ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোহামেডান-মুক্তিযোদ্ধা ফাইনালে ওঠার লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২ মার্চ ২০১৫

মোহামেডান-মুক্তিযোদ্ধা ফাইনালে ওঠার লড়াই

রুমেল খান ॥ লড়াইটা দশ এবং তিনবারের চ্যাম্পিয়ন দু’দলের মধ্যে। জিতবে কারা? ফেডারেশন কাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে দশবারের শিরোপা জয়ী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব বনাম তিনবারের চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল সোয়া ৫টায় শুরু হবে ম্যাচটি। খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি ওয়ার্ল্ড। ‘আবাহনী-মুক্তিযোদ্ধা দুটিই ভাল দল। দুটি দলেরই খেলা দেখেছি। সেমিতে আমাদের প্রতিপক্ষ তাদের মধ্যে কে হবে, তা নিয়ে ভাবছি না। নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চাই আমরা।’ প্রথম সেমির আগে বাফুফে ভবনে বসে এমনটাই বলেছিলেন মোহামেডানের কোচ কাজী জসিম উদ্দিন জোসি। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা যেভাবে খেলছি, তাতে আমাদের উন্নতি করার আরও অবকাশ আছে। আমরা চাই এ আসরের শিরোপা জিততে।’ মোহামেডানের ম্যানেজার আহমেদ ইমতিয়াজ নকীব বলেন, ‘এটা আমাদের তরুণ দল। এ আসরে ভাল রেজাল্ট করার আশা রাখি। আমরা লড়াই করব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য।’ নিজেদের দলকে ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ দল’ হিসেবে অভিহিত করে নকীব বলেন, ‘এই দলটি থেকে আগামীতে অনেক তারকা খেলোয়াড় বের হবে।’ দলীয় অধিনায়ক-ডিফেন্ডার অরূপ কুমার বৈদ্য বলেন, ‘টার্গেট ফাইনাল খেলা। আমরা যোগ্য দল হিসেবেই সেমিফাইনালে। সেমির ম্যাচে আমাদের লক্ষ্য থাকবে প্রতিপক্ষ দলের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে সেভাবে খেলা।’ মুক্তিযোদ্ধার কোচ আবু ইউসুফ বলেন, ‘সেমির ম্যাচে আমাদের স্ট্র্যাটেজি কেমন হবে, সেটা বিশদভাবে বলা সম্ভব না। মাঠেই প্রমাণ করে দেব খেলে। দলের খেলোয়াড়রা বেশিরভাগই অভিজ্ঞ। তাদের ফিটনেসও ভাল। দলের বিদেশী মুসলিম খেলোয়াড়রা খুবই ডিসিপ্লিন মেনে চলে। নিয়মিত নামাজ পড়ে, যা আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। প্রতিনিয়ত তারা উন্নতি করছে খেলায়। ভাল রেজাল্ট করার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ জাতীয় দলে ডিফেন্ডার পজিশনে খেলা ইউসুফ আরও বলেন, ‘মোহামেডানের খেলা এ টুর্নামেন্টে দেখিনি। তবে তারা অবশ্যই ভাল ও সমীহ জাগানিয়া দল। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা কঠিন। তবে আমি তাদের বিরুদ্ধে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।’ মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড এনামুল হক বলেন, ‘এই ক্লাবে অনেকদিন ধরে খেলছি। এই ক্লাব বরাবরই শিরোপা প্রত্যাশী দল। এ আসরেও আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলছি। দলের খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখা যায়। আমাদের সবার মধ্যে বোঝাপড়াটা অনেক ভাল। এটাই আমাদের ইতিবাচক দিক। আশা করি আমরা ফাইনালে খেলব। এ আসরে আগে দশবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া এবং ঢাকার হাজারীবাগে ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া মোহামেডান ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লেখায়। তাদের সংগ্রহ ছিল ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট। গ্রুপ ম্যাচে তারা ২-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। পরের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের সঙ্গে। কোয়ার্টারে ২-১ গোলে পরাভূত করে ফেনী সকার ক্লাবকে। পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। তারা ২ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে উন্নীত হয়। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে তারা ৪-০ গোলে উত্তর বারিধারাকে হারালেও পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে। শেখ রাসেলেরও তাদের সমান পয়েন্ট ছিল। কিন্তু এক গোল বেশি করায় রাসেলই হয়ে যায় গ্রুপসেরা। কোয়ার্টারে মুক্তিযোদ্ধা ১-০ গোলে হারায় অপর ফেবারিট ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে। ফেডারেশন কাপের ২৭তম আসরে (১৯৮০ সালে এ আসর শুরু হয়। তবে চারবার এ আসরটি অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৮৪ সালে পরিত্যক্ত ১৯৯০, ৯২ ও ৯৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি) মুক্তিযোদ্ধা সাতবার ফাইনাল খেলেছে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তিনবার (১৯৯৪, ২০০১, ০৩)। রানার্সআপ হয়েছে চারবার (১৯৯৯, ২০০২, ০৪, ১৩)। তারাই এ আসরের সর্বশেষ রানার্সআপ (২০১৩ আসরে শেখ জামাল ধানম-ির কাছে হেরে)। পক্ষান্তরে ১৪ বার ফাইনাল খেলেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব মোহামেডান। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১০ বার (১৯৮০, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৭, ৮৯, ৯৫, ২০০২, ০৮, ০৯)। আর রানার্সআপ হয়েছে ৪ বার (১৯৮৮, ৯১, ২০০০, ০৩)।
×