ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকায় প্রথম আধুনিক কসাইখানা উদ্বোধন আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২ মার্চ ২০১৫

ঢাকায় প্রথম আধুনিক কসাইখানা উদ্বোধন আজ

মশিউর রহমান খান ॥ দেশে প্রথমবারের মতো পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। যত্রতত্র পশু জবাই নিয়ন্ত্রণ ও জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যকর মানসম্মত হালাল মাংসপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এ কসাইখানা নির্মাণ করা হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে ১১নং সেকশনে এ কসাইখানাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এ কসাইখানার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৮০-১১০টি গরু, মহিষ ও ছাগল বা ভেড়া জবাই করা হবে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাংস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মিরপুরবাসীর বহু প্রতীক্ষিত এ পশু কসাইখানা আজ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ডিএনসিসি প্রশাসক ড. রাখাল চন্দ্র বর্মন এটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম সরকারী উদ্যোগে নির্মিত আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত পশু কসাইখানা। ইসলামিক রিলিফ ইউএসএ’র আর্থিক সহযোগিতা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মিরপুর ১১নং সেকশনের নিউ সোসাইটি মার্কেটে। ইসলামিক রিলিফ সূত্র জানায়, বিশ্বের প্রধান রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি বা (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন) ফুড পয়জনিং নিয়ন্ত্রণে কসাইখানার স্বাস্থ্যকর দিকটি নিশ্চিত করতে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দিয়েছে। অন্যদিকে পশু বিজ্ঞানীদের মতে মাংস বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করা হলে এসব রোগজীবাণু মাংসের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকেন মাংস ব্যবসায়ী। পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১ অনুসারে কসাইখানা পশু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে আনীত পশু এবং জবাই-পরবর্তী পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে এ আইনে বিধান রাখা হয়েছে। এ কসাইখানার মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্নতায় নাগরিকগণ মানসম্মত মাংস পেতে পারবেন। তাছাড়া যত্রতত্র পশু জবাই না করে একটি নির্দিষ্ট গ-ির ভেতরে পশু জবাই করলে তা পরিবেশ রক্ষার সহায়ক হবে। আধুনিক এই জবাইখানায় পশুর রক্ত, নাড়ি-ভুঁড়ি, ও অন্যান্য বর্জ্যসমূহ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করার ব্যবস্থা রয়েছে। বৃষ্টির পানি ধরে তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এই বৃষ্টির পানি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহসহ জবাইখানায় পানির সঙ্কট দূর হবে। প্রতিটি গরু জবাই করার আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রয়েছে। এ কসাইখানাটি চালু হওয়ার পর নতুন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি মিরপুরবাসীর জন্য পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মত হালাল উপায়ে মাংস প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ড. রাখাল চন্দ্র বর্মন বলেন, এখন থেকে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১১০টি পশু জবাইয়ের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ মানুষকে নিরাপদ মাংস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ এলাকায় এরকম আরও কয়েকটি পশু জবাইখানা নির্মাণের চিন্তা করছে।
×