ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ॥ তোফায়েল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী কর্মকা- চালিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তবে আবারও তিনি পরাজিত হবেন। জনগণের কাছে আত্মসমর্পণে তিনি বাধ্য হবেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে সহিংসতা চালিয়ে বিএনপি নেত্রী যেমন পরাজিত হয়েছেন, ঠিক তেমনি আগামী দিনেও তাঁর পরাজয় ঘনিয়ে আসছে। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘মাতৃভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে দেশরতœ শেখ হাসিনার অবদান’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। স্মৃতিচারণ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় গ্রেফতার করে ক্যান্টনমেন্ট থানায় আমাকে কিভাবে রেখেছিল, তা এখনও আমার মনে আছে। রাজনীতি কত কঠিন! তখন যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের গাড়িতে পতাকা আর আমার হাতে হাতকড়া! এটাই করেছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শান্তির পক্ষে, দেশের মানুষের পক্ষে কাজ করছে। অন্যদিকে খালেদা জিয়া নাশকতা ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের আন্দোলন করছেন। সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরাজয় নিশ্চিত জেনে তাঁকে রক্ষার জন্য অনেকে সংলাপের কথা বলছেন। সংলাপ কাদের সঙ্গে হবে? সন্ত্রাসীর সঙ্গে যদি সংলাপ হতো, তাহলে আইএস, আল কায়েদা, তালেবানের সঙ্গে সংলাপ হতো। তিনি বলেন, ফ্রান্সে পত্রিকা অফিসে যারা গুলি করেছে, তাদের গুলি করে মারা হয়েছে। কোপেনহেগেনে, অস্ট্রেলিয়ায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় সন্ত্রাসীরা যা করেছে, তাদের সঙ্গে একই আচরণ করা হচ্ছে। সন্ত্রাসের সঙ্গে কোন দিন কোন দেশ আপোস করে না। আমরাও করব না। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ জনগণ মানছেন না। সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে। শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্নার মূল চরিত্র উন্মেচন হয়েছে। তার নাম আমি মুখে আনতে বিব্রতবোধ করছি। তারপরও তাঁর নাম নিতে হচ্ছে। কারণ মাহমুদুর রহমান মান্না খালেদা জিয়ার রাজনীতি পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ভাল দেখলে গর্বে মন ভরে ওঠে। খারাপ দেখলে দুঃখে ভারাক্রান্ত হই। অনেকে ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগের ক্ষতি করছে। আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব এটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আনিসুর রহমান, উত্তরের সভাপতি রবিউল ইসলাম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক রানা প্রমুখ। টুকরা আন্দোলন দিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয় না- ওবায়দুল কাদের ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কেউ যদি মনে করে ক্ষমতা দখল করে একজন অন্যজনকে ক্ষমতায় বসাবে তাহলে সেটা দিবাস্বপ্নের মতো। ক্ষমতা যারা দখল করে তারা নিজেদের জন্যই করে, অন্যদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে চলচ্চিত্রকার আলমগীর কুমকুমের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতা অর্জন করা হয় নির্বাচন ও গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে। টুকরা টুকরা আন্দোলন দিয়ে গণঅভ্যুত্থান গড়ে ওঠে না। বিএনপি-জামায়াত জোটের মিছিলে এখন কোথাও ১-২শ’ লোকের বেশি দেখা যায় না। এটার নাম দেশ বাঁচাও আন্দোলন হতে পারে না। তিনি বলেন, পৃথিবীতে কোন গণআন্দোলন ছাড়া সরকারের পতন হয়েছে এমন আমার জানা নেই। এখন আন্দোলনের ধরন বদলেছে। কোথাও সংবাদ সম্মেলন করা হয় না, অন্ধকারে থেকে হঠাৎ ডাক আসে অবরোধ চলবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি যে ঐতিহাসিক ভুল করেছে তার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে। তারা শিশু-নারী-বাসের ড্রাইভার পুড়িয়ে মারছে। এটাকে কি দেশপ্রেম বলা যায়? এখন বোমা হামলা সীমিত হয়ে এলেও শুরু হয়েছে ভূমি অফিসে হামলা। গরিব জনগণের জমিজমার রেকর্ড যেখানে আছে সেখানেই তারা আগুন দিচ্ছে। চিত্রনায়ক ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ চিত্রনায়িকা দিলারা, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন মিয়া প্রমুখ। মান্না সাহেবরা ধরা খাচ্ছেন- খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ॥ খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যারা করছেন, তাঁদের সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেব। কারণ ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। মান্না সাহেব স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু ধরা খেয়ে গেছেন। মান্না সাহেবের চেহারা উন্মোচিত হয়ে গেছে। এরকম আরও যারা মান্না সাহেবের মতো কথোপকথন করেছেন, তাঁদের চেহারাও উন্মোচিত হবে। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশালায় এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চলচ্চিত্রকার আলমগীর কুমকুমের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয় নিয়ে খালেদা জিয়ার উচ্চ আদালতে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সেখানেই আত্মসমর্পণ করে তাঁকে জামিন চাইতে হবে। তাই আমরা বিশ্বাস করি, আদালতের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হবে। আদালতে উপস্থিত হয়ে তিনি মামলা লড়বেন। আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. ইনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মনোরঞ্জন ঘোষাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।
×