ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তান-আমিরাত মুখোমুখি আজ

আরব আমিরাতকে পার্থক্য বোঝাতে চায় পাকিরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৪ মার্চ ২০১৫

আরব আমিরাতকে পার্থক্য বোঝাতে চায় পাকিরা

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি। সংযুক্ত আরব আমিরাত নবিশ, ভিনদেশী বংশোদ্ভূত সব খেলোয়াড় নিয়ে গড়া তাদের দল। এমনিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তবু আজ নেপিয়ারে আমিরাতকে পার্থক্য বোঝাতে চায় পাকিরা! পেছনের কারণটা অনুমেয়। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ায় গ্রুপ-পর্ব থেকেই বিদায়ের খ—গ ঝোলে মিসবাহ-উল হকদের মাথায়। এরপর দুর্বল জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ২০ রানের ঘাম ঝরানো জয়ে রেসে টিকে থাকা। নিজেদের স্বার্থেই পাকিরা আজ তাই পার্থক্যটা তুলে ধরতে মরিয়া। নেপিয়ারে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায়। ‘আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই এখন নক-আউট। ভাবার সুযোগ নেই। উত্তরোত্তর ভাল করতে হবে। আরব আমিরাতের বিপক্ষে কেবল জয় নয়, খেলতে হবে সেরা ক্রিকেট। বোর্ডে বড় রান জমা করতে ব্যাটসম্যানদের হতে হবে দায়িত্বশীল।’ বলেন অধিনায়ক মিসবাহ। কেবল জয়ই নয়, খেলতে হবে সেরা ক্রিকেটÑ অধিনায়কের এমন বক্তব্যেই তাদের চাওয়াটা ফুটে ওঠে। ইমরান খানের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে একবারই শিরোপা জেতে পাকিস্তান, সেটি এই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। এবার তাই দলটির ওপর বাড়তি দৃষ্টি। তাছাড়া গত বছর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ দুটি সিরিজ খেলে মিসবাহর দল। কিন্তু মূল লড়াইয়ে এসে খেই হারায়। চিরশত্রু ভারতের কাছে ৭৬ রানের হার দিয়ে শুরু, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৫০ রানের লজ্জা। ২৩৫ রানের পুঁজি নিয়ে বোলারদের নৈপুণ্যে জিম্বাবুইয়েকে ২০ রানে হারিয়ে মূলত আসরে শেষ আটের আশা জিইয়ে রাখে পাকিরা। প্রতিপক্ষকে হাল্কাভাবে না নিয়ে তাই পরিস্থিতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মিসবাহ। ৩ ম্যাচ থেকে ১ জয়ে ২ পয়েন্ট পাওয়া পাকিস্তান আছে পুল ‘বি’এর তলানিতে, সাত দলের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে। একমাত্র ৩ ম্যাচের সবটিতে হারা এই আমিরাত ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে ও পাকিস্তানÑ তিন দলের যে কারওই কোয়ার্টারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। শীর্ষ দু’দল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ আট প্রায় নিশ্চিত। ‘আসলেই তাই। পুল-বি থেকে শেষ আটের পথটা সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কোন কিছুই ঘটতে পারে। আপনি কার বিপক্ষে খেলছেন এটা বিষয় নয়, পুলের বাকি প্রত্যেকটা ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য জয়, পাশাপাশি ভাল খেলা। নিজেদের পূর্ণ শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হওয়া।’ যোগ করেন মিসবাহ। পুল ‘বি’এ আমিরাতই একমাত্র দল যারা তিন ম্যাচে এখনও জয়ের দেখা পায়নি। জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ড ও সর্বশেষ ভারতের কাছে ৪, ২ ও ৯ উইকেটে হারে তারা। একটি ইন্টারেস্টিং বিষয় সামনে উঠে আসছে। ২০০৯-এর মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ। কোন দলই আর সে দেশ সফর করেনি। এ সময়ে নিজেদের ম্যাচগুলো আরব আমিরাতেই খেলে আসছে পাকিস্তান। এক অর্থে আমিরাত পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দ্বিতীয় ‘হোম ভেন্যু’, শারজাহ-আবুধাবিতে ম্যাচ মানে অগণিত আমিরাতির হাতে পাকিস্তানের পতাকা। বিশ্বকাপে আজকের ম্যাচ তাই নিজ ঘরে অন্য-যুদ্ধ! অধিনায়ক মিসবাহও বিষয়টি স্মরণ করে বলেন, ‘সত্যি বললে আমিরাতের কাছে পাকিস্তান ক্রিকেট ঋণী। দেশটি থেকে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। আমিরাতের মাটিতেই টেস্টে ইংল্যান্ডকে হেয়াইটওয়াশ করেছি, অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি। দারুণ সব স্মৃতি।’ পাকিস্তানীদের হারে হারে চেনেন আমিরাতিরা। বিষয়টি বিপদের কারণ হবে কিনাÑ এমন প্রশ্নে তিনি আরও যোগ করেন, ‘ওরা আমাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে দুবাইয়ে খেলেছে। তারা যেমন আমাদের, তেমনি আমরাও তাদের ভালভাবে চিনি। অবশ্যই বিশেষ কিছু পরিকল্পনা থাকবে।’ আমিরাতের বর্তমান দলটির ৯ জনই পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার!
×