ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধিতে শঙ্কা

রাজশাহীতে আলুর ভাল ফলন ॥ চাষীর মুখে হাসি

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১২ মার্চ ২০১৫

রাজশাহীতে আলুর ভাল ফলন ॥ চাষীর মুখে হাসি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বাম্পার ফলনে এবার রাজশাহী অঞ্চলের আলু চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে আলু তোলার কাজে নেমে পড়েছেন রাজশাহীর কৃষক। মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম ভাল থাকায় বিঘাপ্রতি অন্তত ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত মুনাফা পাচ্ছেন প্রান্তিক চাষীরা। জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতেই আলুর ভাল দামে এ অঞ্চলের কৃষকদের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির রেখা। তবে বরাবরের মতো এবারও আলুর বাজার মধ্যস্বত্বাভোগীদের দখলে চলে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন কৃষকরা। এছাড়াও হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কাও দেখা দিয়েছে কৃষকদের মধ্যে। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এবার জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর। তবে তা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৬০০ হেক্টর। এ পরিমাণ জমি থেকে এ বছর প্র্রায় ৭ লাখ টন আলুর উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আলু সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। জানা গেছে, জেলার সরকারী-বেসরকারী হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা যাবে মাত্র ৩৩ লাখ বস্তা। রাজশাহীর বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে আলু তোলার ধুম। কৃষাণ-কৃষাণী একসঙ্গে আলু তুলছেন ক্ষেত থেকে। কৃষকরা জানান, অনুকূল আবহাওয়া, বীজ, সার ও মড়ক না থাকায় এবার আলু বাম্পার ফলন হচ্ছে। হেক্টরে ২৬ থেকে ৩৩ টন আলু উৎপাদন হচ্ছে এবার। আর মৌসুমের শুরুতেই আলুর দাম ভাল থাকায় কয়েক বছর পর আলুতে লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা। মাঠে এখন প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৯২০ টাকা। মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি গ্রামের আলুচাষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে এবার আলুচাষ করেছিলেন। আলু উৎপাদন হয়েছে ১৩৫ বস্তা। তিনি জানান, খরচ বাদে তার ৬০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হযরত আলী বলেন, এবার অনুকূল আবহাওয়া থাকায় আলু বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাজারেও আলুর দাম ভাল। রাজশাহী জেলা হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর আলি বলেন, বিদ্যুতের দাম ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার হিমাগারের ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। উখিয়ায় তরমুজ চাষীরা খুশি নিজস্ব সংবাদদাতা উখিয়া থেকে জানান, কক্সবাজারের উখিয়ায় এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল বীজ, সঠিক পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক ব্যবহার এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশাতীতভাবে তরমুজ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষেতে তরমুজের ফলন দেখে চাষীদের মাঝে খুশির আমেজ দেখা গেছে। বাজারে তরমুজের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় চাষীরা খুশি। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজার একর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। উৎপাদিত তরমুজের মধ্যে রয়েছে, তাইওয়ানের ইম্পিয়ার-টু, জাপানি গোরি জাম্বু, কোরিয়ান চ্যাম্পিয়ন, চায়না সুপার ইম্পিয়ার এবং এ দেশীয় লাল তীর কোম্পানির ভিক্টর, বিগ সু ও আনার কলি। দেখা গেছে, ইমামের ডেইল, মাদারবনিয়া ও চোয়াংখালী এলাকায় শত শত একর ক্ষেতে তরমুজের অহরহ সমারহ। মাঠজুড়ে ভরে গেছে তরমুজ। ইমামের ডেইল এলাকার চাষী লাল মোহাম্মদ (৫৫) জানান, তিনি এ বছর ৩ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। তাইওয়ানের ইম্পিয়ার-টু নামক হাইব্রীড বীজ রোপণ করে তার ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। চোয়াংখালী এলাকার রফিক ও অলিউল্লাহ প্রায় ৫ একর জমিতে তরমুজের ক্ষেত করেছে। তারা জানান, ভাল ও উন্নতমানের বীজ সংগ্রহ করে তরমুজ চাষ করায় ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে ন্যায্য মূল্য পাওয়া গেলে খরচ পুষিয়ে বিরাট অঙ্কের লাভের আলো দেখা সম্ভব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার সিকদার বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়ার অনুকূল বিরাজ করায় তরমুজ ক্ষেতে কোন অসুবিধা হয়নি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে চাষীরা ক্ষেতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, পরিচর্যা ও ভাল বীজ ব্যবহার করায় এবারে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে।
×