ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাশিয়ায় ফের চিংড়ি রফতানি শুরু

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৮ মার্চ ২০১৫

রাশিয়ায় ফের চিংড়ি রফতানি শুরু

জসিম উদ্দিন ॥ তিন মাস বন্ধ থাকার পর রাশিয়ার বাজারে আবার রফতানি শুরু হলো ‘হোয়াইট গোল্ড’ খ্যাত বাংলাদেশের চিংড়ি। তবে, চলতি মাসে শুরু হওয়া এই চালান একেবারে সামান্য। চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান ১৮ হাজার ৫০ কেজি চিংড়ির একটি চালান পাঠায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ ৫৮৫ ডলার। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) তথ্য, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাশিয়ায় কোন চিড়িং রফতানি হয়নি। যদিও বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানির ৫ শতাংশের বাজার এই দেশ। বিএফএফইএ সূত্র জানায়, ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ কারণে মার্কিন মুদ্রা ডলার ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুদ্রা ইউরোর বিপরীতে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের অব্যাহত দরপতন হয়। ফলে বিলাস সামগ্রী আমদানি বন্ধ রাখে দেশটি। এ কারণে গত তিন মাস যাবত বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানিও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে চট্টগ্রামের আর্ক সী ফুড ১৮ হাজার ৫০ কেজি চিংড়ির একটি চালান পাঠায়। এতে করে ওই বাজারে আবারও বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানি শুরু হয়। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি এসএম আমজাদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, কোনভাবেই আমরা রাশিয়ার বাজার হারাতে চাই না। সমঝোতার মাধ্যমে কিছুটা কম মূল্যেও আমরা চিংড়ি রফতানি করতে চাই। সে চেষ্টা অব্যাহত। এছাড়া একটু একটু করে রাশিয়ান মুদ্রার দাম বাড়ছে, আবার পুরোদমে ফিরে পাব বলে আমরা আশাবাদী। বাংলাদেশের চিংড়ি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান লকপুর গ্রুপের উপনির্বাহী পরিচালক খান হাবীবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, রাশিয়ার মুদ্রার দরপতনের ফলে বিলাস সামগ্রী আমদানি বন্ধ করে দেশটি। তাই আমাদের চিংড়ি রফতানিও বন্ধ হয়ে পড়ে। এছাড়া বেনামি চিংড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশের চিংড়ি টিকে থাকতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক টাইগার’ নামে পরিচিত বাংলাদেশের চিংড়ির দাম ভিয়েতনাম ও ভারতীয় চিংড়ির তুলনায় বেশ চড়া বলে ক্রেতারা তখন ভিয়েতনাম ও ভারতীয় চিংড়ির দিকে ঝুঁকে পড়ে। খান হাবীবুর রহমান বলেন, মুদ্রার দরপতনের পর রাশিয়ান ক্রেতারা তাদের আট কন্টেনার রফতানি আদেশ বাতিল করে। আমরা জানি না পুনরায় এই রফতানি আদেশের পণ্য জাহাজীকরণ হবে কিনা। এদিকে বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নবেম্বর মাসে বাংলাদেশ রাশিয়ায় ১৮ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চিংড়ি রফতানি করে। তবে, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই দেশে কোন চিংড়ি রফতানি হয়নি বলে ইপিবি তথ্যেও প্রমাণ মেলে। এর আগের অর্থবছরে (২০১৩-১৪) বাংলাদেশ রাশিয়ায় ১৯ দশমিক ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চিংড়ি রফতানি করে, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ২৭ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এদিকে চলতি অর্থবছরে চিংড়ি রফতানি খাত থেকে বাংলাদেশের মোট আয় হয় ৩৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এর আগের অর্থবছর (২০১৩-১৪) ছিল ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর ২০১২-১৩ অর্থবছরে এই খাত থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় ছিল ৪৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
×