ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিল্পকলায় বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১৩ মার্চ ২০১৫

শিল্পকলায় বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৃষ্টিশীলতার অনন্য এক শিল্পমাধ্যম নাটক। কখনও বা হয়ে ওঠে সমাজ বদলের হাতিয়ার। নানাভাবে প্রকাশিত হয় আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের অঙ্গীকার। সমস্যাকে চিহ্নিত করে উঠে আসে সম্ভাবনার দিগন্ত রেখা। আর এমন প্রত্যয় নিয়ে সহিংতার বিরুদ্ধে নাটক সেøাগানে বর্ণিল আয়োজনে শুরু হলো দ্বিতীয় ঢাকা আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব। দেশের ২৩টি নাট্যদলের সঙ্গে ভারত, চীন ও যুক্তরাজ্যের ৫টি দলের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে এ উৎসব। যৌথভাবে দশ দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজক ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) বাংলাদেশ কেন্দ্র ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বৃহস্পতিবার বসন্ত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চে উৎসবের সূচনা হয়। শুরুতেই পরিবেশিত হয় আলো, শব্দ ও সংলাপের সমন্বিত শব্দালোক প্রদর্শনী। বুকে বিশ্বাস, পায়ে উর্বর পলি শীর্ষক এ প্রযোজনাটিতে উপস্থাপিত হয় আবহমান বাংলার কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। সুপরিসর মঞ্চকে ঘিরে একঝাঁক নৃত্যশিল্পীর অনবদ্য পরিবেশনাটিতে একে একে উঠে সম্প্রীতিময় বাংলার দৃশ্যকাব্য। উল্লেখিত হয় লালন, তিতুমীর, জয়নুল কিংবা অবন ঠাকুরসহ বাংলার বরেণ্যজনদের কীর্তির কথা। সেই সঙ্গে বাঙালীর জাতীয়তাবোধের সূচনালগ্ন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে নাচের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের কথা। স্বাধীন বাংলার গৌরবগাথা মেলে ধরে মঞ্চের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে ছুটে বেড়ায় শিল্পী। এই শব্দালোক প্রদর্শনী শেষে আলোর রেখা ছড়িয়ে আকাশে উড়িয়ে দেয়া হয় অসংখ্য ফানুস। প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আইটিআইয়ের সম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন পর্ষদের পরিচালক দেব প্রসাদ দেবনাথ। উৎসবের প্রথম দিন কোন নাটকের প্রদর্শনী ছিল না। আজ শুক্রবার থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হলে তিনটি করে নাটকের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া উৎসবে ‘সহিংসার বিরুদ্ধে নাটক’ এবং ‘নাটক : শিল্পের প্রত্যুত্থান’ শিরোনামে নাট্যবিষয়ক দুটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের উৎসবে চীনের দুটি অপেরা দল অংশ নিচ্ছে। এছাড়া ভারতের কলাক্ষেত্র মণিপুর মঞ্চস্থ করবে কানাইলালের নির্দেশনায় নাটক ‘দ্রৌপদী’। শুক্রবার সন্ধ্যা থকে উৎসবের নাটকগুলো মঞ্চস্থ হবে। আজ সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘ভঙ্গবঙ্গ’, আগন্তুক রেপার্টরি প্রযোজনা ‘অন্ধকারে মিথেন’ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রযোজনা ‘কবি’। শনিবার মঞ্চস্থ হবে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার প্রযোজনা ‘বাঁদী-বান্দার রূপকথা’। এটি মঞ্চস্থ হচ্ছে ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সৌজন্যে। একই সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে বটতলা প্রযোজনা ‘দ্য ট্রায়াল অব মালাম ইলিয়া’ ও থিয়েট্রেক্স প্রযোজনা ‘দক্ষিণাসুন্দরী’। ১৫ মার্চ মঞ্চস্থ হবে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজনা ‘নাম-গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’, পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি) প্রযোজনা ‘ম্যাকবেথ’ ও নাট্যম রেপার্টরি প্রযোজনা ‘সাইকেলঅলা’। ১৬ মার্চ মঞ্চস্থ হবে সেন্টার ফর এশিয়ান থিয়েটার প্রযোজনা ‘ম্যাকাব্রে’, প্রাচ্যনাট প্রযোজনা ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ী’, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজনা’ ‘প্রমিথিউস’। ১৭ মার্চ মঞ্চস্থ হবে চীনের ইয়াংফু প্রমোশন এ্যান্ড প্রটেকশন সেন্টার প্রযোজনা ‘গ্যামলার ওয়াং প্রিপেয়ার্স দ্য নিউ ইয়ার’ ও ‘রোমান্স ইন বিটিং দ্য বার্ডস্’, আরশীনগর প্রযোজনা ‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’, পদাতিক বাংলাদেশ প্রযোজনা ‘পোড়ামাটি’।
×