ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতে হবে

ষড়যন্ত্র চলছে। গভীর ষড়যন্ত্র। নাগরিক সমাজের কর্তা, ছোট্ট খোকার সঙ্গে মিলে অন্ধকার পথে ঘুরে ফিরছে। ক্ষুধায় কাতর, রাতজাগা পাগল, দেখতে ভদ্র, কালো গোঁফ চকচকে চুল, মিচকি হাসি যেন ভেতরে শয়তানি দেশ বিক্রি করার ষড়যন্ত্রে অগ্রসর মান্নাগং হোতাদের এখনও বাঘের খাঁচায় বন্দী করা হচ্ছে না কেন সেটি অজানা রহস্য। মাহমুদুর রহমান মান্না স্বাঘোষিত জ্ঞানভা-ারে ভরপুর আর এক মাহমুদুর রহমানের শিষ্য যিনি ক্ষমতার পাগল। মান্না- বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়ে নিজে একটি ভাল মন্ত্রণালয়ে বসবেন এটাই কাম্য। গণতন্ত্র হবে রাজতন্ত্র, হোক তাতে আপত্তি কার? স্বাধীনতা বিক্রি হবে এবং ক্রেতা কথিত পাকিস্তান। তাই হবে, কেন বাঁধা? জাতির পিতার নাম পৃথক হবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দেবে ঘাতক বিএনপি, নাগরিক ঐক্যের মান্না এবং জামায়াতে ইসলাম। গণতন্ত্রের বিলুপ্তি, রাজতন্ত্রের আগমন ঘটাতে সংলাপ? বাহ্! কি মজা হবে মান্না, খালেদা, বি চৌধুরী গংদের। যারা গণতন্ত্র পরিবর্তনে সংলাপ চায় তাদের সঙ্গে কি সংলাপ হতে পারে? যারা আগুন বোমা মেরে শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করছে তাদের সঙ্গে কি বিষয়ে সংলাপ হবে? যারা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে শহীদ মিনারে যেতে আপত্তি, তাদের সঙ্গে কিসের সংলাপ? এম আলী শ্রীনগর। টেলিফোন বার্তা ও ... মাহমুদুর রহমান মান্না নামটি উচ্চারিত হলেই অতীতের একজন প্রগতিশীল পরিচ্ছন্ন ছাত্র নেতার অবয়ব মানুষের সামনে ফুটে ওঠতো। বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পর্যায়ে একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। পরে আওয়ামী রাজনীতির একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হয়ে উঠেছিলেন সাংগঠনিক দক্ষতায়। ওয়ান-ইলেভেনের পর এই নেতার সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয় আওয়ামী লীগের। টেলিভিশন মিডিয়ার সুবাদে টকশো করে নিজস্ব একটা নতুন ইমেজ তৈরি করেছিলেন। নাগরিক সমাজের হয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। এতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু তিনি হঠাৎ করেই টেলিফোনে ষড়যন্ত্রের টকশোতে অংশ নিলেন। যাতে তাঁর ইমেজ শুধু নষ্টই হয়নি, অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে আসলে মান্না সাহেব কী চেয়েছেন? ধরেই যদি নেয়া যায় তিনি আওয়ামী লীগ করে বঞ্চিত হয়েছেন, তাকে একঘরে করে দিয়েছে, তাই বলে তিনি দেশের বিরুদ্ধে যাবেন? জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দেবেন? তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলে তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার পরিকল্পনা করবেন। এটা কি মাহমুদুর রহমান সাহেবের রাজনীতি। আমাদের এই ধরনের হীন রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে যেয়ে কোন লাভ নেই। এখন সবার উচিত হীনস্বার্থে নয়, দেশের জন্য রাজনীতি করা। মানুষ হত্যা বা অর্থনীতিকে ধ্বংস করার হীনস্বার্থ থেকে বেরিয়ে এসে সবার উচিত দেশের জন্য কিছু করা। সুফিয়ান কবির মোহাম্মদপুর, ঢাকা। মিথ্যাচারের বিপরীতে দেশজুড়ে একতরফা সহিংসতা, নাশকতা, পৈশাচিকতা, নির্মমতা, নৃশংসতা প্রায় দু‘মাস ধরে চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন বিরোধী (৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও নৃশংস তা-ব চালনাকারী) বিএনপি-জামায়াত জোট। গুলশানের ‘অফিস কাম রেসিডেন্টে’ বসে বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া লন্ডন হতে পাঠানো দুর্নীতির কারনে পলাতক পুত্রের নির্দেশে দেশজুড়ে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীপনা চালিয়ে সাধারণ নিরীহ মানুষ হত্যা করেই চলছে। ঘোষণা দিয়ে অবরোধ-হরতাল ডেকে তা জাহির করার জন্য রাজপথে নামে না কেউ। রোর্ড মার্চ বা গণঅনশন কর্মসূচীও নয়। কর্মসূচী একটাই জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংস কর। দেশ যখন ক্রমেই অর্থনৈতিক ও শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সে সময় মানুষের মৌলিক অধিকার জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে আকস্মিক যুদ্ধংদেহী রণরঙ্গিনী মূর্তি নিয়ে বেগম জিয়া আবির্ভূত হলেন। যাকে দলের নেতা গয়েশ্বর রায় অবহিত করেছেন, সেই তিনি রিমোট কন্ট্রোলের নির্দেশ দেন। আর তারাই বাসে পেট্রোলবোমা মেরে বাস পুড়ছে এবং মানুষ মারছে। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আদালতপাড়াÑ সর্বত্র বোমাবাজদের চোরাগোপ্তা তৎপরতা রয়েছে। কোথাও তারা ধরা পড়ছে, গণধোলাইয়ের শিকার হচ্ছে। অথচ বেগম জিয়া বলছেন, তিনি এসব করছেন না। সরকারই করাচ্ছে। যদি সরকারই করে থাকে, তবে তিনি কেন বার্ন ইউনিটে হতাহতদের দেখতে যান না। কেন তাঁর দলের নেতাকর্মীরা সেখানে যায় না। গণরোষের ভয়ে নয়। নিজেদের সৃষ্ট নৃশংস অপরাধের সামনে দাঁড়াতে না পারার ভয়ে-আতঙ্কে। প্রায় শ’ খানেক মানুষের মৃত্যুও তাকে আলোড়িত করে না। তার এই মিথ্যাচারে জনগণ বিভ্রান্ত হয়। সরকার এসব মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে না। সরকারী প্রচার মাধ্যমগুলো দুর্বল, অদক্ষ, তাঁবেদারদের পরিচালনায় থাকার কারণে এসব মিথ্যাচারের বিভ্রান্তি থেকে জনগণকে সচেতন করতে পারছে না। সবুর সওদাগর চান্দনাইশ, চট্টগ্রাম। অভিজিতের অপরাধ কী আবার রক্তাক্ত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণ। ঠিক ১১ বছর আগে এখানেই প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর নগ্ন হামলা হয়। সেই হামলার ধরন আর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের ওপর হামলার সাদৃশ্য রয়েছে। হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একজন শিক্ষক, সার্থক লেখক ও প্রগতিশীল মানুষ। মৌলবাদীরা তাঁকে বাঁচতে দেয়নি। অভিজিৎ ছিলেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষক, পেশায় ছিলেন প্রকৌশলী। তিনি ছিলেন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর স্ত্রী বন্যা একজন চিকিৎসক ও লেখক। বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই দম্পতি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন। একজন প্রকৌশলী, একজন লেখক হতে গেলে কত সাধনা, কত অধ্যবসায় করতে হয়ে অভিজিতের হত্যাকারীরা কি তা জানে। মতের বাইরে গেলে কাউকে হত্যা করতে হবেÑ সেটা কি কোন মানুষের জীবনব্যবস্থা বা ধর্মীয় বিষয়ে উল্লেখ আছে? অবশ্যই নাই। তার পরেও একজন মানুষ ধর্মীয় অনুভূতির বিরূপ ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা করছে, তা কখনও কাম্য হতে পারে না। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একটি কথা সব সময় বলা হয়Ñ যদি কেউ মৃত্যুপথযাত্রী কোন ব্যক্তিকে রক্ষা করে তাহলে সে একটি জাতিকে রক্ষার মতো আদর্শগত কাজ করবে। আবার এও বলা হয়েছেÑ কেউ যদি কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে তাহলে সে একটি জাতিকে হত্যা করার সমান অপরাধ করেছে বলে ধরে নেয়া হবে। ধর্মীয় এই আদর্শগত দিকগুলোকে কিছু স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি এমনভাবে ব্যবহার করছে ফলে মানুষ সাম্প্রদায়িক হয়ে পড়ে। মতের বিরোধী হলেই তাকে হত্যা করতে হবেÑ এটা কখনও কাম্য হতে পারে না। তাহলে এই হত্যাকা- কেন। অভিজিৎ একজন প্রকৌশলী, একজন লেখক। প্রগতির কথা বলতে গিয়ে কাউকে যদি হত্যা করা হয়, তাহলে আমরা অন্ধকারের দিকেই পথ হারাব। গহীন অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের আলোর পথ দেখাবে কে? নাজনীন বেগম আসাদ এভিনিউ, ঢাকা। পতাকায় বিশ্বকাপ চলছে বিশ্ব ক্রিকেটের মহাউৎসব ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৫। ফুটবল না হোক বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে পঞ্চমবারের মতো খেলছে বাংলাদেশ। অথচ ফুটবল বিশ্বকাপের মতো দেশের পাড়া-মহল্লা, বাজার-বন্দর, অলি-গলিতে তেমনভাবে উড়তে দেখা যাচ্ছে না লাল সবুজের পতাকা। কেন এই কৃপণতা? বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে প্রেরণা যোগাতে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী আমাদের জাতীয় পতাকা উঠানো ও নামানো হবে, হবে পতাকা উৎসব। এমনটিই প্রত্যাশা। বাংলাদেশ দলের জন্য অফুরন্ত শুভ কামনা। গোলাম রাব্বানী কাপাসিয়া, গাজীপুর। খুলে গেল বন্ধ দুয়ার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির সুযোগ সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছিল। এর একটি বড় কারণ ওই অঞ্চলের দেশগুলোর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্ষমতার পট পরিবর্তন। এসব দেশের মধ্যে লিবিয়া ও বাহরাইন ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। বিশেষত লিবিয়ার পরিস্থিতির প্রভাব ভালই পড়েছিল আমাদের দেশের শ্রমবাজারে। এছাড়া সৌদি আরবের পর মধ্যপাচ্যে বাংলাদেশের আরও একটি অন্যতম শ্রমবাজার হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দিলে মারাত্মক প্রভাব পড়ে এদেশের শ্রমবাজারে। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের শ্রমবাজার আবার উন্মুক্ত হওয়া বাংলাদেশীদের জন্য অতিব জরুরী হয়ে পড়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর দেশটির শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। তবে যেসব কারণে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার হুমকির সম্মুখীন সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইবার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সৌদি আরবের সরকারের চুক্তি হওয়ার কারণে শ্রমিকদের প্রতাড়িত হওয়ার কোন সুযোগ থাকবে বলে মনে হয় না। নজরুল ইসলাম লিখন ষরশযড়হধষরভব@মসধরষ.পড়স ফেনীÑচাঁদপুর মহাসড়ক চালু হোক বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত অতি সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা চৌরাস্তা ঘুরে সড়কপথে চাঁদপুরের দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটার; বাসে যেতে সময় ব্যয় হয় ৭-৮ ঘণ্টা। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা চাঁদপুর থেকে দুপুর ১টার পূর্বের নিয়মিত লঞ্চগুলো ধরতে পারে না। অপরাহ্নে ছোট নৌযানে প্রশস্ত, গভীর ও উত্তাল মেঘনা পার হতে গিয়ে অনেক যাত্রী নৌ-দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, সোনাইমুড়ি, রামগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ হয়ে চাঁদপুরের দূরত্ব মাত্র ১৮০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম থেকে আগত চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের সরাসরি যাত্রীরা এ পথে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টায় চাঁদপুর যেতে পারবে এবং পরবর্তীতে চাঁদপুর থেকে লঞ্চে মেঘনা পার হয়ে সড়কপথে স্বল্পসময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। এ রুট চালু করতে হলে ফেনীÑসোনাইমুড়িÑরামগঞ্জ-ফরিদগঞ্জÑচাঁদপুর সড়কটি জরুরী ভিত্তিতে ৪ লেনে উন্নীত করতে হবে। এ সড়কপথে চট্টগ্রামÑচাঁদপুর সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হলে ২৩ জেলার যাত্রীরা এর সুফল পাবে এবং চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা কুমিল্লা চৌরাস্তা ঘুরে দীর্ঘপথ পরিক্রমণের দুঃসহ ও অমানবিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। এমএ শাহেনশাহ সহযোগী অধ্যাপক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। মানুষের কান্না থামান! বিরোধীপক্ষের লাগাতার অবরোধ-হরতালের নামে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। পেট্রোলবোমা ছুড়ে মানুষ মারছে। সন্ত্রাসীদের পেট্রোলবোমায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে যাঁরা বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের আর্তনাদ প্রধানমন্ত্রী শুনেছেন। আমরা প্রতিদিন টিভিতে, পত্রিকায় তাঁদের আহাজারির খবর দেখছি ও পড়ছি। আমাদের যেসব সাংবাদিক ভাইয়েরা বার্ন ইউনিটে গিয়ে খবর সংগ্রহ করছেন, ছবি তুলছেন, তাঁদের মুখে শুনেছি কী ভয়ঙ্কর, কী বেদনাদায়ক সেই দৃশ্য। যাঁরা কোনদিন রাজনীতি করেননি, যাঁরা সরকারী বা বিরোধী দল বুঝে না, কেবল জীবন ও জীবিকার তাগিদে পথে নেমে পেট্রোলবোমাধারীদের শিকার হয়েছেন। কারও শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে, কারও শরীরের ৫০ শতাংশ। কী দুঃসহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাঁদের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে! আমরা কী সান্ত¡না দেব এই দগ্ধ-পোড়া মানুষগুলোকে, তাঁদের স্বজনদের। আমরা কী করে ভুলে যাব সেই নারীর কথা, যিনি কক্সবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্বামী ও মেয়েকে হারিয়েছেন। আমরা কী করে ভুলে যাব কুড়িগ্রামের সেই ছোট্ট শিশুটির কথা, যে মাকে বলেছিল, ‘ওরা আমার গায়ে কেন বোমা মারল?’ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বাইরেও অনেক সন্তানহারা মায়ের, স্বামীহারা স্ত্রীর, বাবাহারা সন্তানের কান্না শুনছি। এদের স্বজনদের হাসপাতালেও ঠাঁই হয়নি। ঠাঁই হয়েছে মর্গে। আমরা নীরব কান্না শুনছি ১৫ লাখ এসএসসি পরীক্ষার্থীর। দফায় দফায় যাদের পরীক্ষা পিছিয়ে এখন কবে শেষ হবে, কেউ বলতে পারে না। আমরা নীরব কান্না শুনছি লাখ লাখ দিনমজুরের, যাঁদের রুটিরুজি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা কান্না শুনছি লাখ লাখ পরিবহন শ্রমিকের, যাঁরা বোমার ভয়ে রাস্তায় বের হতে পারছে না, না খেয়ে মরছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের নীরব কান্নাও শুনছেন। অনুভব করছেন তাঁদের দুঃখ, বেদনা ও দীর্ঘশ্বাস। দয়াকরে সাধারণ মানুষের কান্না থামান! অমিত বণিক কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ। সন্ত্রাস দমন হোক দেশে দুইটি শক্তি বিদ্যমান। একটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি অপরটি বিপক্ষের শক্তি নাশকতা, অশান্তি সৃষ্টি করে সরকারকে ব্যর্থ করে আবার ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে। সরকারের উচিত এগুলো কঠোর হস্তে দমন করা। কারণ জনগণের যান-মালের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের কর্তব্য। আমার বক্তব্য হলো প্রতিটি ওয়ার্ডে সন্ত্রাস নির্মূল কমিটি গঠন করতে হবে। সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে আইনে সোপর্দ করতে হবে। তা হলে অল্পসময়েই দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরবে, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। আশা করি সরকার এ বিষয় আশু দৃষ্টি দেবেন। আব্দুল জলিল মোড়ল কেশবপুর, যশোর। নাশকতা বনাম সংলাপ গত পাঁচ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ ও হরতালের কর্মসূচীর মাধ্যমে দেশে যে নাশকতা ও সন্ত্রাস চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ পুড়িয়ে খুন করা হচ্ছেÑ সেটা নাইজেরিয়ার বোকোহারাম কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের আইএস-এর নৃশংসতার চাইতে কোন অংশে কম নয়। কিন্তু তরপরও এত মানুষ হত্যা, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি, এমনকি স্কুল কলেজের পরীক্ষা হতে না দেয়া, এসব কি রাজনৈতিক নীতিনৈতিকতা ও আদর্শের আওতাভুক্ত কোন কর্মসূচী। বলা হচ্ছে, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এখনই নির্বাচন করতে হবে, সেজন্যই এই অবরোধ হরতাল এবং সরকারকে আলোচনা কিংবা সংলাপে বসে এই দাবি মেনে নিতে। কিন্তু যারা স্বইচ্ছায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, তারাই আবার অ-সময়ে নির্বাচনের দাবি ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে নিষ্ঠুরভাবে সন্ত্রাসী কর্মকা- আরম্ভ করে দিয়েছে। পেট্রোলবোমা আর ককটেল মেরে নিরীহ মানুষ খুন করে সরকারকে আলোচনায় বসার জন্য ব্ল্যাকমেইল করতে থাকলে যে কোন সরকারের পক্ষে পদত্যাগ করা এবং সন্ত্রাসী কর্মকা-কারীদের সঙ্গে আলোচনা কিংবা সংলাপে বসা কি উচিত? এর ভবিষ্যত ফলাফল কি ভাল হবে? বিভিন্ন পক্ষ থেকে সরকারকে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু অবরোধ হরতালকারীরা যেহেতু আইনি দৃষ্টিতে সন্ত্রাস নাশকতার জন্য দায়বদ্ধ, সেক্ষেত্রে তাদেরই প্রথমে হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার ও নাশকতা বন্ধের জন্য বলা উচিত। তার পর স্বাভাবিক রাজনৈতিক পন্থায় সমাধান খুঁজে বের করা যেতে পারে। হাবিবুল ইসলাম আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। জেলা শহরে শিল্পায়ন জরুরী রাজধানী ঢাকা শহর হয়েছে সবকিছুর প্রাণকেন্দ্র। নানা রকম কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত হতে বা প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ প্রতিনিয়ত রাজধানীমুখী হচ্ছে। ঢাকা শহরে বর্তমানে ৫ লাখ নির্মাণ শ্রমিক ১৮ লাখ পোশাক শ্রমিক এবং প্রায় ৭ লাখ রিকশা শ্রমিকের জীবনের স্থান করে দিয়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে সারাদেশে ৮৫টি সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যার মধ্যে ৬০টির অবস্থান এই রাজধানী ঢাকা শহরে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছেÑ প্রতিদিন রাজধানীতে জনসংখ্যা বাড়ছে ১৪২০ জন করে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আবাসন সমস্যা। মানুষের ঢাকার প্রবেশের এই প্রবণতাকে বন্ধ করতে হলেÑ প্রতিটি জেলা শহরে শিল্পায়ন করতে হবে। প্রতিটি জেলা উপজেলায় শিল্পায়ন করলে, মানুষ চাকরি এবং কাজের সন্ধানে আর ঢাকামুখী হতে চাইবে না। জেলা শহরে শিল্পায়ন হলে মানুষ কাজ পাবে, চাকরি পাবে, রুটি-রুজির ব্যবস্থা হবে। আর রাজধানীমুখী চাপ কমতে শুরু হবে। জেলা শহরে কাজ পেলে জেলা কিংবা উপজেলা শহরে অবস্থান নেবে, কর্মসংস্থান হবে। স্বল্প আয় করেও মানুষ ভালভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। জেলা শহরগুলোতে আবাসন সমস্যাও তেমন প্রকট নয়। তাই জেলা শহরগুলোতে শিল্পায়ন করতে পারলে, রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তোলা যাবে এবং স্বল্পআয়ের মানুষের জেলা শহর এ অবস্থান নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। রণজিত মজুমদার সোনাগাজী, ফেনী।
×