ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে দিল্লীর সামরিক অভিযানের পরিণতি হবে ভয়াবহ’

পাকিস্তান ভারত ॥ পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১ মার্চ ২০১৫

পাকিস্তান ভারত ॥ পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

ভারতে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা পরমাণু যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যদি পাকিস্তানী ভূখ- থেকে পরিচালিত কোন বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারত পাকিস্তানের ওপর ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায়। দু’শীর্ষ আমেরিকান বিশেষজ্ঞ কংগ্রেস সদস্যদের উদ্দেশে এ হুঁশিয়ারি দেন। দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ঐ দু’বিশেষজ্ঞ জর্জ পারকোভিচ ও এ্যাশলি টেলিস চলতি সপ্তাহে সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী কমিটির এক সাব-কমিটির শুনানিতে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন। খবর পিটিআই ও ডন অনলাইনের। নয়াদিল্লীতে এক শক্তিশালী সরকার ক্ষমতাসীন রয়েছে এবং ২৬/১১ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটলে ভারতীয় নাগরিকদের কাছ থেকে সরকারের ওপর চাপ আসবে। এ অবস্থায় দু’প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দিয়ে এক ভয়াবহ পরমাণু যুদ্ধের সূচনা করতে পারে, বিশেষত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। পাকিস্তানী ভূখ- থেকে যাতে ভারতের ওপর আর কোন বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা পরিচালিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাজ করার মাধ্যমেই কেবল এরূপ কোন বিপজ্জনক পরিণতি এড়ানো যেতে পারে, বিশেষজ্ঞরা একথা বলেন। পারকোভিচ বলেন, পূর্বানুমানযোগ্য ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়াতেই পরমাণু অস্ত্র বিস্ফোরিত হওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতার অস্বাভাবিক ঘটনাবলী থেকেই এ ঝুঁকির উদ্ভব হয়। পারকোভিচ কার্নোসি এনডাওমেট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসে কর্মরত। তিনি বলেন, পাকিস্তান থেকে ভারতে পরিচালিত পরবর্তী বড় ধরনের হামলা ভারতকে প্রচলিত বাহিনী দিয়ে সামরিক জবাব দিতে প্রবৃত্ত করতে পারে। এটি আবার পাকিস্তানকে কোন ভারতীয় আক্রমণ প্রতিহত করতে রণক্ষেত্রে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে উত্তেজিত করতে পারে। ভারত ও এর ভূখ- বা সৈন্যদের বিরুদ্ধে যে কোন পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের ব্যাপক প্রতিশোধ নেবে বলে ইতোপূর্বে ঘোষণা করে। পারকোভিচ বলেন, স্পষ্টত এ বিপজ্জনক অবস্থায় সন্ত্রাসবাদ প্রচলিত অস্ত্রের সংঘর্ষ এবং এরূপ সংঘর্ষ পরমাণু যুদ্ধ উসকে দিতে পারে। এ পরিস্থিতি ভারত ও পাকিস্তানের নীতি নির্ধারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে খাটো করে দেখাতে বা উড়িয়ে দিতে চায়, কিন্তু আমাদের মতে, ওইসব বিপদ নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র বাইরের শক্তি যা কোন সঙ্কট প্রশমিত করতে কূটনৈতিক ও জোরালোভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে। টেলিস বলেন, এরূপ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার এবং তৎপর ভারতের পরমাণু অস্ত্রের পাল্টা ব্যবস্থার নিবৃত্ত করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়া বন্ধ করতে পাকিস্তানের ওপর চাপ দিতে হবে। নয়তো কোন ধ্বংসাত্মক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালালে পাকিস্তানকে একঘরে হয়ে পড়া বা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ার ঝুঁকি নিতে হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানকে জানিয়ে দিতে হবে। এভাবেই যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। তিনি বলেন, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র দুটি অসম আয়তনের রাষ্ট্রকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে সামান্য কিছুই করতে পারে। উভয় বিশেষজ্ঞই সিনেট সাব-কমিটিকে বলেন যে, পাকিস্তানের এখন ভারতের চেয়ে বেশিসংখ্যক পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। উভয়ই কার্নেসিতে কর্মরত। এলইটিই অস্বস্তির উৎস ॥ লস্কর-ই-তৈয়বাকে (এলইটি) পাকিস্তানের আশ্রয়দান ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অস্বস্তির অন্যতম উৎস হয়ে থাকবে। ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জেমস ক্ল্যাপার ‘বিশ্বের হুমকি নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা মহলের মূল্যায়ন’ বিষয়ে তার দেয়া সাক্ষ্যে একথা দাবি করেন। ক্ল্যাপার বলেন, ২০১৫ সালে পাকিস্তান সরকার সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবানের শক্তি হ্রাস করার দিকে দৃষ্টি দেবে। দলটি ডিসেম্বরে এক স্কুলে হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে। এতে একশ’য়েরও বেশি শিশু নিহত হয়েছিল।
×