ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিউজিল্যান্ডের টানা পাঁচ জয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৯ মার্চ ২০১৫

নিউজিল্যান্ডের টানা পাঁচ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুর্বার এগিয়ে চলেছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে টানা পাঁচ জয়ের পথে কাল দুর্বল আফগানিস্তানকে বিধ্বস্ত করেছে সহ-আয়োজক কিউইরা। নেপিয়ারে ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের দল জিতেছে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে। স্বাগতিক বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে ৪৭.৪ ওভারে ১৮৬ রানে অলআউট হয় টস জিতে ব্যাটিং নেয়া আফগানরা। জবাবে ৩৬.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। ৩শ উইকেটের গৌরবময় ‘মাইলস্টোন’ অতিক্রমের দিনে মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ‘নায়ক’ বর্ষীয়ান স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরি! ১০ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি পুল ‘এ’এর শীর্ষে নিউজিল্যান্ড। নিজেদের শেষ ম্যাচে দলটির প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি ১১তম ওয়ানডে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট নিউজিল্যান্ড। এ মৌসুমে মাঠে অসাধারণ নৈপুণ্যগুণেই হিসাবে উঠে আসে ‘ব্ল্যাক ক্যাপসরা’। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে শুরুতেই এতটা ভাল খেলবে, এমনটা বোধহয় খোদ কিউই ভক্তরাও আশা করেননি! একে একে টি২০ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা, সহাযোগী স্কটল্যান্ড, কুলীন ইংল্যান্ড, রেকর্ড চার বারের শিরোপাধারী দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়া ও সর্বশেষ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা আফগানিস্তানকে হারিয়ে উড়ছে ম্যাককুলাম বাহিনী। নেপিয়ারে টসে হার ছাড়া আর সবকিছুই ছিল কিউইদের অনুকূলে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং অনুমেয়ভাবে প্রতিটি বিভাগে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। দলীয় ৫ রানে প্রথম, ৬ রানে দ্বিতীয়, ২৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে আফগানিস্তান। ১ রান করা ওপেনার জাভেদ আহমাদিকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। রেকর্ডের হাতছানির সম্মানেই কি না তৃতীয় ওভারেই ভেট্টরির হাতে বল তুলে দেন ম্যাককুলাম। প্রথম বলেই উসমান ঘানিকে (০) পরিষ্কার বোল্ড করে দেন অভিজ্ঞ এ স্পিনার। এরপর আফগান ব্যাটিংয়ের মেরুদ-টাও ভেঙ্গে দেন তিনি। একে একে সাজঘরে ফেরান বড় তারকা নওরোজ মঙ্গল (৪৬ বলে ২৭), অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি (১৫ বলে ৬) ও আফসার জাজাইকে (১ বলে ০); ফল ১৯.৫ ওভারে ৫৯ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা আফাগনরা! এরপরও ১৮৬ রানের সম্মানজনক স্কোরের রূপকার দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান সামিউল্লাহ শেনওয়ারি (১১০ বলে ৫৪) ও নাজিবুল্লাহ জাদরান (৫৬ বলে ৫৬)। ওয়ানডেতে আফগান ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১০ হাফ সেঞ্চুরি শেনওয়ারির, ৭ হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে তার পেছনে নবি। শেনওয়ারি-জাদরান মুল্যবান ৮৬ রান যোগ করেন, বিশ্বকাপে সপ্তম উইকেট জুটিতে যা পঞ্চম সর্বোচ্চ রান। যথাক্রমে দু-জনকে সাজঘরে ফিরিয়ে আফগান ইনিংস মুড়িয়ে দেন কোরি এ্যান্ডারসন ও এ্যাডাম মিলনে। জবাবে কিউইদের শুরুটা ছিল নিজেদের মতো, যথারীতি ড্যাশিং। মাত্র ৫.৫ ওভারে ৫৩ রান যোগ করেন মার্টিন গাপটিল ও ম্যাককুলাম। মাত্র ১৯ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে নবির বলে বোল্ড হন ম্যাককুলাম। এ নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ২২৯ বল খেলে ২২৯ রান সংগ্রহ করলেন কিউই অধিনায়ক! ১০৪ বলে ১১২ রান নিয়ে তালিকায় তার পেছনে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। ৫৭ রানে রানআউট হন ফর্মে ফেরা গাপটিল। এরপর ৩৩ রান করা কেন উইলিয়ামস ফিরলেও তাতে খুব একটা ক্ষতি হয়নি। অভিজ্ঞ রস টেইলর ৪১ বলে অপরাজিত ২৪ ও এ্যান্ডারসন ৭ রানে দলের জয় সঙ্গী করে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচের নায়ক ভেট্টরির কথা আলাদা করে না বললেই নয়। ম্যাচে তাঁর বোলিং ফিগার ১০-৪-১৮-৪! এ নিয়ে আসরে মোট শিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ উইকেট। ১৩টি করে উইকেট নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে সতীর্থ ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। বিশ্বকাপ ইতিহাসেও নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৩৩ উইকেট ভেট্টরির, ৩৬ শিকারে তার ওপরে কেবল সাবেক পেসার জ্যাকব ওরাম। ২৯১ ম্যাচে লিজেন্ডারি স্পিনারের মোট উইকেট ৩০২Ñ নিউজিল্যান্ডে হয়ে ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ। ২৪০ শিকারে দ্বিতীয় স্থানে কাইল মিলস। ম্যাচ জয়ে সন্তুষ্ট হলেও পুরোপুরি তৃপ্ত নন নিউজিল্যন্ড অধিনায়ক! ‘৬০ রানে ওদের ৬ উইকেট ফেলে দেয়ার পরও ১৮৬ করেছে, শেষ দিকে আমাদের বোলিং মনমতো হয়নি। আবার এই রান টপকাতে টপ-অর্ডারের ৪ উইকেট হারাতে হয়েছে। এটা তৃপ্তিদায়ক নয়! আমাদের আরও ভাল করার সুযোগ রয়েছে। তবে টুর্নামেন্টে টানা পাঁচ জয়ে অবশ্যই সন্তুষ্ট আমরা। ভেট্টরি আজ সত্যি অসাধারণ বোলিং করেছে। ওর মতো লিজেন্ডারি বোলারের সঙ্গে খেলতে পেরে দলের সবাই খুশি।’ বলেন ম্যাককুলাম। অন্যদিকে হারের জন্য নিজ দলের ব্যাটসম্যানদেরই দায়ি করেন আফগানিস্তান অধিনায়ক নবি। ২৮০ বা তার বেশি রান করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য তাঁর!
×