ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পেট্রোলবোমায় দগ্ধ

চট্টগ্রামের সুভাষ সোম ১৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৯ মার্চ ২০১৫

চট্টগ্রামের সুভাষ সোম ১৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে সহিংসতায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরও এক হতভাগ্যের নাম। তিনি চট্টগ্রামে পেট্রোলবোমায় দগ্ধ কাঁচামাল ব্যবসায়ী সুভাষ সোম (৫৬)। ১৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেল। সুভাষ কোন রাজনীতি করেন না। কেন তাঁকে পুড়ে মরতে হলো এসব কাহিনী লিখে আর কি হবে? তা-ব থামাতে পেরেছেন। ওদের (অবরোধকারী) পরিবারের কেউ পুড়িয়ে মরলে তবেই ওরা ঝুঝত যন্ত্রণা। আপনজন হারানোর বেদনা ও যন্ত্রণা কত কষ্টের। ভগবান যেন ওদের (অবরোধকারী) সে কষ্ট দেয়Ñ এমন আকুতি নিহতের স্বজনদের। সুভাষের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে স্বজনদের কান্না ও বেদনায় বার্ন ইউনিটের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর পাল জানান, সুভাষের শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাঁর শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। প্রাণান্ত চেষ্টায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি। রবিবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি জানান, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৫০। চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন ৯৬। আর সরকারী ভাষ্য অনুযায়ী এ নিয়ে টানা ৫৫ দিন অবরোধে সারাদেশে এ পর্যন্ত পেট্রোলবোমা ও ককটেল হামলায় নিহত হয়েছেন এক পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক। আহত হয়েছেন আরও ৫৮০। নিহত সুভাষ সোমের বাবা স্বর্গীয় বীরেন্দ্র কুমার সোম। বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকু- থানার বাড়বকু- গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম শহরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের কাঁচামালের ব্যবসায়ী ছিলেন। ছিলেন তিন মেয়ের জনক। স্ত্রী নেলী সোম ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের মিস্ত্রিপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। নিহতের মেয়ের জামাই রাজু চৌধুরী জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে এগারোটায় চট্টগ্রামের টাইগার পাস এলাকায় যাত্রীবাহী রাইডার পরিবহনে পেট্রোলবোমা হামলায় দগ্ধ হন সুভাষ। প্রথমে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ১৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
×