ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হিলারিকে হাউস কমিটিতে তলব

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ মার্চ ২০১৫

হিলারিকে হাউস কমিটিতে তলব

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ই-মেইল এ্যাকাউন্ট ব্যবহার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য হিলারি ক্লিনটনকে বিশেষ হাউস কমিটিতে তলব করেছেন রিপাবলিকানরা। ২০১৬ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর জন্য এটি সর্বশেষ আঘাত। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব পালনের সময় ক্লিনটন ব্যক্তিগত ই-মেইল এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই সরকারী কাজকর্ম সম্পাদন করেছেন। এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে তা প্রকাশ হয়ে পড়লে বিপদাশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর কাজকর্মে একটি সম্ভাব্য আইনী কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ফেডারেল রেকর্ড সংরক্ষণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। খবর এএফপির। তবে এখানে এই প্রশ্নও উঠেছে যে, কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ক্লিনটন ফেডারেল সরকারের ই-মেইল এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেননি, যা ব্যবহার করলে তার যোগাযোগের চিঠিগত সরকারী রেকর্ডের অংশে পরিণত হতো। সমালোচনায় দ্রুত এই যুক্তি দেখাতে এগিয়ে এসেছেন যে, হোয়াইট হাউসের জন্য নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের সম্ভাব্য শীর্ষ পদপ্রার্থী তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। লিবিয়ার বেনগাজিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার তদন্তে গঠিত বিশেষ হাউস কমিটি লিবিয়া সংক্রান্ত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সব রকম যোগাযোগের চিঠিপত্র চেয়ে কমিটির সামনে হাজির হওয়ার জন্য বুধবার সমন জারি করে। কমিটির মুখপাত্র জামাল ওয়ারে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। কমিটি ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘সংরক্ষণপত্র’ পাঠিয়ে সকল প্রাসঙ্গিক দলিল সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান ট্রে গাওডি ই-মেইল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সেগুলো পেতে যাচ্ছি। আমাদের এর উৎসে যেতে হবে, যা হবে স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।’ চার বছর ধরে পররাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব পালনের সময় হিলারির কোন ফেডারেল সরকারের ই-মেইল ঠিকানা ছিল না এবং তাঁর সহযোগিরা সে সময় দফতরের সার্ভারে তাঁর ই-মেইলগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করেননি বলে নিউইয়র্ক টাইমস প্রথম সংবাদ পরিবেশন করে। উদ্ধৃত কেলেঙ্কারি হিলারিকে এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। রিপাবলিকানরা তাঁর কাজের নিন্দায় উঠেপড়ে লেগেছেন এবং ডেমোক্র্যাটরা হোয়াইট হাউসে তাদের দলের প্রধান আশা-ভরসা ওই নারীকে কিভাবে রক্ষা করবেন, সে ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ডেমোক্র্যাটদলীয় অনেক আইনপ্রণেতা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। কোন কোন সমালোচক আবারও এই কা-কে ই-মেইল গেট’ আখ্যা দিয়েছেন। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রবীণ সদস্য জন লুইস বিব্রতকণ্ঠে বলেছেন, ‘আমি জানি না প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হলে হিলারি এই কেলেঙ্কারিকে কিভাবে সামাল দেবেন।’ হিলারি ক্লিনটন এ প্রশ্নে এ পর্যন্ত নীরবতা পালন করে আসছেন। তবে, জেব বুশসহ ২০১৬ সালের রিপাবলিকানদলীয় তাঁর কয়েকজন সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘হিলারি ক্লিনটনের আনক্লাসিফায়েড ই-মেইলগুলো প্রকাশ করা উচিত।’ টেক্সাসের সাবেক গবর্নর রিক গেরি যিনি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতায় তাঁর আগ্রহের কথা গোপন করেননি। ইঙ্গিত করেছেন যে, এই সর্বশেষ উপাখ্যান আত্মরক্ষার প্রবণতার একটি অংশ। পেরি ফক্স নিউজকে বলেছেন ‘এখানে অস্বচ্ছতার একটি ধরন ফুটে উঠেছে। এটি একটি নৈতিক সমস্যা যা তাঁকেই মোকাবেলা করতে হবে।’বেনগাজি প্যানেলের ডেমোক্র্যাটদলীয় পদস্থ কংগ্রেস সদস্য এলিজা কামিংস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, গাওডি সম্ভবত সাবেক ফার্স্ট লেডির বিরুদ্ধে ‘মাছ শিকারের অভিযানে নেমেছেন।’ সাংবাদিকদের কামিংস বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমি যা কিছু দেখেছি তাতে আমার মনে হচ্ছে এটি হিলারি ক্লিনটনের যুগে হানা দেয়ার একটি প্রয়াস।’ সর্বশেষ এই কেলেঙ্কারির ঘটনা হিলারির সম্ভাব্য প্রচারাভিযানকালে তাঁকে তাড়িত করতে ফিরে আসতে পারে। গত মাসে এ কথা প্রকাশ পায় যে তাঁর পারিবারিক ক্লিনটন ফাউন্ডেশন বিদেশী সরকারসমূহের কাছ থেকে দাম গ্রহণ করেছিল।
×