ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারত-আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি আজ

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১০ মার্চ ২০১৫

ভারত-আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে আজ রয়েছে একটি খেলা। হ্যামিল্টনে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি হবে আসরের অন্যতম চমক-আয়ারল্যান্ড। চার ম্যাচের সবই জিতে ইতোমধ্যে পুল ‘বি’ থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। সুতরাং পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখে শেষ আটে দুর্বল প্রতিপক্ষ পেতে আজও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। যেখানে আইসিসির সহযোগী সদস্যদের বিপক্ষে অবশ্যই ফেবারিট হিসেবে নামবে তারা। অপরদিকে চার খেলায় তিন জয়ে আয়ারল্যান্ডও আছে কোয়ার্টারের রেসে। আজ চ্যাম্পিয়নদের বধ করেই টিকেট নিশ্চিত করতে চাইছেন আইরিশ অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড! তবে বিশ্বকাপে আরও এক ঐতিহাসিক সাফল্য তুলের নেয়ার কাজটা পোর্টারফিল্ডদের মোটেই সহজ নয়। সাম্প্রতিক ব্যর্থতা ঝেড়ে টুর্নামেন্টে অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছে ধোনি বাহিনী। ছোট-বড় যাই হোক, প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে জয় রথে ছুটছে তারা। উন্মাদনার ম্যাচে চিরশত্রু পাকিস্তানকে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে মিশন শুরু করে ভারত। এরপর দুর্ধর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘বিড়াল’ বানিয়ে তুলে নেয় ১৩০ রানের বিশাল জয়। দুর্বল আরব আমিরাতকে পিষ্ট করে ৯ উইকেটে, সর্বশেষ সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পেতেই যা একটু বেগ পেতে হয় অথচ প্রায় সাড়ে তিন মাসের অস্ট্রেলিয়া সফরে দ্বিপক্ষীয় টেস্ট ও ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতে ভরাডুবি হয়েছিল ধোনিদের।সেই তারাই এখন দুরন্ত-দুর্বার। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং প্রতিটি বিভাগে প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিচ্ছে ভারত। ৪ ম্যাচের তিনটিতে সুযোগ পেয়ে ৯ উইকেটে তুলে নিয়েছেন মোহাম্মদ সামি। সঙ্গী পেসার উমেশ যাদব ৪ ম্যাচে ৬ অথচ বিশ্বকাপের আগে ব্যর্থতায় সবচেয়ে বেশি সমালোচিত ছিল ভারতের পেস আক্রমণই। কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে আজও ভাল করার প্রত্যয় সামির কণ্ঠে। ‘ওয়ানডেতে সাধারণত বোলিং সহায়ক উইকেট পাওয়া যায় না। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত আমি আমার পারফর্মেন্সে খুশি। আইরিশদের বিপক্ষেও সে ধারা অব্যাহত রেখে দলকে জেতাতে চাই।’ বলেন তিনি। কেমন হবে হ্যামিল্টনের সেডন পার্কের পিচ? তার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন কার্ল জনসন। সেডন পার্কের কিউরেটর বলেন, ‘আইসিসির নিয়ম মেনেই আমরা পিচ তৈরি করেছি। সিম-মুভমেন্টের পাশাপাশি এখানে ব্যাটসম্যানরাও সুবিধা পাবে। আর সব ম্যাচের মতো রান হবে, এটি স্পোটিং। এখনও পর্যন্ত আইসিসি পিচের আচরণে খুশি।’ আজকের ম্যাচে যথেষ্ট রান হবে বলেই মনে করেন তিনি। সেক্ষেত্রেও এগিয়ে থাকবে ভারত। ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে ৫৮ গড়ে ২৩৩ রান করেছেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। পাকিস্তান বধের সেই দুরন্ত সেঞ্চুরিসহ ৭৩ গড়ে বড় তারকা বিরাট কোহলির রান ২১৯। আছেন ওয়ানডে ইতিহাসের দু’দুটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা, ওয়ানডে স্পেশালিস্ট সুরেশ রায়না, ‘ক্যাপ্টেনকুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি, সফল স্পিনার রবিচন্দ্রন আশ্বিন ও অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজা। অবশ্য সকল সমীকরণ বদলে দিয়ে চমক সৃষ্টির সামর্থ্য রয়েছে আইরিশদের। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় তারা। যদিও ‘অঘটন’ শব্দে আপত্তি অধিনায়ক পোর্টারফিল্ডের। আরব আমিরাত ও জিম্বাবুইয়েকে হারানো আয়ারল্যান্ড হারে কেবল শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। ব্যাট হাতে দৃশ্যপট বদলে দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে ১ সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ২৩৩ রান করা এড জয়েসের। আছেন দুটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো এ্যান্ডি বালবির্নি। ব্যাট হাতে অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড, অভিজ্ঞ পল স্টারলিংও কম যান না। অলরাউন্ডার ভ্রাতৃদ্বয় নাথান ও’ব্রায়েন-কেভিন ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বোলার জর্জ ডকরেল, এ্যালেক্স কুশক বিশ্বমানের এক দল আয়ারল্যান্ড। নিজেদের দিনে বিশ্বকে অবাক করে দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাদের। আগেই কোয়ার্টার নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচে একাধিক পরিবর্তন আনতে পারে ভারত। সেসব নিয়ে ভাবছেন না পোর্টারফিল্ড। আইরিশ অধিনায়ক বলেন, ‘তাদের হাতে ১৫ ক্রিকেটার আছে। পরিবর্তন আনতেই পারেন। ওসব নিয়ে ভাবছি না। আগের ম্যাচগুলোর মতোই আমরা আমাদের সেরাটা দিতে চাই। জয় তুলে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করাই লক্ষ্য।’ নিজেদের শেষ ম্যাচে ৩৩১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৫ রানের নাটকীয় জয় পাওয়ায় একাদশে খুব বেশি পরিবর্তন আনতে চাইবে না আয়ারল্যান্ড। তবে হ্যামিল্টনের পিচের বিবেচনা করে একজন বেশি স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে তারা। ডকরেলের সঙ্গে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে দেখা যেতে পারে এ্যান্ডি ম্যাকব্রায়েনকে। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত দু’বারের মোকাবেলায় দু’বারই জয় ভারতের, ২০০৭-এ ৯ উইকেটে ২০১১ সালে ৫ উইকেটে।
×