অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বড় ধরনের পতনের পরদিনই সূচকের উর্ধগতির মধ্য দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন কিছুটা কম হলেও বেশিরভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। তবে দিনটিতে লেনদেনের খুব বেশি পতন ঘটেনি। সেখানে প্রায় তিনশ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর দর বাড়ার দিনে ওষুধ এবং রসায়ন খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল। একইভাবে অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় বুধবারে সূচকের বড় ধরনের পতনের পর বৃহস্পতিবারে সকালে সূচকের উর্ধগতি দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। সকালে লেনদেনের গতি কিছুটা ভাল থাকলেও দিনশেষে লেনদেনে কিছুটা ভাটা পড়ে। এভাবেই দিনশেষে বৃহস্পতিবার ডিএসইর সার্বিক সূচকটি ২০.৯৯ বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৬৩ পয়েন্টে। সেখানে লেনদেন হয়েছে ২৯৬ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। দিনটিতে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৭টি, কমেছে ১০৯টি আর অপরিবর্তিত ৪৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুমেও বিনিয়োগকারীরা রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছে। যার কারণে বাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় সবকটি সরকারী কোম্পানির চাহিদা ছিল চোখে পড়ার মতো। অচিরেই সরকারী কোম্পানিগুলোর আরও শেয়ার বাজারে ছাড়া হবে এমন আশঙ্কাতেই কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিকভাবে দর কমেছিল। অধিক মুনাফার আশায় বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে ওই সব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন। একইভাবে মৌলভিত্তি সম্পন্ন বহুজাতিক কোম্পানিরও চাহিদা বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ারের। দিনভর এ কোম্পানির ৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৩টি শেয়ার ১৩ কোটি ৯ লাখ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া আইডিএলসির ১১ কোটি ৩৬ লাখ, ইউসিবিএলের ৯ কোটি ৫৬ লাখ, এসিআই-এর ৯ কোটি ৪০ লাখ, লাফার্জ সুরমার ৯ কোটি ৪ লাখ, এমজেএলবিডির ৮ কোটি ৯৪ লাখ, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্টে ৮ কোটি ৮৪ লাখ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের ৮ কোটি ২৪ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৭ কোটি ৭৩ লাখ ও বঙ্গজের ৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইর দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ন্যাশনাল টিউবস, সোনালি আঁশ, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইবনে সিনা, জিকিউ বলপেন, ন্যাশনাল পলিমার, রংপুর ফাউন্ড্রি, জেমিনী সী ফুড, বিডি ল্যাম্পস ও উসমানিয়া গ্লাস।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : দুলা মিয়া কটন, প্রাইম ফাইন্যাান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ্যান্ড ফাইন্যান্স, ৭ম আইসিবি, আইসিবি ১ম এনআরবি, পপুলার ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইমাম বাটন, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, জিল বাংলা ও মেঘনা কনডেন্স মিল্ক।
অপর পুঁজিবাজারে ঢাকার মতো সব ধরনের সূচক বেড়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দিনশেষে সাধারণ মূল্য সূচক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৮৫৯। লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ দিন লেনদেন হওয়া ২৩২টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৯টি, কমেছে ৮১টি এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : শাহজিবাজার পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো, মবিল যমুনা বিডি, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সামিট পোর্ট এ্যালায়েন্স, সিঙ্গার বিডি, আমরা টেক, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং ও সালভো কেমিক্যাল।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: