ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৬৭ ভাগ ইটভাঁটি অবৈধ দূষণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৫ মার্চ ২০১৫

৬৭ ভাগ ইটভাঁটি অবৈধ দূষণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে

স্টাফ রিপোর্টর ॥ সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ইটভাঁটি থাকলেও ৬৭ ভাগই অবৈধ। এসব ইটভাঁটির কোন ছাড়পত্র নেই। অবৈধ এসব ইটভাঁটিতে সরকার নির্ধারিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পোড়ানো হচ্ছে না। ফলে পরিবেশগত বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব ইটভাঁটিতে দূষণ বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী বলে অভিমত প্রকাশ করেছে পরিবেশ সংগঠন পবা। বুধবার রাজধানীর কলাবাগানে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ইটভাঁটি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অপরিকল্পিত ইটভাঁটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ব্যতিরেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে লোকালয়, কৃষি ভূমি, পাহাডের পাদদেশ এবং বনাঞ্চলের আশপাশে ইটভাঁটি পরিচালিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য এবং পবার মাঠ পর্যায়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় দেশে বর্তমানে ইটভাঁটির সংখ্যা ৮ হাজার ৫শ’। এর মধ্যে ১ হাজার ৯শ’ ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাঁটি রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অবৈধ এসব ইটভাঁটিতে সরকার নির্ধারিত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না। অধিকাংশ ইটভাঁটিরই পরিবেশগত ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেই। আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে ব্যবহƒত হচ্ছে ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি বা সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি। এসব অবৈধ ইটভাঁটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। ফলে পরিবেশ দূষণের কারণে জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইটভাঁটিতে দূষণ বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী বলে অভিমত প্রকাশ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ অধিদফতরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয় গত মৌসুমের তথ্য অনুযায়ী ইটভাঁটির সংখ্যা ৫৮৭৯। এর মধ্যে ২৭৭৮ বৈধ। বাকি ৩০৯৯ ইটভাঁটির পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ততথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় উপকূলীয়, পাহাড়ি, বরেন্দ্র এলাকার জেলাসমূহে যে ব্যাপকসংখ্যক ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাঁটি রয়েছে সেসব ভাঁটির কোন তথ্য প্রদান করা হয়নি। ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাঁটিতে মৌসুমে গড়ে ২০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। ১ লাখ ইট পোড়াতে ১৮শ’ মণ কাঠ লাগে। ১৯শ’ ভাঁটিতে কাঠ লাগে ২৫ লাখ ৫২ হাজার ৯৬০ টন। এছাড়াও ১২০ ফুট চিমনিবিশিষ্ট ভাঁটিতে কাঠ পোড়ানো হয়। অন্যান্য পদ্ধতির ভাঁটিতে মৌসুমে গড়ে ৪০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। ১ লাখ ইট পোড়াতে গড়ে ১৮ টন কয়লা লাগে। ৬ হাজার ৭শ’ ভাঁটিতে কয়লা লাগে ৪৮ লাখ ২৪ হাজার টন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পবার সম্পাদক মনজুর হাসান দিলু, সহ-সম্পাদক আবুল হাসনাত, মোঃ মুসা, পবার সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, পবার সদস্য মিজান শরীফ খোকা, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসাইন প্রমুখ।
×