ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিএমএম আদালত পুলিশকে এ নির্দেশ দিয়েছে ;###;খালেদা গ্রেফতার হলে বিকল্প পরিকল্পনা বিএনপির

খালেদার অফিসে বিস্ফোরক থাকতে পারে ॥ তল্লাশির নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২ মার্চ ২০১৫

খালেদার অফিসে বিস্ফোরক  থাকতে পারে ॥ তল্লাশির নির্দেশ

শরীফুল ইসলাম ॥ টানা আন্দোলন কর্মসূচী চলতে থাকলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কোন এক সময় গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে এবার বিএনপির হাল ধরবেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমান। তবে সে ক্ষেত্রে দল পরিচালনা ও আন্দোলন কর্মসূচী পালনের নির্দেশনার দায়িত্ব লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমানের হাতেই থাকবে বলে জানা গেছে। এদিকে রবিবার খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশি চালানোর ব্যাপারে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। খালেদা জিয়া যে গ্রেফতার হতে পারেন সে পূর্বাভাস পুলিশকে দেয়া আদালতের এ নির্দেশ থেকেই বোঝা যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকেই খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমানকে বিএনপির হাল ধরতে বিভিন্ন মহল থেকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু জোবাইদা রহমান কিছুতেই রাজনীতিতে আসতে রাজি না হওয়ায় সে যাত্রায় তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হন। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর দলের একটি বড় অংশ তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমানকে রাজনীতিতে নিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করে। সূত্র মতে, চলমান টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচী এভাবে চলতে থাকলে সরকার আদালতের রায়কে কাজে লাগিয়ে কোন এক সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করবে। আর তা হলে বিএনপি অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়বে। কারণ দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ বেশ ক’জন সিনিয়র নেতা কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ সিনিয়র নেতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর যারা পলাননি তারা ঝামেলা এড়াতে আপাতত দলীয় কর্মকা-ে জড়াচ্ছেন না। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে চিকিৎসাধীন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তিনি এখন দেশে আসলে গ্রেফতার হয়ে যাবেন। এ কারণে আপাতত তার দেশে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির একটি বড় অংশ চাচ্ছে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়ে গেলে ক্লিন ইমেজের অধিকারী তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে দলের হাল ধরাতে। রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা না থাকলেও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী হওয়ায় সবাই তার নেতৃত্ব মেনে নেবে। এক্ষেত্রে দুর্দিনে দলের ঐক্য বজায় রাখাও সম্ভব হবে। তবে সেক্ষেত্রে দল পরিচালনা ও আন্দোলনের বিষয়ে তার স্বামী তারেক রহমান দিকনির্দেশনা দিলে জোবাইদা রহমানের তেমন কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না। জানা যায় আগে রাজনীতিতে আসতে রাজি না থাকলেও বিএনপি ও পরিবারের বর্তমান অবস্থার আলোকে ডাঃ জোবাইদা রহমান দলের হাল ধরতে আর আপত্তি করবেন না। তবে তার স্বমী তারেক রহমান কখনও দেশে ফিরে এসে রাজনীতিতে হাল ধরতে পারলে ডাঃ জোবাইদা আর রাজনীতি করবেন না বলে জানা গেছে। এদিকে ৫৮ দিন ধরে চলা বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতালে সফলতার মুখ দেখতে সক্ষম হয়নি বিএনপি। তাই এখন তাদের রাজনৈতিক কৌশল কী হবে, বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চললেও আন্দোলন যে থামবে না, তা স্পষ্ট। বিশেষ করে ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর দলীয় হাইকমান্ড থেকে দলের সকল স্তরে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে যে কোনভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়ে গেলে লন্ডন থেকে তারেক রহমান আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন। তবে সেক্ষেত্রে তারেক রহমান তার স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমানকে দেশে পাঠিয়ে দলের নেতৃত্ব তার হাতে তুলে দেবেন। আর তথ্যপ্রযুক্তির যুগে স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে জোবাইদা রহমানকে দলের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে কোন বেগ পেতে হবে না বলে বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন। জানা যায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর দেশে আসতে চেয়েছিলেন ডাঃ জোবাইদা রহমান। কিন্তু একপর্যায়ে তারেক রহমানই দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় জোবাইদাকে দেশে আসতে বারণ করেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার পর তারেক রহমান তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। এখন তিনিই স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে দেশে আসার ব্যাপারে প্রস্তুত থাকতে মতামত দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে ডাঃ জোবাইদা রহমান তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। ৩ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া বাসা ছেড়ে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমানে তার বাসায় থাকার মতো কোন লোক নেই। আর দলীয় কার্যালয়েও নিকটাত্মীয়দের কেউ নেই। যারা আছেন তারাও খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে নিরাপদে চলে যাবেন। তখন দল পরিচালনার জন্য কোন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে। এই উপলব্ধি থেকে খালেদা জিয়া নিজেও তার অনুপস্থিতিতে দলের হাল ধরার জন্য তারেক রহমানের স্ত্রীকে নিয়ে চিন্তা করছেন বলে জানা যায়। গ্রেফতারের আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খালেদা জিয়া তার পুত্র বধু ডাঃ জোবাইদা রহমানকে দলের হাল ধরার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। প্রসঙ্গত ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাসদস্যের হাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে দলে যোগ দেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরে চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেন তিনি। রাজনীতিতে আসার পর বিভিন্ন সময়ে চারবার গ্রেফতার হন খালেদা জিয়া। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নবেম্বর প্রথম, ১৯৮৪ সালের ৩ মে দ্বিতীয়বার, ১৯৮৭ সালের ১১ নবেম্বর তৃতীয়বার এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে গ্রেফতার হন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ২০০৭ সালে গ্রেফতার হয়ে এক বছর কারাগারে থাকলেও কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেননি খালেদা জিয়া। অবশ্য ওই সময় দলের গঠনতন্ত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিধান ছিল না। পরে ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিধান রাখা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারপার্সনের অবর্তমানে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও। যেহেতু তারেক রহমান এখন দেশে আসতে পারছেন না। তাই তার সম্মতিতে ডাঃ জোবাইদা রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব দিতে পারবেন। অথবা খালেদা জিয়া ওয়ান-ইলেভেনের সময় গ্রেফতার হওয়ার আগে যেভাবে আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঠিক একইভাবে ডাঃ জোবাইদা রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে পারবেন। দলের গঠনতন্ত্রেও আছে চেয়ারপার্সন তার একক ক্ষমতাবলে যে কোন সময় যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এদিকে খালেদা জিয়াকে যে কোন সময় গ্রেফতার করা হতে পারে এমন সম্ভাবনাকে ধরে নিয়েই এখন বিএনপি জোট তাদের আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। তবে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়ে গেলেও বিএনপি জোটের আন্দোলন কর্মসূচী আপাতত থেমে যাবার কোন লক্ষণ নেই। জানা যায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও ৪ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানির দিন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে যাবেন না বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তবে তার আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে না যাওয়ার কারণ জানানোর চেষ্টা করবেন খালেদা জিয়া। অবশ্য ইতোমধ্যেই খালেদা জিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে আবেদন করেছেন। এ আবেদনের রায় কি আসে এখন তা দেখার অপেক্ষায় খালেদা জিয়া। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে গ্রেফতার হন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে কিছুদিন বঙ্গবন্ধু চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তারেক রহমানকে হাসপাতালে দেখতে যান। ওই দিনই স্ত্রী ডাঃ জোবাইদা রহমান ও একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমানক সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে চলে যান তারেক রহমান। তারেক রহমানের সঙ্গে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানকারী ডাঃ জোবাইদা রহমান খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে দেশে ফিরে আসার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন ডাঃ জোবাইদা রহমান। তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে যাওার আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা হিসেবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এমডি কার্ডিওলজি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন ডাঃ জোবাইদা রহমান। ২০০৮ সালের অক্টোবার পর্যন্ত তার ছুটি মঞ্জুর ছিল। সরকারী চাকরি বিধির ৩৪ ধারা অনুসারে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তার চাকরিচ্যুতির নিয়ম রয়েছে। তাই ছুটি শেষ হওয়ার ৫বছর ১০ মাস পর ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট ডাঃ জোবাইদা রহমানকে চাকরিচ্যুত করে সরকার। ডাঃ জোবাইদা রহমান প্রয়াত নৌবাহিনীপ্রধান রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খানের বড় মেয়ে। তার মা ইকবাল মান্দ বানু বর্তমানে ধানম-ির নিজ বাসায় বসবাস করছেন। ডাঃ জোবাইদা রহমানের একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমান বর্তমানে লন্ডনে পড়ালেখা করছেন। তাই বিএনপির হাল ধরার জন্য জোবাইদা রহমান দেশে ফিরে এলে মেয়ে জাইমা রহমান তার বাবা তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে থেকে যাবেন বলে জানা গেছে। খালেদার কার্যালয়ে তল্লাশির আদেশ ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশির চালানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গুলশান থানার একটি মামলায় রবিবার বিকেলে পুলিশকে এ নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালত। আদালতের একটি সূত্র জানায়, ঢাকা জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর দায়ের করা (২৫ (২) ১৫) নম্বর মামলায় খালেদা জিয়া এজাহারনামীয় আসামি। গুলশান কার্যালয়ে তিনি লুকিয়ে আছেন এবং সেখানে নাশকতার জন্য বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কার্যালয়ে তল্লাশির জন্য আদালতে অনুমতি প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে বিচারক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মাসুদ জামান তল্লাশির আদেশ দেন। মামলাটির আসামি খালেদা জিয়াসহ ১৪ জন। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে ও হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচীতে দু’দফা ককটেল হামলায় আহত হন ৬ জন। এ ঘটনায় ঢাকা জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাচ্চু মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য ১৩ জন আসামি হচ্ছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী এ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, হুমায়ুন কবির, এমএ কাইয়ুম, দেওয়ান সালাউদ্দিন, মোস্তফা, মামুন ও মানিক। তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি ফিরোজ কবির গতকাল আদালতে তল্লাশির আবেদন জানান। তিনি শুনানির সময় বলেন, খালেদা জিয়াসহ মামলাটির অন্য আসামিরা কার্যালয়টিতে পালিয়ে আছেন। নাশকতার কাজে ব্যবহার হতে পারে এ ধরনের বিস্ফোরক বা অন্যসব দ্রব্যও সেখানে মজুদ থাকতে পারে। এ জন্য কার্যালয়টিতে তল্লাশি করা প্রয়োজন। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এ পরোয়ানা জারি করা হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৬৩ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র ৭টি দিবস আদালতে হাজির ছিলেন। গত বুধবার ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার আবেদনের শুনানিকালে ওই তথ্য প্রকাশ করেন। এদিন এ মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক খালেদা জিয়াসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এদিকে সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া তার নিজ চেম্বারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এর আগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ও রবিবার সিএমএম আদালতের দেয়া তল্লাশি পরোয়ানা একই সূত্রে গাঁথা। এ সময় খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ঢাকা বারের নবনির্বাচিত সভাপতি ও বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, লুকোচুরি করে আদালতের তল্লাশি পরোয়ানা জারি করা আইনের বিধানের পরিপন্থী।
×