ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নীলফামারীর গোলাহাট

বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ অর্থ সঙ্কটে বন্ধ

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ২৩ মার্চ ২০১৫

বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ অর্থ  সঙ্কটে বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ আর্থিক সঙ্কটের কবলে পড়ে নীলফামারীর সৈয়দপুরের গোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ থমকে গেছে। বিভিন্ন জনের সহায়তায় এটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছিল গত বছরের ১৩ জুন। উদ্যোক্তাদের ইচ্ছে ছিল চলতি বছরের ২৬ মার্চ এ স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালিতে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৩ জুন সৈয়দপুর শহরের ৩৩৮ মাড়োয়ারী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। জনশ্রুতি রয়েছে পাকিস্তানী বাহিনীর দোসর অবাঙালীরা (উর্দুভাষী) ওই সমস্ত পরিবারকে নীলফামারীর চিলাহাটি চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো করে। পরে তাদের একটি বিশেষ ট্রেনে তুলে দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়া হয়। রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ওই বিশেষ ট্রেনটি গোলাহাটে থামিয়ে পাকিস্তানী বাহিনীর দোসর রাজাকার আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা নারী, পুরুষ ও শিশুদের ধারালো অস্ত্র ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যায় কাল্টু দাস। ওই হত্যাযজ্ঞের নির্মমতার স্মৃতি আজও তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। গত বছর ১৩ জুন গোলাহাট বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয়। এজন্য ব্যয় ধরা হয় এক কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ তদারকি করতে গঠন করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। সেখানে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ও হয়েছে। সূত্র মতে, স্থানীয় লোকজন যে, যেভাবে পেরেছেন নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়া আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় হুইপ আলহাজ শওকত আলী তার বিশেষ বরাদ্দ থেকে ৮ টন চাল ও ২ টন গম ও নগদ আট হাজার টাকা প্রদান করেন। তবে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে সরকারী সহায়তা মেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে দেশ বিজয়ের ৪২ বছর পর শুরু হওয়া গোলাহাট বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ আতুর ঘরেই বন্ধ হতে চলেছে।
×