ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তায় ধীরগতিতে পানি বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৪ মার্চ ২০১৫

তিস্তায় ধীরগতিতে পানি বাড়ছে

তাহমিন হক, নীলফামারী ॥ বাংলাদেশে তিন দিনের সফর শেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে যাওয়ার পর তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় কৃষকরা ৫ হাজার হেক্টর পর্যন্ত জমিতে সেচ পাচ্ছে। এটি সফরের আগে ছিল মাত্র ৯শ’ হেক্টর জমি পর্যন্ত। উজান থেকে তিস্তা নদীতে কিছুটার হলেও পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ধীরে ধীরে উজানের পানি বৃদ্ধি পাবে বা পাচ্ছে তা অনুমান করা যাচ্ছে। এতে তিস্তা নদীতে এখন নৌকা চলাচল চোখে পড়ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসেন। তার এই সফরের আগে তিস্তা নদীতে উজানের পানি প্রবাহ কিছুই ছিল না। যে টুকু উজানের চুয়ানো পানি এসেছে তা ব্যারাজের ৪৪টি কপাট আটকিয়ে সেই পানি সেচখালে নেয় সংশ্লিষ্টরা। ফলে ওইটুকু নদীর পানি দিয়ে ২১ জানুয়ারি থেকে মাত্র ৯শ’ হেক্টর জমিতে সেচ নির্ভর বোরো আবাদে পানি দেয়া সম্ভব হচ্ছিল। অথচ চলতি মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টরে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়। সূত্র মতে গত বছর এই সময় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও নদীর পানি প্রাপ্তির উপর সেচ প্রদান করা হয়েছিল ২৫ হাজার হেক্টরে। এবার উজানের পানি প্রাপ্তি কমে যায়। তিস্তাপাড়ের বসবাসরত পরিবারগুলো জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফরের আগে পর্যন্ত তিস্তায় পানি কমতে কমতে একশত কিউসেকে নেমেছিল। চুয়ানো পানির সরু নালায় পরিণত হয়েছিল তিস্তা। ফলে যতদূর চোখ যায় শুধু ধূ ধূ বালুচর। এতে নদীর পানির অভাবে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকার কৃষকরা সেচ থেকে বঞ্চিত হয়। নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। মমতা সফর শেষে ফিরে যাওয়ার পর উজান থেকে ধীরে ধীরে বেশ পানির প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। চরের মানুষজন জানায়, নদীতে কিছুটা পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের উৎপাদিক জমির ফসলসহ নিজেরাও নৌকা চালিয়ে নদী পারাপার করতে পারছেন। এদিকে মঙ্গলবার তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া থেকে ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও নীলফামারী সদরের প্রধান ক্যানেল ও টারশিয়ারি ক্যানেলের মাধ্যমে সেচ নির্ভর বোরো আবাদে কৃষকরা সেচ পেতে শুরু করেছে। তবে সেচ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত রয়েছে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার কৃষকরা। এ ব্যাপারে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সেচনির্ভর বোরো আবাদে আমরা সেচ দিতে পারছি না। তবে নদীতে কিছুটা পানির প্রবাহ থাকায় এখন পর্যন্ত আমরা ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করতে পারছি। নদীতে পানি আরও পাওয়া গেলে সেচের জমির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
×