ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিটি নির্বাচন বিএনপির জন্য এক্সিট পয়েন্ট ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৩ মার্চ ২০১৫

সিটি নির্বাচন বিএনপির জন্য এক্সিট পয়েন্ট ॥ তোফায়েল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির জন্য এক্সিট পয়েন্ট বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচন অবরোধ-হরতালের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও জঙ্গী তৎপরতার মতো কর্মসূচী থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সংসদ নির্বাচন বয়কটকারী বিএনপি এ সুযোগ নিয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে বলেও আশা করছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য। রবিবার সচিবালয়ে ভিয়েতনামের বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক ভাইস-মিনিস্টার হোয়াং কুয়ক ভুয়ংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাত করতে এলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তোফায়েল আহমেদ। এদিকে আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে বিএনপি থেকে আভাস এসেছে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সব দল নির্বাচনে অংশ নিক সে লক্ষ্য নিয়েই নির্বাচন দেয়া হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলেই তাঁরা আশা করছেন। বিএনপিকে কি এক্সিট পয়েন্ট দেবেন না সবাই এমন প্রশ্ন করে উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যারা করে, নাশকতা যারা করে, জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সঙ্গে সংলাপ হয় না। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনই হোক বিএনপির জন্য এক্সিট পয়েন্ট। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, আর নাশকতামূলক কার্যক্রম প্রত্যাহার করে নিক। দীর্ঘ আড়াই মাস পর বিএনপি সুযোগ পেয়েছে ঘরে ফিরে যাওয়ার। আড়াই মাস ধরে অবরোধ-হরতালে নাশকতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুতে সমালোচনার মধ্যে রয়েছে বিএনপি। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসী, নাশকতা ও জঙ্গী কার্যক্রম দেশের মানুষ গ্রহণ করে না বলেই হরতালের সময় যানজট হয়। অবরোধেও ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে গাড়ি আটকে থাকে। এর মানে বিএনপির তথাকথিত কর্মসূচী মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তারা তো রাস্তায় নেই। ফলে হরতাল-অবরোধেও ট্রাফিক জ্যাম হয়। এখন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছেড়ে নির্বাচনে না এলে বিএনপিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করবে। আর সরকার সব রকম সহায়তা দেবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না করে বিএনপি যে ধাক্কা খেয়েছে, তারা এখন সব নির্বাচনেই আসবে। বিএনপি নেতাদের গত কয়েক দিনের কথা শুনে মনে হয়েছে, তারা নির্বাচনে আসবে। এখন না বললেও ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার অধীনেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। ভিয়েতনামের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তোফায়েল বলেন, বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে দেশটি বিনিয়োগ করতে চেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ওষুধ নিতে আগ্রহী দেশটি। কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে ভিয়েতনামকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গা করে দেয়া হবে। এছাড়া তারা ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য আমদানি করবে। আমাদের ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য ভাল করছে। বর্তমানে ৯০ দেশে ওষুধ রফতানি করা হচ্ছে। এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রেও রফতানি হবে। এ মুহূর্তে ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। সেখানে ওষুধসহ অন্যান্য পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পেলে আর বাণিজ্য ঘাটতি থাকবে না। প্রসঙ্গত, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভিয়েতনামে রফতানি হয়েছে ৫৫ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করা হয়েছে ৫৮২ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। এ সময়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৫২৬ দশমিক ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
×