ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রোটিয়াদের সামনে আজ আইরিশ চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩ মার্চ ২০১৫

প্রোটিয়াদের সামনে আজ আইরিশ চ্যালেঞ্জ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ আইসিসির সহযোগী দেশ থেকে এবারের বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করছে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, আরব আমিরাত ও আফগানিস্তান। উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে নিজেদের আলাদা করে মেলে ধরেছে আয়ারল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের দল, এরপর আমিরাত-সাফল্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও জিম্বাবুইয়েকে পেছনে ফেলে পুল ‘বি’এর তৃতীয় স্থানে আইরিশরা। ৩ খেলায় ২ জয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রবল প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য প্রথম শিরোপা, আসরের হট-ফেবারিট তারা অথচ পুঁচকে আইরিশদের নিয়েও এবি ডিভিলিয়ার্সদের ভাবতে হচ্ছে। টানা দুই সাফল্যে প্রোটিয়াদের সামনে আজ চ্যালেঞ্জ হিসেবেই আবির্ভূত হচ্ছে আয়ারল্যান্ড! নিদেন ভাল খেলাই যাদের লক্ষ্য সেই আইরিশদের চোখ এখন কোয়ার্টার ফাইনালে! দলটির কথা বলতে গেলে উইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের কীর্তি উল্লেখ করতে হয়। নেলসনে কী খেলাটাই না খেলেছে তারা! সেদিন অবিশ্বাস্য কা-ই করে বসে আইসিসি সহযোগী দেশটি। ক্যারিবীয়রা ৩০৪ রান করলে অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন একতরফাভাবে জিতবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু পল স্টারলিং, এড জয়েস ও নাথান ও’ব্রায়েনের তিন-তিনটি ম্যারথন হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ইতিহাস রচনা করে আয়ারল্যান্ড। ১৩ ওভারে ৭১, এরপর ২ উইকেটে ১৭৭, ৩ উইকেটে ২৭৩! ম্যাচের নায়ক স্টারলিং ৮৪ বলে ৯২, অপর দুই তারকা এড জয়েস ৬৭ বলে ৮৪ ও নাথান ও’ব্রায়েন ৬০ বলে অপরাজিত থাকেন ৭৯ রানে। ৪.১ ওভার হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আইরিশরা! বিশ্বকাপে আরও এক চমক সৃষ্টি করে তারা। বিশ্বকাপের তিনবার তিন শ’র বেশি রান টপকে জয় পায় আয়ারল্যান্ড। ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এমন ঘটনা মাত্র পাঁচটি, যার তিনটিতেই নাম তাদের! কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন দেখা আইরিশ অধিনায়ক বলেন, ‘অনেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমাদের জয়কে অঘটন বলছেন। আমি কোনভাবেই তা মনে করি না। আমরা প্রতিটি ম্যাচে জয়ের প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি! লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। দক্ষিণ আফ্রিকা কঠিন প্রতিপক্ষ, তবে নিজেদের প্রত্যেকে সেরাটা দিতে পারলে তাদেরও হারানো সম্ভব! প্রতিটি ম্যাচ ও প্রত্যেক খেলোয়াড় নিয়ে আমাদের আলাদা পরিকল্পনা আছে।’ অবশ্য অপেক্ষাকৃত দুর্বল আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২ উইকেটের জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয় আইরিশদের। বিপরীতে জিম্বাবুইয়েকে ৬২ রানে হারিয়ে প্রত্যাশিত শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা বড় ম্যাচে ভারতের কাছে হারে ১৩০ রানের বিশাল ব্যবধানে! নিজেদের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়ে তুলে নেয় বিশ্বকাপ ইতিহাসে রেকর্ড ২৫৭ রানের বড় জয়। ব্যাট হাতে তা-ব চালান এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৬৬ বলে ১৬২ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ‘সিডনির অভিজ্ঞতা আসলেই দারুণ। সেদিন সবই ছিল অনুকূলে। ঠিক যেভাবে চেয়েছি সেভাবে হয়েছে। শেষ ১৫ ওভারে এত ভাল ব্যাটিং কোন দল খুব কমই করেছে। সব মিলিয়ে এটি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। আশা করছি ভারতের বিপক্ষে হারের দুঃখ ভুলে আমরা এখন আরও উজ্জীবিত হতে পারব।’ অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের স্মৃতি রোমান্থন করে বলেন ডি ভিলিয়ার্স। ৪০৮ রানের বিশাল পুঁজি নিয়ে আড়াই শ’র বেশি ব্যবধানে জয়- সেদিনের অমন পারফর্মেন্সের জন্যই আজ চ্যালেঞ্জটা বেশি তাদের! আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কেবল জিতলেই হবে না, জিততে হবে ভাল খেলে, প্রতিপক্ষকে এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়ে। সেই সামর্থ্য তাদের ভালমতোই রয়েছে। ব্যাট হাতে হাশিম আমলা, ফ্যাফ ডুপ্লেসি, রাইলি রুশো, ডেভিড মিলার প্রত্যেকে ভয়ঙ্কর। বোলিংয়ে প্রতিপক্ষের চেয়ে যোজন এগিয়ে ডেল স্টেইন, মরনে মরকেলরা। ঘূর্ণিজাদুতে কম যাবেন না ইমরান তাহির। আগের ম্যাচে যিনি একাই তুলে নিয়েছেন ক্যারিবীয়েদর ৫ উইকেট। তবে দ্রুতগতির বোলার স্টেইনই হবেন আইরিশ ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় হুমকি। ক্যারিয়ারের ১শ’তম ওয়ানডেকে স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন ৩১ বছর বয়সী সেনসেশনাল পেসার। ওয়ানডেতে দু’দল এ পর্যন্ত মাত্র ৩ বার মুখোমুখি হয়েছে। সবটিতে জয় ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকার। তার মধ্যে দু’বারই বিশ্বকাপে। ২০০৭-এ ৭ উইকেটে ও কলগতায় গতবার ১৩১ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছিল প্রোটিয়ারা।
×