ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সৈয়দপুরের ৭২ অবৈধ দখলকারীর বিরুদ্ধে উকিল নোটিস

রেলের জমিতে বহুতল ভবন

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৫ মার্চ ২০১৫

রেলের জমিতে বহুতল ভবন

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ প্রকাশ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে একাধিক বহুতল ভবন। স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ দখলদারদের সামলাতে পারছেন না। ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী ডিভিশনের হস্তক্ষেপে সৈয়দপুর থানায় দুই দফায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৭২ জন অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে উকিল নোটিস দেয়া হয়। মামলা বা উকিল নোটিস দেয়া হলেও থামেনি ভবন নির্মাণ। এ নিয়েও রেলওয়ের সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন সূত্র জানায় চলতি বছরের গত ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি রাতে দু’দফায় সৈয়দপুর রেলওয়ের জমিতে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠা কাপড় মার্কেটে মসলা ও মনিহারী পট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছিল। এতে প্রায় দেড় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা। এই অগ্নিকা-ের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লিয়াকত আলীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন এখন প্রকাশ পায়নি। অভিযোগ উঠেছে, অগ্নিকা-ে ওই দুই মার্কেটের আধাকাঁচা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা এই অগ্নিকা-কে আশীর্বাদ হিসাবে পেয়ে দিনে-রাতে বাঁধাহীনভাবে রেলওয়ের ওই জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণে মেতে উঠেছে। শুধু যে তারাই তা নয়। এর সঙ্গে যোগ হয়ে এই সুযোগে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও (যাদের দোকান আগুনে পুড়ে যায়নি) তারাও দোকানপাট ভেঙ্গে ফেলে স্থায়ীভাবে বহুতল পাকা ভবন স্থাপনা নির্মাণে নেমে পড়ে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দুই দফায় সেই অগ্নিকা-কে ঘিরেও। অপরদিকে রেলওয়ের ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী ৭০ জনের বিরুদ্ধে দুই দফায় সৈয়দপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন রেলওয়ের পার্বতীপুরের কানুনগো মনোয়ারুল ইসলাম। গত ৯ মার্চ থেকে ১২ মার্চ এই মামলাগুলো দায়ের করা হয় বলে জানা গেছে। সৈয়দপুর শহরে বর্তমানে শত-শত অবৈধভাবে রেলওয়ের জায়গায় বিল্ডিং নির্মাণের কাজ চলছে। রেলওয়ের আইনজীবী রাফিউল ইসলাম খাজা জানান, এ ব্যাপারে স্থানীয় পৌরসভার বিরুদ্ধে আদালত থেকে নকশা না দেয়ার জন্যেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরেও যত্রতত্র রাস্তার উপরে পৌরসভার নিয়ম কোড ভঙ্গ করে দখল বাণিজ্য চলছে। তিনি আরও বলেন, অন্য ১৭/৯নং মামলায় জজকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বিল্ডিং নির্মাণ না করার বিষয়ে। নিষেধাজ্ঞার আদেশ উচ্চতর আদালতও বহাল রেখেছেন। তাই, বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখার জন্য ৭২ জনকে উকিল নোটিস করা হয়েছে। বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে রেলে জমি তারা ছেড়ে না দিলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হবে। এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে রেলওয়ের পার্বতীপুর কানুনগো মনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দখলের ঘটনায় আরও অনেকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার তত্ত্বাবধায়ক (ডি.এস) নূর আহমেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন বর্তমানে সৈয়দপুর রেলকারখানার এই জমি দেখাশোনার দায়িত্ব এস্টেট বিভাগ, পাকশীর। এরপরেও কারখানার পক্ষ থেকে আমি রেলওয়ে মন্ত্রী ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করেছি। সৈয়দপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন মামলার বিষয়গুলো তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশ চাওয়া হয়েছে।
×