ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভ্যাটে বিশেষ ছাড় পাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৯ মার্চ ২০১৫

ভ্যাটে বিশেষ ছাড় পাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যবসায়ীদের বার্ষিক আয় ৩৬ লাখ টাকার বেশি হলে কেবল তাদের ভ্যাট দিতে হবে। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগেই সরকারের বিশেষ উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা এ ছাড় পাচ্ছেন। ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বার্ষিক টার্নওভার সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব পাওয়ার পর অর্থমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ভ্যাটের আওতামুক্ত ছিল। তবে এখন সেটা বাড়িয়ে ৩৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাব নিয়ে অর্থমন্ত্রী সরাসরি কোন মন্তব্য না করলেও তিনি প্রস্তাব মেনে নেয়ার আভাস দিয়েছেন। এজন্য আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এটি সংশোধন করা হতে পারে। রবিবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে গৃহীত ১০০ কোটি ডলারের বর্ধিত ঋণ সহায়তার শর্ত হিসেবে ‘ভ্যাট আইন-২০১২’ প্রণয়ন করে সরকার। গত বছরের জুলাই থেকে এটি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু প্রণীত ভ্যাট আইন সংশোধনের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রবল দাবির মুখে এটি বাস্তবায়নের তারিখ এক বছর পিছিয়ে ২০১৫ সালের ১ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ২৮ অক্টোবর ভ্যাট আইন-২০১২ সংশোধনের লক্ষ্যে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। জানা গেছে, কমিটি গঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত প্রায় ১৩টি বৈঠক হয়েছে এবং এসব বৈঠকে প্রণীত ভ্যাট আইনের ১০টি ধারা পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্র মতে, বর্তমানে আইএমএফ মিশনের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছে। আজ সোমবার এ প্রতিনিধিদলটি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। এ কারণে এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি দল ভ্যাট আইনের সংশোধন নিয়ে আলোচনা করতে অর্থমন্ত্রীর কাছে আসে। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বৈঠকে কমিটির সুপারিশ করা ১০টি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সবগুলো একবারে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। ধাপে ধাপে বাজেটের মাধ্যমে এগুলো সমন্বয় করা হবে। তবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের সুবিধার জন্য বার্ষিক টার্নওভারের সীমা ২৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৬ লাখ টাকা নির্ধারণের বিষয়টি তিনি মেনে নিয়েছেন। আগামী বাজেটে এটি সংশোধন করা হতে পারে। তিনি বলেন, এছাড়া মাল্টিপল ভ্যাট ও ঢালাওভাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পরিবর্তে ভিন্ন ভিন্ন খাতে ভিন্ন ভিন্ন ভ্যাট নির্ধারণের বিষয়টি নিয়েও কথা হয়েছে। আইএমএফের শর্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইএমএফের দিকটাও দেখতে হবে। তবে তাদের সব শর্তই যে মেনে নিতে হবে, তা নয়। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আইএমএফকে বোঝানো হবে। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীবান্ধব ভ্যাট আইন প্রণয়ের আশ্বাস দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এমন ভ্যাট আইন করা হবে যাতে সরকার ট্যাক্স পায় এবং ব্যবসায়ীরাও যাতে সহজে ভ্যাট দিতে পারেন। এদিকে বর্তমান আইনে যেসব ব্যবসায়ীদের বার্ষিক লেনদেন ২৪ লাখ টাকার বেশি, তাদের ভ্যাট প্রদান করতে হয়। বর্তমানে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যেসব ব্যবসায়ীদের বার্ষিক আয় ৩৬ লাখ টাকার উপরে, কেবল তাদের ভ্যাট দিতে হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাটমুক্ত সীমা করা হচ্ছে ৩৬ লাখ টাকা। আইন চূড়ান্ত হওয়ার আগেই এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে অর্থমন্ত্রীর ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
×