৃত্তি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয় এজন্য জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা শেষ করার কথাও আছে নীতিমালায়। সে আলোকেই রাজধানীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে গত শনিবার জাতীয় পর্যায়ে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষামন্ত্রী এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সাতটি বিভাগ ও ঢাকা মহানগরী থেকে নির্বাচিত ৯৬ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এ বছর ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে সিলেটের মৌলভীবাজারের দি ফ্লাওয়ার্স কেজি এ্যান্ড হাইস্কুলের ইবনুল মুহতাদি শাহ (ষষ্ঠ-অষ্টম), দিনাজপুর জিলা স্কুলের শাকিল রেজা ইফতি (নবম-দশম) এবং রাজশাহী কলেজের আনিকা বুশরা (একাদশ-দ্বাদশ) দেশ সেরা হয়েছে। দৈনদিন বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান বিভাগে দেশসেরা হয়েছে সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসতিয়াক মাহমুদ সিয়াম (ষষ্ঠ-অষ্টম), খুলনা জিলা স্কুলের সাদমান নাসিফ (নবম-দশম) এবং সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজের জয়ন্ত পাল (একাদশ-দ্বাদশ)। গণিত ও কম্পিউটার শিক্ষা বিভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের রুবাইয়াত জালাল (ষষ্ঠ-অষ্টম), ঢাকার সেন্ট যোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়ের তানযীম আজওয়াদ জামান (নবম-দশম) এবং যশোরের নওয়াপাড়া কলেজের শাকিল আহমেদ (একাদশ-দ্বাদশ) দেশসেরা হয়েছে। আর বাংলাদেশ স্টাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে দেশসেরা হয়েছে হবিগঞ্জের বিকেজিসি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শেখ খাতুনে জান্নাত শামীমা (ষষ্ঠ-অষ্টম), ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের ইশমাম তাসনিম (নবম-দশম) এবং ঢাকার হলিক্রস কলেজের রাইদা করিম (একাদশ-দ্বাদশ)। দেশ সেরা ১২ শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের হাতে সনদসহ এক লাখ টাকা করে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এই অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এই প্রতিযোগিতা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল হুদা বলেছেন, এই প্রতিযোগিতার ফলই প্রমাণ করে গ্রাম থেকেও শিক্ষার্থীরা উঠে আসছে। এটা মফস্বলের অন্য শিক্ষার্থীদেরও অনুপ্রাণিত করবে। শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা খুঁজতে গত ১ মার্চ থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো শুরু হয়েছিল ‘সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা। ২০১৩ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপজেলা পর্যায়ে সেরা ১২ জনের সবাইকে এক হাজার টাকা করে দেয়া হবে। জেলা পর্যায়ে সেরা ১২ জনের প্রত্যেকে দেড় হাজার টাকা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা ১২ জন প্রত্যেকে দুই হাজার টাকা করে পুরস্কার ও সনদ পাবে। স্কুল-কলেজে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের পরিকল্পনা ॥ ইউনিসেফের এক জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে পাঁচ থেকে ১৭ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জন এবং বছরে ১৮ হাজারের বেশি সাঁতার না জানায় ডুবে মারা যায়। বিষয়টিকে মাথায় রেখে সরকার দেশের সকল উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সমমানের মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার হাত থেকে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতেই সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের এ পরিকল্পনা। এ লক্ষ্যে খসড়া একটি পরিপত্র তৈরি করে মতামত নিতে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (িি.িসড়বফঁ.মড়া.নফ) প্রকাশ করা হয়েছে। মতামত পাওয়ার পর তার পর্যালোচনা করে পরিপত্র জারি করা হবে। খসড়ায় শিক্ষার্থীদের সাঁতার অনুশীলনে যেসব পুকুর ও জলাশয় ব্যবহার করা হবে সেগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মত এবং সাঁতার উপযোগী করার কথা বলা হয়েছে। কোন স্কুল-কলেজে পুকুর না থাকলে পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুকুর ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এসব পুকুর সংস্কার করবে। এ নিয়ে কোন সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমাধান করবেন। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি দেশীয় প্রচলিত সরঞ্জাম ব্যবহার করেও শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখানো যাবে। সাঁতার শেখানোর সময় শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক অথবা সাঁতার প্রশিক্ষককে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। ছেলে ও মেয়েদের সাঁতার অনুশীলনের আলাদা সময় নির্ধারণ করতে হবে।
×