ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোলারে আলোকিত গ্রামীণ জনপদ

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১ মার্চ ২০১৫

সোলারে আলোকিত গ্রামীণ জনপদ

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ টিআর-কাবিখা মানেই অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থা। জনমনে যুগ যুগের এ ধারণা এবার অনেকটাই বদলে দেয়া হয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা গলাচিপায়। টিআর-কাবিখার বরাদ্দ দিয়ে কথিত রাস্তাঘাট সংস্কার কিংবা মেরামতের পরিবর্তে সোলারের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে বিদ্যুতের আলো বঞ্চিত প্রত্যন্তের গোটা এলাকা। গ্রামীণ হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দির-মসজিদ, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত সর্বত্র স্থাপন করা হয়েছে সৌর প্যানেল। যার আলোয় বেড়েছে কাজের ব্যাপ্তি। মানুষ পাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তিগত নানাবিধ সহায়তা। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আখম জাহাঙ্গীর হোসাইনসহ বর্তমান সরকার পাচ্ছেন আবাল বৃদ্ধ বণিতার অকুন্ঠ প্রশংসা। কর্তৃপক্ষ সূত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে উপজেলায় কাবিখা-টিআর খাতে বরাদ্দের মধ্যে ২৫৮ টন চাল দিয়ে ১২২ মন্দির-মসজিদ, ১৫ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৬৯ হাটবাজারে ১২৭টি সোলার সিস্টেম স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সোলার প্যানেল স্থাপনে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত এলাকাগুলোকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে আশু বিদ্যুত সংযোগের সম্ভাবনা নেই। কলাগাছিয়া, খারিজ্জমা, বকুলবাড়িয়া, চরকাজল, চরবিশ্বাসসহ উপজেলার কয়েকটি দূরবর্তী ইউনিয়নের হাটবাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পেয়ে এলাকার মানুষ উচ্ছ্বসিত। গাঁয়ের হাটবাজারগুলোর অন্ধকার ঘুচে গেছে। মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত হাটবাজারে সময় কাটাচ্ছে। রেডিও টিভির মাধ্যমে দেশ-বিদেশের খবর নিচ্ছে। চায়ের দোকানে জমছে আড্ডা। কমছে অপরাধ প্রবণতা। মন্দির-মসজিদগুলোতে রাত-বিরাতেও মানুষ অবাধ যাতায়াত করছে। বাড়ছে পূজা-পার্বণ। মানুষ নির্বিঘেœ নানা উৎসবে যোগ দিচ্ছে। আর সবচেয়ে বেশি সুফল পাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। রোগাক্রান্ত মানুষ যখন তখন ছুটছে কমিউনিটি ক্লিনিকে। নিচ্ছে চিকিৎসা সেবা। বোয়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডার রেহেনা পারভিন জানান, সৌর বিদ্যুত স্থাপন করায় চিকিৎসা সেবায় অনেক গতি এসেছে। গভীর রাতেও নিরাপদ প্রসবের জন্য এখানে নারীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। আরও কয়েকজন হেলথ প্রোভাইডার জানান, সৌর আলোর কারণে তারা এখন রাত ৯-১০টা পর্যন্ত রোগী দেখেন।
×