ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাত নয়টার পর আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৩ মার্চ ২০১৫

রাত নয়টার পর আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাত ৯টার পর আন্তঃজেলা রুটে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারাদেশে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধ-হরতালে সহিংসতার কারণে প্রায় এক মাসের বেশি সময় বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বৈঠকের পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্যাহ জনকণ্ঠকে জানান, আজ রাত থেকেই সারাদেশে বাস চলাচল শুরু হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় আগের চেয়ে সড়ক-মহাসড়কে নাশকতা কমেছে। আমরা বাস চালানো আগের চেয়ে নিরাপদ মনে করছি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকবে। যানবাহনে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, মালিকদের চাহিদার বিষয়টি জানানোর পর সরকার সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেয়ায় বৈঠকে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশের মহাপরিদর্শক শহিদুল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। বৈঠকে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ-সড়ক মহাসড়কে আগের চেয়ে নাশকতা অনেকাংশে কম হওয়ার কথা জানান। গাড়ির ক্ষতিপূরণ দেয়ার ফের আশ্বাস দিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এখন থেকে রাতে বাস চলবে। তিনি মালিকদের প্রতি গাড়িতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখা, গাড়ি ছাড়ার আগে যাত্রীদের ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রাখা ও সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও সতর্ক হয়ে গাড়ি চালানোর কথা বলেন মন্ত্রী। গত ৯ ফেব্রুয়ারি পরিবহন মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে রাত ৯টার পর মহাসড়কে বাস না চালানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কামাল। তখন বলা হয়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মহাসড়কে রাত ৯টার পর যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল অব্যাহত থাকবে। চলতি বছরের পাঁচ জানুয়ারি সরকারের এক বছর পূর্তির দিন থেকে আন্দোলনের ডাক দেয় বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট। পাঁচ জানুয়ারি বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া টানা অবরোধের ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় জ্বালাও-পোড়াও। যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন লক্ষ্য করে সারাদেশে একের পর এক নাশকতা চলতে থাকে। বেশিরভাগ ঘটনায় ঘটে রাতে। এর পেক্ষিতে রাতে বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পেট্রোলবোমা হামলায় এ পর্যন্ত শুধু ঢাকা মেডিক্যালেই মারা গেছেন ১৫ জন। সোমবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী হরতাল-অবরোধের চিত্র তুলে ধরে বলেন, গত ৬৪ দিনের হরতাল-অবরোধে পেটের তাগিদে কাজে বের হয়ে ১১৯ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এর অধিকাংশই আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পেট্রোলবোমাসহ নানা ধরনের নাশকতামূলক কাজে সহস্রাধিক ব্যক্তি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এ কয়দিনে ২ হাজারের অধিক যানবাহন আগুনে পুড়ে ও ভাংচুর করা হয়েছে, ৬টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ৩৪ দফায় ট্রেনে নাশকতা হয়েছে। তিনি বলেন, এ নৈরাজ্য দীর্ঘদিন চলতে দেয়া যায় না। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে। প্রয়োজনে তারা আরও কঠোর হবে। এ প্রসঙ্গে সংসদ নেতা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার ফলে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার মাত্রা অনেক কমে এসেছে। বাস ও ছোট ছোট যানবাহনও স্বাভাবিকভাবে চলছে। তবে দূরবর্তী এলাকার বাস কিছুটা কম চলছে।
×