ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংসতার মাঝেও রফতানিতে প্রবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৯ মার্চ ২০১৫

সহিংসতার মাঝেও রফতানিতে প্রবৃদ্ধি

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ বিএনপি-জামায়াতের টানা দুই মাসের সহিংসতার মাঝেও এগিয়ে চলছে দেশের রফতানি প্রবৃদ্ধি। চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এসে গতবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ। এইক্ষেত্রে বরাবরের মতোই চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে তৈরি পোশাক খাত। প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রাখা নিয়ে রফতানিকারকগণ শঙ্কিত। তাদের আশঙ্কা, আগামী মাসের রফতানি আয়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে চলমান সহিংস কর্মসূচী। এদিকে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য মতে, বিএনপি-জামায়াতের সহিংস হরতাল আর অবরোধের কবলে পড়ে শুধু ৪০টি কারখানার ক্ষতি হয়েছে ১৯০ কোটি টাকা। তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল, মূল্যছাড়, উড়োজাহাজে পণ্য পাঠানো, জাহাজীকরণে বিলম্ব ও নাশকতার কবলে পড়ে এসব ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এছাড়াও বিজিএমইএ নেতাদের অভিযোগ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে গত দুই মাসে আন্তর্জাতিক ক্রেতা বাংলাদেশে আসা কমিয়ে দিয়েছেন। অনেক অর্ডার বাতিল করা হচ্ছে বা পিছিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সম্ভাব্য অর্ডারের প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে। এসব রফতানি আদেশ বাংলাদেশের প্রতিন্দন্দ্বী দেশ ভারত, পাকিস্তান আর ভিয়েতনামে চলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রফতানিকারকগণ। বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে না আসলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রফতানি আরও বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের রফতানি আয় হয় ২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। যদিও এই রফতানি আয় জানুয়ারি মাসের তুলনায় কমেছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ; ওই মাসে রফতানি আয় ছিল ২ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইপিবি’র তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশের রফতানি আয় হয় ২০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এর প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরের একই সময়ে দেশের রফতানি আয় হয়েছিল ১৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ এক্সপোটার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এই প্রবৃদ্ধি আমাদের জন্য কোন শুভ সংবাদ হতে পারে না, কারণ খারাপ সংবাদটি এখনও অপেক্ষা করছে। রফতানির ওপর চলমান অস্থিতিশীল পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে আগামী মাসেই। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে রফতানিকারকগণ অবরোধের শুরুতে কোন ধরনের বিরতি না দিয়ে সময়মতো উড়োজাহাজে পণ্য পাঠানো নিশ্চিত করার কারণে। তবে, এই ক্ষেত্রে সরকারও অবরোধের শুরু থেকে পণ্য সরবরাহকারী যানের সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। তবে, আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি আমাদের তুলনায় দ্রুত বাড়ছে। তাই আমাদেরও সক্ষমতা আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী। বিজিএমইএর সহসভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজিম জনকণ্ঠকে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা ছিল। যদি পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকত তবে, তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হতে পারত বলে মনে করেন তিনি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় হয় ১৬ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
×