ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় দফায় দ্য ব্লুজদের দায়িত্ব নেয়ার পর মরিনহোর প্রথম শিরোপা

লীগ কাপে চেলসি চ্যাম্পিয়ন টটেনহ্যামকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩ মার্চ ২০১৫

লীগ কাপে চেলসি চ্যাম্পিয়ন টটেনহ্যামকে হারিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আধিপত্য বিস্তার করে খেলেও কোন ফায়দা হয়নি টটেনহ্যাম হটস্পারের। প্রতিপক্ষ কোচ জোশে মরিনহোর কৌশলের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে স্পার্সদের। রবিবার রাতে ইংলিশ লীগ কাপ ফুটবলের ফাইনালে টটেনহ্যামকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জয়ের হাসি হেসেছে চেলসি। লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দ্য ব্লুজদের হয়ে একটি গোল করেন অধিনায়ক জন টেরি। অপর গোলটি আসে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকারের আত্মঘাতীর সৌজন্যে। দ্বিতীয় দফায় চেলসির দায়িত্ব নেয়ার পর এটি কোচ জোশে মরিনহোর প্রথম শিরোপা। স্পেশাল ওয়ানের অধীনে এটি ব্লুজদের তৃতীয় লীগ কাপ জয়। এর আগে ২০০৪-০৫ ও ২০০৬-০৭ মৌসুমেও মরিনহোর অধীনে লীগ কাপ জয় করেছিল স্টামফোর্ড ব্রিজের দলটি। মরিনহো চলে যাওয়ার পর মর্যাদার এই আসরে আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ব্লুজরা। অবশেষে আট বছর পর সেই মরিনহোর নেতৃত্বেই শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেছে চেলসি। সবমিলিয়ে এটি চেলসির পঞ্চম লীগ কাপ জয়। আর দুই মেয়াদ মিলিয়ে মরিনহো চেলসিকে উপহার দিলেন সাতটি শিরোপা। এর আগে প্রথম মেয়াদে ছয়টি শিরোপা জয় করেছিল ইংলিশ পরাশক্তিরা। দ্বিতীয় দফায় আসার পর সাফল্য পাচ্ছিলেন না কিছুতেই। প্রথম বছর সাফল্যহীন থাকার পর চলতি মৌসুমে দলকে দারুণ সাফল্যে রেখেছেন পর্তুগীজ লৌহমানব। এই ধারাবাহিকতায় লীগ কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলেও শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে আছে চেলসি। প্রথম দফায় চেলসির হয়ে মরিনহোর জেতা ছয়টি শিরোপা হলোÑদু’টি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ (২০০৪-০৫, ২০০৫-০৬), একটি এফএ কাপ (২০০৬-০৭), দু’টি লীগ কাপ (২০০৪-০৫, ২০০৬-০৭) ও একটি কমিউনিটি শিল্ড (২০০৫)। এদিকে, অধিনায়ক জন টেরিও অসাধারণ রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছেন। চেলসির হয়ে দীর্ঘ ১৭ মৌসুম খেলে সর্বোচ্চ ১৫টি শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তারকা এ মিডফিল্ডার। ব্লুজদের সঙ্গে আত্মার বন্ধন তৈরি হওয়া টেরি ২০১২ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল থেকে চেলসির সঙ্গে যে বন্ধনে জড়িয়েছেন তা এখনও ছেদ পড়েনি। ১৯৯৮ সাল থেকে ব্লুজদের সিনিয়র ক্লাবে খেলে যাচ্ছেন বুক চেতিয়ে। ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা চেলসিকে উপহার দিয়েছেন আরও একটি শিরোপা। নিরপেক্ষ ভেন্যু ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই চেলসির ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে টটেনহ্যাম। কিন্তু নিজেদের ভুলে দুই গোল খেয়ে শিরোপাবঞ্চিত হয় তারা। গোলশূন্যভাবেই শেষ হতে যাচ্ছিল প্রথমার্ধের খেলা। কিন্তু ৪৫ মিনিটে রক্ষণভাগের ভুলের সুযোগে জন টেরি গোল করে চেলসিকে এগিয়ে নেন। ডান দিক দিয়ে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার উইলিয়ানের ফ্রিকিকে হেড করেছিলেন টটেনহ্যামের ইংলিশ ডিফেন্ডার ড্যানি রোজ। কিন্তু বল টটেনহ্যামের আরেক খেলোয়াড় হ্যারি কেইনের গায়ে লেগে টেরির কাছে চলে যায়। সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি অভিজ্ঞ এ খেলোয়াড়। প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক। এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় চেলসি। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে আবারও হতাশায় ডুবতে হয় টটেনহ্যামকে। এবার নিজেদের জালেই বল জড়ায় তারা। চেস ফেব্রিগাসের পাস পেয়ে বামপ্রান্ত থেকে শট নিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড দিয়াগো কোস্টা। সেটা প্রতিহত করতে যান টটেনহ্যামের ইংলিশ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার। কিন্তু তার দুর্ভাগ্য, বল ঠিকমতো ক্লিয়ার না হওয়ায় দিক পাল্টে নিজেদের জালেই প্রবেশ করে। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে মুহুমুর্হু আক্রমণ শানায় এরিকসন, চাডলি, কেনরা। কিন্তু চেলসির অটুট রক্ষণভাগের কারণে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি তারা। শেষ পর্যন্ত তাই প্রায় ৯০ হাজার দর্শকের সামনে শিরোপা জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি। ম্যাচ শেষে বিজয়ী দলের কোচ জোশে মরিনহো বলেন, এটা আমার জন্য ও দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই শিরোপা সবাইকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে।
×