ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনাকাক্সিক্ষত কর্মকাণ্ড বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে অর্থনীতিতে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২ মার্চ ২০১৫

অনাকাক্সিক্ষত কর্মকাণ্ড বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে অর্থনীতিতে ॥ অর্থমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সাবলীয় ধারায় এগিয়ে যাচ্ছিল দেশের অর্থনীতি। এ সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতির প্রায় সকল সূচকেই আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছিল। সকল ক্ষেত্রেই অর্থনীতিতে গতিশীলতার সঞ্চার হচ্ছিল। এই ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু বছরের প্রথম থেকে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর যে অনাকাক্সিক্ষত কর্মকা- শুরু হয়েছে তা সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রক্ষেপণে খানিকটা পরিবর্তন আনা দরকার হতে পারে। রবিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।সরকারী দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের অপর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা দেশের অর্থনীতিকে অনেকখানি ক্ষতি করলেও ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক সংস্কার দেশকে সত্যিই এক সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করে দিয়েছিল। ফলে বিশ্ব অর্থনীতির নাজুক অবস্থা আর দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার মাঝেও গত অর্থবছরে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। যা এ সময়ে অর্থনীতির শক্ত ভিত রচিত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করে। সরকারের জনকল্যাণমূলক উন্নয়ন কৌশলই বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান সময়ে বাংলাদেশকে এই প্রশংসনীয় অর্জনের রেকর্ড স্থাপনে সহায়তা করেছে। অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত (২০০৯-১৪) পাঁচ বছরে আর্থসামাজিক খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে এবং এই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, খাদ্যশস্য উৎপাদন, মূল্যস্ফীতি, আমদানি, রফতানি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রা বিনিময় হারসহ সকল অর্থনৈতিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০০৯-১৪ মেয়াদের ৫ বছর সারা বিশ্ব ছিল মন্দার কবলে, অথচ পূর্ববর্তী নিয়মিত সরকারের (বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার) ৫ বছর ছিল বিশ্ব প্রবৃদ্ধির অনন্য সময়। তা সত্ত্বেও ২০০১-২০০৬ (বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার) সময়ের তুলনায় ২০০৯-১৪ (আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার) সময়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে ৬ গুণের বেশি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ব্যাংক এশিয়া ৩০টি এবং ডাচ্্-বাংলা ব্যাংক ৪টি এজেন্ট বর্তমানে দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, রাষ্ট্র মালিকানাধীন এবং অন্যান্য বেসরকারী ব্যাংকসমূহের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচীর আওতায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিনা সুদে ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
×